দৈনিকবার্তা-ভোলা, ৯নভেম্বর: ভোলার উপকূলীয় চরঞ্চালের বনভূমি মেঘনা নদীর ভাঙ্গনের কবলে পরে প্রতিদিন বিলিন হয়ে যাচ্ছে ৷ অন্য দিকে বনদসু্যদের কু-দৃষ্টির হাত থেকে ও রৰা পাচ্ছেনা সবুজ বেষ্টনীর এই সৌন্দর্যময় বনাঞ্চল৷ দেখার যেন কেউ নেই৷ প্রতিনিয়ত এভাবে চলতে থাকলে এসকল চরঞ্চালের বনভূমির সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দূর্যোগে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল৷
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভোলা জেলার একাধীক চর সহ ৮ টি রেঞ্জের অধীনে ৩ লৰ ৬০ হাজার একর জমিতে সবুজ বেষ্টনীর বনাঞ্চল করার সরকারী ভাবে নির্দেশ রয়েছে৷ এর মধ্যে রিপার কারা হয়েছে ৯৫ হাজার ১৩৬.২৬২ একর জমি৷ প্রতিনিয়ত নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে প্রায় ৮৯৬৫.৯০ একর জমির বনাঞ্চল৷ এর মধ্যে রয়েছে ভোলার জেলার চর মানিক, চর জব্বার, চর নিউটন, চর নিজাম, চর জংলী, চর মনপুরা, চর ফয়েজ উদ্দিন, চর জহিরউদ্দিন, চর কচুয়া, ভাসান চর, চর পাতিলা, চর কুকড়ি মুকড়ি ও ঢাল চর৷ এর মধ্যে চরফ্যাশন উপজেলার দৰিণ আইচা থানার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচার বনঞ্চালটি অন্যতম৷
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এই চরে প্রায় ৩১.৩১ বর্গ মাইলের মধ্যে ২৮.২১ বর্গ মাইল জমি জুড়ে বনাঞ্চল রয়েছে৷ এই বনে রয়েছে কেওড়া, গেওয়া, বাইন,রেইনট্রি ক্যারপা, সুন্দরি, পসুর সহ বিভিন্ন প্রভৃতি মূল্যবান গাছ রয়েরছ৷ এখানে হরিণ, শিয়াল, বন বিড়াল সহ বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির পাখির অভয়স্থল৷ কোন হিংস্র পশুর ভয় না থাকলেও বনে রয়েছে সাপ৷ তবে সেগুলো নিশাচর৷ শীতের মৌসুমে সুদুর থেকে আসা অতিথি পাখিরাও এখানে আসতে ভুল করে না৷ এখানে পরিকল্পিত ভাবে বনাঞ্চল শুরম্ন হয় ১৯৭৬ সালে৷ বনাঞ্চলের পরিমান সনত্মোষজনক হলেও এখানে অবহেলার কারনে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে নেই কোন জোরালো ব্যবস্থা৷
এই সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে বনদসু্যরা৷ এক দিকে নদী ভাঙ্গনের কবল পরে প্রতিদিন বিলিন হচ্ছে এই ঢালচরের সৌন্দর্য বনভূমি৷ অন্য দিকে বনদসু্যরা রেঞ্জের অসাধু কর্মকতর্াদের সাথে আতাত করে সুযোগ বুঝে অবাদে গাছ কেটে নিয়ে ট্রলারের উপরেও নিচে বোজাই করে দেশের বিভিন্ন জাগাই নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে৷ ফলে জলদসু্য ও গাছ খেকো বনদসু্যদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে এখানে তৈরী হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী৷
এ ব্যাপারে ঢালচর ইউনিয়নের রেঞ্জ বন কর্মকতর্া হরি কানত্মি লাল জানান, গাছ গুলো সাগরের নুনা পানির ঢেউয়ের সাথে বালি গিয়ে জমার কারণে মরে যাচ্ছে৷ আর মরা গাছ গুলো লোকজন কেটে নিয়ে লাকড়ি হিসেবে ব্যাবহার করছে৷ এর বেশি কিছু বলতে পরবেনা বলে অপরাগত প্রকাশ করেন৷ প্রতিনিয়ত এভাবে চলতে থাকলে ঢালচরের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল৷ চরবাসীর একটাই দাবি বন খেকোদের হাত থেকে সৌন্দর্য বর্ধন রক্ষা করা৷