mojena

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩নভেম্বর: বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডবিালউ মোজিনা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অংশীদার৷ রাজধানী ঢাকা সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে৷ তাই জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি ঢাকার ঝুঁকি নিরসনের দিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে৷

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে কমব্যাট ক্লাইমেট চেঞ্জ, কনসার্ভ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড অ্যাচিভ সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা একথা বলেন৷তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের অংশীদারিত্বে প্রতিবছর ব্যয়িত অর্থের পরিমাণ প্রায় ১ কোটি থেকে দেড় কোটি মার্কিন ডলার৷

ড্যান মজিনা বলেন, বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশ৷ এ দেশের বহু এলাকা সমুদ্র সীমার সামান্য উপরে৷ সমুদ্রের পানি অল্প বাড়লেই বহু লোকের জীবন বিপন্ন হবে৷ তিনি বলেন, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলাকে আমেরিকা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়৷মজিনা বলেন, জনগণকে জলবায়ু বান্ধব পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর অভ্যাস তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে৷ এছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে দেশের বনাঞ্চল বৃদ্ধির লৰ্যে বৃৰরোপণ৷ বনের ওপর চাপ হ্রাস এবং বায়ু দূষণ রোধে জ্বালানি সাশ্রয়ী চুলা প্রবর্তন, লবণ সহিষ্ণু, খরা-সহিষ্ণু ও বন্যা সহিষ্ণু বীজ উত্‍পাদন৷

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল কর্মসূচিগুলোর একটি হলো পলস্নীর যেসব গ্রীডযুক্ত নয় সেসব এলাকায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির সূত্রের মাধ্যমে সব বাংলাদেশীকে বিদু্যত্‍ সুবিধা প্রদান৷তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের সঙ্গে এ দেশের জনগণকে খাপ খাওয়ানোর প্রস্তুতিতে সহায়তার লক্ষ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারিত্বের জন্য আমি গর্বিত৷

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশকে প্রতিবছর ১০ থেকে ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দেয়া হচ্ছে যা ব্যবহারে সমুদ্র উপকূলবর্তী জনসাধারণের সচেতন করে তোলার প্রতি গুরুত্ব দেয়া উচিত্‍ বলে জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা৷মজিনা বলেন, জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে৷ এ ক্ষেত্রে সমুদ্র উপকূলবর্তী স্থানীয় জনসাধারণকে সচেতন করে তুলতে গুরুত্ব দেয়া জরুরি৷ যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া অনুদান সমুদ্র উপকূলবর্তী এবং গ্রাম্য জনগণের সচেতনতার পেছনে ব্যায় করলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে৷

রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, শুধু জলবায়ু পরিবর্তন নয়, রাজধানী ঢাকা সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্প ঝুঁকিতেও রয়েছে৷ তাই জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি ঢাকার ঝুঁকি নিরসনের দিকে নজর দিতে হবে৷ সেজন্য বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ করতে হবে যাতে ভূমিকম্পের ভয় থেকে মুক্ত থাকা যায়৷ এসময় মজীনা বলেন, পৃথিবীর সবচে উঁচু দালানের শহরগুলোর মধ্যে চিলির সান্তিয়াগো অন্যতম৷ গত বছর সেখানে বড় মাত্রায় ভূমিকম্প হয়৷ তবে বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ করায় তাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতিই হয়নি৷ সৌরশক্তির মাধ্যমে নবায়নযোগ্য বিদ্যুত্‍ উত্‍পাদন এবং পপ্রত্যকের ঘরে তা পৌঁছে দিতে যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করছে বলে জানান তিনি৷পাশাপাশি সাভারে ট্যানারি শিল্প স্থানান্তরের পর সেখানে তৈরি চামড়ার সামগ্রী বিদেশে রফতানির পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের এই রাষ্ট্রদূত৷

বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের ৩২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম চৌধুরী, সহ সভাপতি বদিউল আলম, সাধারণ সম্পাদক হাসান হাফিজ প্রমুখ৷