BAU-Manobbondhon-Pic-2

দৈনিকবার্তা-ময়মনসিংহ, ১৯নভেম্বর: দুবর্ৃত্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বুধবার টানা ২য় দিনের মতো ক্লাস বর্জন করেছে বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষার্থীরা৷

জানা যায়, গত সোমবার সন্ধ্যায় বহিরাগত সন্ত্রাসীরা ক্যাম্পাসে ককটেল বিস্ফোরণ এবং ফাঁকা গুলি করে পালিয়ে যায়৷ এরই প্রতিবাদে এবং নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা৷ তাদের দেয়া ২৪ ঘন্টা আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পরও কোনো অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় মঙ্গলবার থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে তারা৷এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হয়৷অপরাধীদের ধরতে জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসন কাজ করছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যারয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. হারুণ-অর-রশিদ৷

দুপুর আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে৷ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বারের মোড় থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টিএসসি’র সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়৷সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- শিক্ষার্থী রিয়াদ, রিপন, আকরাম, এনাম, মারুফ, অনিক, মিথুন প্রমুখ৷ বক্তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েনের দাবি জানান৷

এদিকে, ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে ছাত্রদের আড্ডার স্থান কে আর মার্কেটের বেশ কয়েকটি দোকানে পান-সিগারেট বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷ কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, ওই সকল দোকানে বসার বেঞ্চ থাকায় বহিরাগতরা প্রায়ই সেখানে বসে পান-সিগারেট খায়৷ এ বিষয়ে ভুক্তভোগী দোকানি জুয়েল জানান, মার্কেটে বেচা-বিক্রি বলতে সিগারেটটাই বেশি বিক্রি হতো৷ কিন্তু এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে৷ দোকান না চললে না খেয়ে থাকতে হবে৷

এদিকে, বহিরাগত ঠেকাতে শুধুমাত্র পান-সিগারেট বিক্রি বন্ধ করা ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷ এ ঘটনাকে কাণ্ডজ্ঞানহীন এবং সাহস হীনতার পরিচয় বলে অভিহিত করে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে শিক্ষার্থীদের আড্ডার জায়গা গুলো বন্ধ করে দিয়ে নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷

অথচ বহিরাগতদের হামলার ১১ দিন পার হয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি৷ এমনকি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না সে সম্পর্কেও তেমন কিছুই জানানো হয়নি বলে জানায় শিক্ষার্থীরা৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যায় বহিরাগতরা ওই সব দোকানে জড়ো হয়ে বেঞ্চ বসে চা, পান, সিগারেট খায়৷ তাই ওই সব দোকানে বসার বেঞ্চ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷

ক্লাস শুরুর ব্যাপারে প্রক্টর জানান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ আশা করছি বৃহস্পতিবারের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে৷ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. জহিরুল হক খন্দকার বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অব্যাহত আছে৷