Mirja Abbas

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৯নভেম্বর: খালেদা জিয়ার হুঙ্কারে শেখ হাসিনার তখত নড়বড়ে হয়ে যাবে টিকে থাকতে পারবেন না এ কথা উল্লেখ করে ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, শিগগিরি জোরালো আন্দোলন আসছে এবং সরকার অস্ত্র দিয়েও তা দমাতে পারবে না৷ তিনি বলেন,সামনে আন্দোলন আসছে৷ আমাদের নেতা-কর্মীরা এবার গুলি বুকে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে৷ কত গুলি সরকারের আছে- এবার আমরা দেখব৷ গুলি শেষ হয়ে গেলে সরকার কী করবে? দেশের মানুষ আপনাদের ছাড়বে না

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ভাসানী স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে মওলানা ভাসানীর ৩৮তম মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন৷বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে অভিযোগ করে তা থেকে বিরত থাকতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস৷ রাষ্ট্রীয়ভাবে মওলানা ভাসানীর মৃতু্যবার্ষিকী পালিত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ গঠনের পেছনে ভাসানীর অবদান থাকলেও দলটি এখন তাকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করে না৷সরকার ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে চায় এ অভিযোগ করে তিনি বলেন, স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে কখনোই ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না৷

এ সময় সরকারের কাছে কত গুলি আছে আমরা তা দেখতে চাই, গুলি বুকে নেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি্তসরকারের উদ্দেশ্যে মির্জা আব্বাস বলেন, গুলি শেষ হয়ে গেলে আপনারা কী করবেন? তখন হয়তো বিএনপির নেতাকর্মীও শেষ হয়ে যাবে৷ কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের ছেড়ে দেবে না৷ তাই সময় থাকতে স্বৈরাচারের পথ থেকে সরে আসুন৷ শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্যে করে বিএনপির এ নেতা বলেন, আগে যা করেছেন, দেশের মানুষ অনেক দয়ালু সব মাফ করে দেবে৷ দয়া করে আর হিটলারের পাশে নিজের নাম লেখাবেন না৷ কিভাবে স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে হয় এদেশের মানুষ জানে, আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, এভাবে গুলিবর্ষণ করে আন্দোলন দমানো যাবে না৷

সরকারের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, যা করেছেন, করেছেন৷ এবার দমন-নির্যাতন বন্ধ করুন৷ দেশের মানুষ দয়ালু৷ সব মাফ করে দেবে৷ দয়া করে স্বৈরাচারের খাতায় নিজেদের নাম লিখাবেন না৷বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হুঙ্কার দিলে সরকার পতন হবে মন্তব্য করে দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এক হুঙ্কারে সরকারের তখতে তাউস নড়বড়ে হয়ে যাবে৷ আপনারা টিকে থাকতে পারবেন না৷

মাওলানা ভাসানীকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ একটি অকৃতজ্ঞ দল৷ ভাসানীর জন্ম না হলে অনেক নেতার জন্ম হত না৷ আজ ভাসানীর নাম পাঠ্যপুস্তক থেকে তুলে দেয়া হয়েছে, একইভাবে জিয়াউর রহমানের নামও নেই৷পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কারাগারে বন্দী হলে মাওলানা ভাসানীই জনগণকে মাঠে নামিয়েছেন৷

কোনো ইসু্যতে বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে নামলেই সরকারের পুলিশ বাহিনী বন্দুক উঁচিয়ে গুলি করছে- এমন অভিযোগ তুলে ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস বলেন, সামনে আন্দোলন আসছে৷ আমরাও দেখবো সরকারের হাতে কত গুলি আছে৷মির্জা আব্বাস বলেন, আজও (বুধবার) একটি সংবাদপত্রে দেখলাম আন্দোলনরত মানুষের ওপর পুলিশ বন্দুক উঁচিয়ে গুলি করছে৷ কয়েক দিন আগে যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের মুক্তির দাবিতে যুবদলের নেতাকর্মীরা মিছিল করতে গেলে সেখানেও গুলি চালায় পুলিশ৷

সরকারের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, স্বৈরাচারিতা যা করেছেন, করেছেন৷ আর করবেন না৷ বাংলাদেশের মানুষ ক্ষমাশীল, হয়তো আপনাদের ক্ষমা করে দেবে৷ কিন্তু এরপরও যদি স্বৈরাচারিতা করেন, বাংলাদেশের মানুষ জানে কীভাবে স্বৈরাচার উত্‍খাত করতে হয়৷বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে জিয়াউর রহমানের অনুসারীদের উত্‍খাতের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য৷

তিনি বলেন, মওলানা ভাসানীকে বাদ দিয়ে যেমন বৃটিশ ভারতের ইতিহাস লেখা যায় না, ঠিক তেমনি জিয়াউর রহমানকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস লেখা সম্ভব নয়৷ তাই যতভাবেই চেষ্টা করেন না কেন, বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে জিয়াউর রহমানের অনুসারীদের নাম মুছে ফেলা যাবে না৷

সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল হক মিলুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী নুর মোহাম্মদ খান, সাবেক ছাত্র নেতা নাজমুল হক নান্নু, বি্এনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শ্রমিক দলের সভাপতি আনায়ার হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, ছড়াকার আবু সালেহ, প্রয়াত রাজনীতিক মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে ন্যান্সি রহমান বক্তব্য দেন৷