Joy-1-

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৩নভেম্বর: মেধা ও শ্রম দিয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়৷তিনি বলেন, ছাত্রলীগের নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেউ সন্ত্রাস করলে তা সহ্য করা হবে না৷ ভবিষ্যতের আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিতে ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত হতে হবে৷m সজীব ওয়াজেদ জয় বৃহস্পতিবার গণভবনে ছাত্রলীগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ আহবান জানান৷

জয় বলেন, দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শানত্মিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে৷ কোনো ক্যাম্পাসে কেউ সন্ত্রাস করলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেবেন৷ যারা সন্ত্রাস করবে তাদের সহ্য করা হবে না৷ আমরা যদি সত্‍ থাকি তবে চিনত্মার কিছু নেই৷ কেউ সঠিক শিক্ষা নিলে তার দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি করার দরকার হয় না৷

এ সময়ে তিনি ছাত্রলীগের ‘সেফ ক্যাম্পাস, ক্লিন ক্যাম্পাস- স্লোগানকে সত্যিকার রূপ দিতে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান৷তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, ছাত্রলীগের সুনাম ক্ষণ্ন হয়, সংগঠনের নেতা-কমর্ীদের এ ধরনের কোনো কাজ করা ঠিক হবে না৷ যখন দল ক্ষমতায় থাকে তখন অনেকে ছাত্রলীগ আর আওয়ামী লীগ হয়ে যায়৷ কিন্তু তারা দলে এসে নিজেদের দুর্নীতি ও লাভের জন্য আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাতে থাকে৷

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বলেই স্বাধীনতা বিরোধীরা এখনো এ দলের বিরম্নদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছ৷ একশ্রেণীর মানুষ যারা কোনদিন বাংলাদেশ চায়নি, তারাও পাকিসত্মানের এজেন্ট হিসেবে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচেছ৷ এ ধরনের অপপ্রচারে কান না দিতে তিনি নেতা-কমর্ীদের প্রতি আহবান জানান৷স্বাধীনতা বিরোধীরা এখনো আমাদের মাঝে আছে৷ তারা ওই পাকিসত্মানের পক্ষেই কাজ করে যাচ্ছে একথা উল্লেখ করে জয় বলেন, যারা বাংলাদেশ চায়নি, তারা দেশের ভালো কিভাবে চাইবে ?

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে বলেন, অন্য সংগঠনের চেয়ে ছাত্রলীগই কিছু নিয়ম মেনে চলে৷ কোনো বৃদ্ধ ছাত্রের ছাত্রলীগ করার সুযোগ নেই৷ ছাত্রলীগের মেম্বার হতে হলে বয়সের একটা সীমা আছে৷সজিব ওয়াজেদ বলেন, ছোটবেলা থেকে আমার মা সবসময় বলতেন যে- যেখানেই থাকো, যাই করো, মনে রাখবে যে, তুমি মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতি৷ তোমার কাজের মাধ্যমে এ নামের মর্যাদা সবসময় সমুন্নত রাখবে৷

তিনি বলেন, মা আমাকে আরেকটি কথা বলতেন যে, পড়ালেখা করো, নিজের পায়ে দাঁড়াও৷ শিক্ষা থাকলে তোমাকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না৷ শিক্ষা থাকলে তোমার কোনদিন অভাব হবে না- কারো কাছে হাত পাততে হবে না৷ মায়ের এ আদেশ শিরোধার্য মেনে আমি শিক্ষা গ্রহণ করেছি৷ নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি৷

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, আমাদের অর্থনীতির গতি বাড়ছে, আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে৷ আমাদের দেশে এখন মেধা ও শ্রমের মাধ্যমে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর অনেক সুযোগ ও ৰেত্র সৃষ্টি হয়েছে৷ এখানে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি করার কোন প্রয়োজন হয় না৷ সত্‍ ও সুন্দরভাবে জীবন ধারণের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে৷ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস করে ছাত্রলীগের বদনাম করলে তাদের সহ্য না করতে সংগঠনটির নেতাদের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়৷শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেউ বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাস করলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷

ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে জয় বলেন, যারা আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস করে ছাত্রলীগের বদনাম করবে কোনো দিন তাদের সহ্য করবা না৷আমাদের আওয়ামী লীগের যত সিনিয়র নেতৃবৃন্দ আছে সবাই একসময় ছাত্রলীগ করত৷ আমার নানাও মেধা দিয়ে, শ্রম দিয়ে দেশের জন্য কাজ করেছেন৷ তোমরাও মেধা দিয়ে, শ্রম দিয়ে, দেশের জন্য কাজ করৃ তোমাদের মাঝেই ভবিষ্যত্‍ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব, তোমাদের মাঝেই ভবিষ্যত্‍ বাংলাদেশের নেতৃত্ব৷ তোমরাই বাংলাদেশের ভবিষ্যত্‍, এটা কোনো দিন ভুলবে না৷

ছাত্রলীগ সম্পর্কে আলোচনায় সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর থেকে ছাত্রলীগে আমরা নির্ধারিত কিছু নিয়ম মেনে চলি৷ কেউ ছাত্রলীগের সদস্য হতে হলে ছাত্র হতে হবে এবং বয়সের একটা সীমা আছে৷ বৃদ্ধ বয়সের কেউ ছাত্রলীগে আসতে পারে না৷ছাত্রলীগ হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে পুরাতন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান৷ আমাদের দেশের ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলন এই ছাত্রলীগই আরম্ভ করেছে৷

