দৈনিকবার্তা-ময়মনসিংহ, ৮নভেম্বর: রোপা আমন ধান রোপনের পর কৃষকের ঘরে কোন কাজ থাকে না৷ এর ফাঁকে আবহমানকাল ধরে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলায় চলে আসছে লাঠি খেলা৷ লাঠি খেলা এক সময় ছিল গ্রামীন বিনোদনের অন্যতম খোরাক৷ কালের আবর্তনে মানুেষ ভুলতে বসেছে লাঠি খেলা৷
১০/১৫ বছর আগের লাঠি খেলার বেশ প্রচলন ছিল৷ বাহারী নানান পোশাক পড়ে লাঠি ও দা হাতে খেলোয়াড়রা তাদের শারীরিক কসরত প্রদর্শণ করে দর্শকদের আনন্দ দিত৷ দূর দূরানত্ম থেকে ছুটে আসতো মানুষ এ খেলা দেখার জন্য৷ এক সময় বৈশালী, পাশের বাড়ি, পিরিপাইট,বেনিয়ম, মৃতু্যবাড়ী, শেয়ালধরা এ রকম নানান রকমের লাঠি খেলার প্রচলন ছিল৷
শারীরিক কসরত প্রদর্শন ও নিজেদের আত্নরক্ষার্থে বহুকাল থেকে লাঠি খেলার প্রচলন ছিল৷ এক জন ওসত্মাদের নির্দের্শে কখনো একক ভাবে কখনো একের অধিক হয়ে কখনো দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে কখনো আবার সকলেই একত্রে মিলে লাঠি খেলা দেখাত৷ লাঠি খেলায় দুধরনের লাঠি ব্যবহার করা হয়ে থাকে ছোট লাঠি লম্বা হয়ে থাকে আড়াই হাত, বড় লাঠি লম্বায় হয়ে থাকে ৪ হাত৷ এ ছাড়া এ খেলায় দেখনো হয় ৪ বালডির খেলা. ৬ চাকুর খেলা ও রামদার শারিরীক কসরত৷ লাঠি খেলা খেলতে সাধারনত ৩০ জনের মত একটি দল হয়৷ এক টানা ৩ ঘন্টার মত খেলা চলে৷ খেলায় বাদ্যযন্ত্র হিসাবে কারা, বোম, জয়ডাক, কনেট ও পাতাবাশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ তবে বোম বাদ্যযন্ত্রটি না থাকায় তারা অন্য যন্ত্রের উপর নির্ভর করে সে বাজনা বাজিয়ে থাকে৷
গ্রামগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে এ খেলা চলে এলেও বর্তমানে তা বিলুপ্তির পথে৷ বিভিন্ন জায়গায় লাঠি খেলা দেখা যায়৷ কিন্তু এ লাঠি খেলা ৰনিকের জন্য৷ খেলাটি দিনের পর দিন হারিয়ে যাওয়ার ফলে এর খেলোয়াড় সংখ্যা কমছে৷ তৈরি হচ্ছে না নতুন খেলোয়াড়৷ আর পুরম্ননো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা অর্থাভাবে প্রসার করতে পারছে না এ খেলা৷
উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের বিড়ালশাখ খামার বাড়ীতে শামছুল হক সরকার (৬৫) নামের এক লাঠি খেলোয়াড় ৩২ জনের একটি খেলার দল গঠন করেছেন৷ তারা খেলাটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শণ করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন৷ লাঠি খেলোয়াড় শামছুল হক সরকার জানান, তার পিতার পিতাও লাঠি খেলেছেন৷ তিনিও খেলছেন৷ পরে যারা খেলবেন তাদের জন্যই তিনি দলটি গঠন করেছেন৷ তিনি আরও জানান, লাঠি খেলা জানা থাকলে বিপদ থেকে রৰা পাওয়া যায়৷ এ খেলা জানা থাকলে খালি হাতে শক্র পৰের হাত থেকে বেঁচে আসা সম্ভব৷ তাছাড়াও শারিরীরিক কসরতের এ খেলাটি শারিরীরিক ব্যায়াম৷ এ খেলার মাধ্যমে শরীর ও মন সতেজ থাকে৷