দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩নভেম্বর: চলতি মাসেই জেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালগুলোতে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) ও হৃদরোগীদের জন্য বিশেষ পরিচর্যা কেন্দ্র (সিসিইউ) এর কার্যক্রম শুরু হচ্ছে৷ রোববার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম৷আগামী ২৯ নভেম্বর বরিশালসহ ছয়টি জেলায় আইসিইউ, সিসিইউ স্থাপনের মাধ্যমে এই কাজ শুরু হচ্ছে বলে জানান তিনি৷
সারাদেশে মোট ১৮ হাজার ৮৬৮টি সরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক থেকে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে সংসদে জানান তিনি৷এর মধ্যে রয়েছে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, উপজেলা হাসপাতাল, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও অন্যান্য ছোট-বড় সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান এবং উন্নয়নখাতভুক্ত কমিউনিটি ক্লিনিক৷বেসরকারিভাবে ৩ হাজার ৯৯০টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক এবং ৮ হাজার ৪৫৯টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে জনগণকে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷
গর্ভবতী মায়েদের বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সেবা দেওয়া এবং অ্যাম্বুলেন্সের ব্যয়ভার বহনের সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে বলে জানান তিনি৷নাসিম জানান, জরায়ু মুখ ক্যান্সারে ২০১৩ সালে ৬ হাজার ৫৮২ জন এবং স্তন ক্যান্সারে ৭ হাজার ১৪২ জন মারা গেছে৷জরায়ু মুখ ক্যান্সারে ২০১৩ সালে ১১ হাজার ৯৫৬ জন আক্রান্ত বলে চিহ্নিত করা হয়, যে সংখ্যাটি ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীদের ১৯ দশমিক ৩০ ভাগ৷ একই বছর স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ১৪ হাজার ৮৩৬ জন সনাক্ত হয়, যা ২৩ দশমিক ৩০ ভাগ৷বাংলাদেশে এখনও ইবোলা আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷
বাজারে ভেজাল ওষুধ থাকার কথা স্বীকার করে নাসিম বলেন, বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের ওষুধের অবিকল মোড়কে কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠান নকল ওষুধ বাজারে বিক্রি করছে৷ কোনো কোনো ক্ষেত্রে আটা ও ময়দা ইত্যাদি দিয়ে ভেজাল ওষুধ বাজারজাত করা হচ্ছে৷ ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধে সরকারি পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন তিনি৷
মন্ত্রী সংসদে জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতে চলতি বছর ৪৬৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা এবং ৩৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে৷ নকল ও ভেজাল ওষুধ উত্পাদন/বিক্রয়কারী ৩৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওষুধ আদালতে নিয়মিত মামলা হয়েছে৷ তিনি সংসদে সরকারি দলের সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষের এক প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, চলতি বছরের ১০ আগস্ট থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যনত্ম ইবোলা আক্রান্ত দেশ থেকে ২১৬ জন যাত্রীকে এ সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সনাক্ত করা হয়েছে৷ এদের মধ্যে ১৮২ জন যাত্রীর ২১ দিন পর্যন্ত বিশেষ পর্যবেক্ষণ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে৷
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ইবোলা ভাইরাস প্রতিরোধকল্পে দেশের প্রত্যেক আনত্মর্জাতিক প্রবেশ বন্দরে (৩টি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, ২টি নৌ বন্দর ও ২২টি স্থল বন্দর) মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে৷ পিপিইসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ব্যবস’া করে পশ্চিম আফ্রিকার আক্রানত্ম দেশগুলো থেকে আগত যাত্রীদের স্ক্রিনিং কার্যক্রম চালু করা হয়েছে এবং সুস্থ যাত্রীদের ২১ দিন পর্যনত্ম বিশেষ পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে৷মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ইবোলা রোগ প্রতিরোধকল্পে ইতোমধ্যেই ৭টি থার্মাল স্ক্যানার ক্রয় করা হয়েছে৷ এরমধ্যে হযরত শাহজালাল আনত্মর্জাতিক বিমান বন্দরে ৩টি, হযরত শাহ আমানত বিমান বন্দরে ১টি, এম এ জি ওসমানী বিমান বন্দরে ১টি এবং বেনাপোল স’ল বন্দরে ১টি থার্মাল স্ক্যানার স’াপনের ব্যবস’া গ্রহণ করা হয়েছে৷ এ ছাড়া জরম্নরি অবস’া মোকাবেলার জন্য একটি থার্মাল স্ক্যানার মজুদ রাখা হয়েছে৷
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রাজধানীসহ দেশে আন্তর্জাতিক প্রবেশ বন্দরের সংশ্লিষ্ট জেলায় মোট ১৯টি ‘ইবোলা আইসোলেশন ওয়ার্ড’ চালু করা হয়েছে৷