নিজের জীবন শিক্ষার কথা তুলে ধরে তরুণ এ তথ্য-প্রযুক্তিবিদ বলেন, আমি যখন ছোট তখন থেকেই আমাকে, আমার বোনকে, আমার পরিবারকে আমার মা একটি কথা বারবার বলতেন- যেখানেই থাক, যাই করো, তুমি কার নাতি৷ সেই মহান ব্যক্তি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তুমি তার নাতি৷

এই নামটাকে কোনো দিন বদনাম হতে দেবে না৷ তুমি কোনো দিন এমন কোনো কাজ করবে না যাতে এই নামের বদনাম হয়৷ ইনশাল্লাহ আমি এই জীবনে সেরকম কোনো কিছু করি নাই৷ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরও এর প্রতিফলন ঘটানোর আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু নাতি সজীব ওয়াজেদ বলেন, সেইভাবে আমারও তোমাদের প্রতি একটি অনুরোধ, এই যে আমাদের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, এই সেই ঐতিহাসিক ছাত্রলীগ, তোমরা এমন কিছু করবা না যাতে এই প্রতিষ্ঠানের বদনাম হয়৷

যখন দল ক্ষমতায় থাকে, তখন অনেকেই.. সবাই তখন ছাত্রলীগ- আওয়ামী লীগ হয়ে যায়; নিজেদের লাভের জন্য, দুর্নীতি করার জন্য৷ আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র চলতেই থাকে৷

তারা বাঙালি না, তারা পাকিস্তানি এজেন্ট-মন্তব্য করে জয় বলেন, আর এখনো তারা আমাদের মাঝে আছে৷ তারা সেই পাকিস্তানের পক্ষে এখনো কিন্তু আন্দোলন করে যাচ্ছে৷ তারা তো কোনো দিন দেশের জন্য কিছু করতে চায় না৷ বাংলাদেশই চায়নি৷

তবে ক্ষমতায় না থাকলে তারা ষড়যন্ত্র, বদনাম, অপপ্রচার নানা কিছু চালাতে থাকে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়৷তবে এই অপপ্রচারে কান দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই৷ কারণ আমরা যদি সত্‍ থাকি, ছাত্রলীগ যদি সত্‍ থাকে তাহলে আমাদের চিন্তার কিছু নেই, বলেন তিনি৷

সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে ছাত্রলীগ নেতাদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ যে কোনো ক্যাম্পাসে কেউ যদি বিশৃঙ্খলা করে, সন্ত্রাস করে তাকে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেবে৷ তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব৷ কারণ বিশৃঙ্খলা, নির্যাতন, সন্ত্রাস আমাদের আওয়ামী লীগ সরকার সহ্য করে না এবং ছাত্রলীগও সহ্য করবে না৷

সারাজীবন আমার মা আমাকে আরেকটি কথা বলতেন, পড়ালেখা কর, নিজের পায়ে দাঁড়াও৷ শিক্ষা থাকলে তোমাকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না, কোনো দিন অভাব হবে না, নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে, কারো কাছে হাত পাততে হবে না৷ আমি পড়ালেখা করেছি, নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি৷

এসময় ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তাদের প্রসঙ্গ টেনে জয় বলেন, এই ১১ হাজার উদ্যোক্তা, তারা তাদের মেধা দিয়ে, শ্রম দিয়ে একেকটা ইউনিয়নে বসে মাসে ৫০, ৬০, ৭০ হাজার টাকা কামাচ্ছে৷ তাদের কারো কাছে হাত পাততে হচ্ছে না৷ তারা নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে৷আমি চাই যে তোমরাও, ছাত্রলীগের সকল সদস্য, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী ভাল মতো পড়ালেখা করলে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবা৷

দেশের অর্থনীতির প্রসঙ্গ টেনে সজীব ওয়াজেদ বলেন, আমাদের অর্থনীতি বাড়ছে৷ অর্থনীতির গতির দিক দিয়ে আমাদের অর্থনীতি সারা বিশ্বে এখন চতুর্থ অবস্থানে আছে৷ আমাদের দেশে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর, নিজের চেষ্টায় মেধা দিয়ে আয় করার অনেক সুযোগ আছে৷এসময় ছাত্রলীগ নেতারা জানান, সংগঠনের পক্ষ থেকে তারা ‘ক্লিন ক্যাম্পাস কর্মসূচি শুরু করছেন, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে৷

এ প্রসঙ্গে জয় বলেন, তোমাদের এই ক্লিন, সেইফ ক্যাম্পাসের ওয়াদা শুনে আমি খুবই আনন্দিত৷ আমি এটা আজকে তোমাদের কাছে, ছাত্রলীগের কাছে দাবি করতে এসেছিলাম৷ আমি চাই বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিরাপদ থাকবে, পরিষ্কোর থাকবে, পরিচ্ছন্ন থাকবে৷ ছাত্রলীগে মেধাবী ছেলেমেয়েরা যোগ দেবে৷
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক,প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল,প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন উপস্থিত ছিলেন৷