দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৮নভেম্বর: রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বাণিজ্য ভারসাম্য হ্রাসে চীনের বাজারে বাংলাদেশী পণ্য প্রবেশে আরো সুবিধা চেয়েছেন৷ তিনি আজ আশা প্রকাশ করে বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের একটি দেশ হওয়ার স্বপ্ন পূরণে চীন বাংলাদেশকে সহায়তা করতে তাদের সাহায্য ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে৷
শনিবার সকালে গ্রেট হলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠককালে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন যে, প্রতিরক্ষা, কৃষি ও জলবায়ু পরিবর্তন ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সাহায্য ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি চীন বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ আরো বৃদ্ধি করবে৷ বৈঠকের পর রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, আধ ঘন্টা ধরে বৈঠক চলাকালে উভয় দেশের প্রেসিডেন্ট অর্থনীতি ও পারস্পরিক স্বার্থসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেন৷
বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে চীনের তাত্পর্যপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করে হামিদ বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ পরিণত হবে৷ ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী পালিত হবে৷তিনি আরো বলেন, চীন বাংলাদেশের একটি পরীক্ষিত বন্ধু দেশ এবং বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে চমত্কার বন্ধুত্বপূর্ণ ও প্রতিবেশী সুলভ সম্পর্ক বিগত বছরগুলোতে বৃদ্ধি পেয়েছে৷রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ চীনের সাথে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে৷তিনি আরো বলেন, ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চীন সফরের মধ্যদিয়ে এই সম্পর্কের ভিত্তি স’াপিত হয়৷ পাশাপাশি বিদ্যমান বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে বাংলাদেশি পণ্যের প্রবেশাধিকার বাড়ানোরও অনুরোধ করেছেন তিনি৷
বৈঠক প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, রাষ্ট্রপতি বলেছেন বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে চীন সরকার এরইমধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে৷ পাট ও পাটজাত পণ্যসহ বাংলাদেশি পণ্যের চীনে প্রবেশের ক্ষেত্রে আরও সুবিধা আমরা আশা করছি৷ বৈঠকে সমুদ্রবিজ্ঞান ও নির্মাণ শিল্পে চীনের সঙ্গে একযোগে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন আবদুল হামিদ৷সাক্ষাতে রাষ্ট্রপতি চীনের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান৷
ইহসানুল করিম বলেন, বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, বাংলাদেশ চীনের বহুদিনের বন্ধু, চায়নাও বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু৷ এই বন্ধুত্বের ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বস্ততা এবং সহযোগিতা৷আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অগ্রগতির জন্য অভিনন্দন জানিয়ে শি জিনপিং বলেন,”চীন বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে৷এশিয়ান ইনফ্রাস্টাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকে (আইইবি) বাংলাদেশ যোগ দেওয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট সন্তোষ প্রকাশ করেন৷ এছাড়া আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি৷
আগামী বছর বাংলাদেশ থেকে ১০০ তরুণকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানানো হবে বলেও জানান শি জিনপিং৷পরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ চীনের ভাইস- প্রেসিডেন্ট লি ইউয়ানশাওয়ের আমন্ত্রণে মধ্যাহ্নভোজনে যোগ দেন৷রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব শেখ আলতাফ আলী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বি-পাক্ষিক) মোস্তফা কামালসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন৷