KHaleda-zia

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,১৭নভেম্বর: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে৷প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সোমবার শুনানি গ্রহণ করেন৷ মঙ্গলবার আবার শুনানি হওয়ার কথা য়েছে৷

ওই অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা আবেদন খারিজ করে ২০১২ সালে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট৷ সোমবার শুনানিতে অংশ নিয়ে খালেদা জিয়ার কৌঁসুলি জয়নুল আবেদিন এ রায় উপস্থাপন করেন৷ দুপুর ১২টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত শুনানি গ্রহণ চলে৷ এ সময় খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী মওদুদ আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷ রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন৷ সোমবার ওই লিভ টু আপিলটিসহ খালেদা জিয়ার করা তিনটি লিভ টু আপিল শুনানির জন্য তালিকায় ছিল

রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং দুদকের পক্ষে মো. খুরশীদ আলম খান শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন৷এতিমখানা দুর্নীতি ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠন নিয়ে খালেদার দুটি আবেদনও এদিন আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য রাখা ছিল৷আদালত প্রথমে জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে করা আবেদনের বিষয়ে শুনানি করতে বললেও জয়নুল আবেদীন ওই মামলায় বিচারিক আদালতে অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে করা আবেদন শুনানি করতে বলেন৷ এরপর তিনি শুনানি করেন৷

শুনানিতে জয়নুল আবেদীন হাই কোর্টের রায় পড়ে শুনিয়ে বলেন, সাবেক টওধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কোথাও ন্যায়বিচার পাননি৷এ কারণে আমরা আসলাম আপনার কাছে৷ এ কারণে আমরা আপনাদের কাছে এসেছি৷এ দুটি মামলা বর্তমানে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ বাসুদেব রায়ের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে৷ সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ রাখা হয়েছে ২৪ নভেম্বর৷এতিমখানা মামলায় অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে খালেদার আবেদন ২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাই কোর্টে খারিজ হয়৷

এছাড়া দাতব্য ট্রাস্ট ও এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের বিষয়ে খালেদার আবেদনও ২৩ এপ্রিল হাই কোর্ট খারিজ করে দেয়৷ এরপর তিনি আপিল বিভাগে আসেন৷জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে৷এতিমদের সহায়তার জন্য একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় এ মামলায়৷দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ ২০১০ সালের ৫ অগাস্ট বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন৷

মামলার অপর আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান৷তারেক রহমান উচ্চ আদালতের জামিনে গত ছয় বছর ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন৷ সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আছেন জামিনে৷ বাকি দুজন পলাতক৷ ২০১১ সালের ৮ অগাস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ৷ তেজগাঁও থানার এ মামলায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাত্‍ করার অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে৷

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা৷এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডবি্লউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান৷ এদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু হতেই পলাতক৷ তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে৷ খালেদাসহ বাকি দুই আসামি জামিনে রয়েছেন৷গত ১৯ মার্চ এ দুটি মামলায় অভিযোগ গঠন করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিচার শুরু করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত৷