দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৮নভেম্বর: পুলিশ বাহিনীর ওপর আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গে অনিয়মের অভিযোগ যে উঠেছে এটা আংশিক সঠিক৷পুলিশের কাছে গেলে বেশিরভাগ সময়ই ভালো বিচার পাওয়া যায় না৷ বিশেষ করে নারীরা হয়রানির শিকার হলেও আরো হয়রানির ভয়ে পুলিশের কাছে যায় না৷শনিবার দুপুরে রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে আলোচকরা এসব কথা বলেন৷ সংলাপের এ পর্বে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের ক্যান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির ও অভিনেত্রী সুমনা সোমা৷
একটি জরিপের উহারণ দিয়ে ফারাহ কবির বলেন, ৮০ ভাগ নারী বিভিন্ন জায়গায় হয়রানি হওয়ার পরেও তারা পুলিশের কাছে যায় না৷ তারা মনে করেন পুলিশের কাছে গেলে আরে বেশি হয়রানি হতে হয়৷ সরকারকে অবশ্যই বিষয়টা দেখতে হবে৷সুমনা সোমা বলেন, পুলিশের কাছে গেছে সব সময় ভালো বিচার পাওয়া যায় না এটা ঠিক৷ তবে আমাদের অবশ্যই পুলিশের কাছে যেতে হবে৷হাসানুল হক ইনু বলেন, পুলিশ বাহিনী একটি সুশুঙ্গল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ এই বাহিনীর কতিপয় সদস্যের ওপর আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এটা ঠিক৷ তবে এই অভিযোগ বৃটিশ ও পাকিস্তান আমলেও ছিল৷ তবে এটা যদি পুরো বাহিনীর ওপর এই অভিযোগ ওঠে সেটা উদ্বেগজনক৷পুলিশ বিভিন্ন সময় শাসকদের হয়ে কাজ করেছে তাই পুলিশের মানসিক পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন এই মন্ত্রী৷
এসময় তিনি ১ নভেম্বর সারাদেশে ভয়াবহ বিদু্যত বিপর্যরে সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বাহিনীর প্রশংসা করেন৷হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মানবাধিকার কমিশনার যে কথা বলেছেন তা অল্পই বলেছেন৷ কারণ একটি জেলার পুলিশ হলে সাত খুন মাপ৷ পুলিমের বিরুদ্ধে এধনের অভিযোগ আগেও উঠেছে তবে এটা এথন আরো বেড়েছে৷ কারণ পুলিশ এখন মন্ত্রীর জামাই৷তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে বর্তমানে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে৷ ফখরুল সাহের মত মানুষের নামে দিয়েছে ময়লার গাড়ি পোড়ানোর মামলা৷ আমি একজন মন্ত্রী ছিলাম আমার বিরুদ্ধে দিয়েছে পুলিশ কনস্টেবলকে মারার মামলা৷
বঙ্গবন্ধু যে কারণে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পারেননি একই কারণে বিএনপিও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম৷’৭১’র মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার অবশ্যই হওয়া উচিত মন্তব্য করে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের যে বিচার হচ্ছে সেটা আন্তর্জাতিক মানের নয়৷ স্কাইপ কেলেঙ্কারি ফাঁসের পর আমরা দেখেছি একজন বিচারক বলছেন, সরকার বিচারের জন্য চাপ দিচ্ছে৷ আসলে এই বিচার কাজের সঙ্গে যারা আছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মী৷ তবে হ্যাঁ ১৯৭১ সালে যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, খুন, হত্যা, নারী ধর্ষণ করেছে তাদের অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত৷ তবে সেটা হতে হবে আন্তর্জাতিকমানের স্বচ্ছ বিচার৷
১৯৯৬ সালের উহারণ দিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, জামায়াত নেতারা যখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে একত্রে বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে নামানোর জন্য আন্দোলন করে তখন তারা (জামায়াত) আর যুদ্ধাপরাধী থাকে না৷ এই বিচার মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিরুদ্ধে হচ্ছে না৷ এই বিচার হচ্ছে ২০ দলীয় জোটের একটি শরিকের বিচার৷ এখন আওয়ামী লীগের জামায়াতকে শিক্ষা দিচ্ছে কেন তাদের সঙ্গে থাকলো না৷সমগ্র জাতি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে মন্তব্য করে হাসানুল হক ইনু বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে জাতি দুই ভাগে বিভক্ত এটা ঠিক নয়৷ দুই ভাগে বিভক্ত হলো পাকিস্তান আর বাংলাদেশের স্বাধীনতাকারী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি৷ আপনি যদি ইবলিস আর ফেরেশতাকে এক পাল্লায় মাপেন এটা ঠিক হবে না৷বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন ও বিবিসি বাংলা যৌথভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে৷ অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেন ওয়ালিউর রহমান মিরাজ এবং উপস্থাপনা করেন শারমিন রমা৷