দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৬ নবেম্বর: বিকল্প ধারার চেয়ারম্যান এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, জয় তো বাচ্চা মানুষ, এখনো সে গণতন্ত্র শেখেনি৷ জয়কে নিয়ে কেউ মন্তব্য করবেন না৷ তিনি বিদেশে বড় হয়েছেন৷ তার স্ত্রী বিদেশি৷ সে দেশের ভাষা বুঝেন না৷ তাকে শিখতে সময় দিন৷
জয়কে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন,অতি সমপ্রতি একজন নবীন নেতা, যার দলে কোনও পদ আছে কিনা জানি না, তিনি বলেছেন- বিএনপি রাজাকারের দল৷ রাজাকারের সঙ্গে জোট হয়েছে বলে সেজন্য রাজাকারের দল৷ এখন যেকোনও মানুষই প্রশ্ন করতে পারে, আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার সঙ্গে জোট বেঁধেছে, একাত্তরে তাদের ভাষায় জাসদ সন্ত্রাসী দল ছিল, তাদের সঙ্গে ঐক্য করেছে৷ তাহলে আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারের দল? স্বৈরাচারী ক্ষমতা বেশিক্ষণ টিকে না, পতন অনিবার্য৷
রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেঞ্জ লাউঞ্জে জিয়া পরিষদের উদ্যেগে ‘৭ নভেম্বরের চেতনা: আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন৷প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিকল্প ধারার চেয়ারম্যান অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, গোপন কথা রইল না গোপন, ইমাম সাহেব বলে দিয়েছেন৷
তিনি বলেন,নির্দলীয় সরকারের অধীনে সঠিক নির্বাচন দিন৷জনগণের প্রত্যাশা একটি সহনশীল গণতন্ত্র৷সেই নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ীদের সঙ্গে আলোচনা করা যাবে৷৭ নভেম্বর বিপ্লবের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান মানুষের কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী৷
দমন-পীড়নের মাধ্যমে সৃষ্ট অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য সরকারই দায়ী এর ফলে সন্ত্রাসবাদের উত্থানের আশঙ্কা রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি ৷
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতার লোভে নয়, দেশের মানুষের দায়িত্ব নিতে তাকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছিল এবং তিনি তার বিপ্লবী চিন্তা-চেতনা দিয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়েছিলেন৷ যারা দেশের এই অগ্রগতিকে মেনে নিতে পারেনি তারাই জিয়াউর রহমানকে হত্যা করেছে৷সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, জিয়াউর রহমানের আর্দশ এখন হারিয়ে যাচ্ছে৷ যারা তার আদর্শের দোহাই দিয়ে রাজনীতি করেন তাদের মধ্যে অনেকেই সত্যিকার অর্থে জিয়াউর রহমানের আদর্শ লালন করেন না৷
৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র লুন্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে নির্বাচনে ১৫৩ জন এমপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়, সেটাকে আর যাই হোক গণতন্ত্র বলা যায় না৷তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভা একটি চিড়িয়াখানার মতো৷ অর্থমন্ত্রী তার মন্তব্যের মাধ্যমে ঘুষকে হালাল করে দিয়েছেন৷ সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শুধু ঘুমায়৷ তিনি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেশের জন্য চিন্তা করেন৷ এই মন্ত্রিসভা একটি বিচিত্রময় মন্ত্রিসভা৷
বর্তমান সংসদ জনপ্রতিনিধিত্বহীন দাবি করে তিনি বলেন, এই সংসদকে কোনোভাবে জনগণের সংসদ বলা যাবে না৷ এই সরকারও নির্বাচিত নয়৷ আমরা এই সরকারকে বলি একটি দখলদারী সরকার৷বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলন, বিএনপি আন্দোলনে নেই-এটা বলা ভুল৷ আমরা আন্দোলনে আছি, থাকব৷ সময় মতো জনগণকে সম্পৃক্ত করে অবৈধ সরকারের পতন ঘটানো হবে৷
বর্তমান সংসদকে চিড়িয়াখানার সঙ্গে তুলনা করে বি চৌধুরী বলেন, নিন্দ্রামন্ত্রী (সমাজকল্যাণ মন্ত্রী), গালাগালি মন্ত্রী (অর্থমন্ত্রী) আরো কত বিচিত্র মন্ত্রী এই সংসদে রয়েছে৷
তিনি বলেন, সংসদে বিএনপির একটাও নেতা নেই, তবুও আওয়ামী লীগ সব সময় বিএনপিকে গালাগালি করে৷ কারণ তারা সত্যকে ভয় পায়৷ঘুষ বেআইনি নয় অর্থমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের প্রসঙ্গে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ঘুুষ নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কথা, এ বছরের মধ্যে সর্বনিকৃষ্ট কথা৷ মন্ত্রী ভবিষ্যতে ঘুষ নিয়ে বাজেট দেবেন৷
তিনি বলেন, যারা দেশের এই অগ্রগতিকে মেনে নিতে পারেনি তারাই জিয়াউর রহমানকে হত্যা করেছে৷ জিয়াউর রহমান ক্ষমতার লোভে নয়, দেশের মানুষের দায়িত্ব নিতে তাকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছিল এবং তিনি তার বিপ্লবী চিন্তা-চেতনা দিয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়েছিলেন৷
৭ নভেম্বর নিয়ে এই আলোচনা সভায় বি চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বাইরে একটি দল- একথা বললে বিতর্কের সৃষ্টি হবে৷ এই দলটির সঙ্গে ৭ নভেম্বরের বৈরী সম্পর্ক৷ আসলে ৭ নভেম্বর থাকলে আওয়ামী লীগ থাকে না, সেজন্য ৭ নভেম্বরে কর্মসূচি করতে তারা দেয় না৷
জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধুলিসাত্ করেছেন বলে এরশাদের দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনাও করেন বি চৌধুরী ৷ ইদানিং এরশাদ একজন নব্য মুক্তিযোদ্ধা হয়ে আবির্ভূত হয়েছেন৷ মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় তিনি ছিলেন পাকিস্তানে৷ জিয়াউর রহমান বদান্যতায় তিনি (এরশাদ) প্রথমে উপ সেনাপ্রধান এবং পরবর্তীতে সেনাপ্রধান হয়েছিলেন৷ জিয়াউর রহমানের মৃতু্যর পেছনে তার কী ভূমিকা ছিল, তা দেশবাসী জানে৷
সভায় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও জিয়া পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কবীর মুরাদের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, প্রফেসর ডা. আবদুল কুদ্দুস, ড.মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম প্রমুখ ৷