দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৪ নভেম্বর: অবৈধ সরকারের কাছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি করে লাভ নেই বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, দেশ আজ রক্ত পিপাসু দানবের হাতে বন্দী৷ এ দানবের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে৷ এর ফলে দেশের মানুষের আশা আকাক্ষা পূরণ হবে৷মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে যুব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন৷
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন,দেশবাসীকে আওয়ামী লীগের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে হবে৷ মানুষ শুধু বদ্ধ ঘরে বক্তব্য শুনতে চায় না৷ রাজপথে থাকতে হবে৷ আন্দোলনের মাধ্যমে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ সকল বন্দীদের মুক্তি দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে৷
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক জীবনে যদি ভুল থাকে, সেটা হলো শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং তাকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়া৷ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডে তত্কালীন আওয়ামী লীগ নেতারা জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়৷গয়েশ্বর বলেন, পঁচাত্তরে চার নেতাকে জেলখানায় হত্যা করা হয়েছে৷ আমরা এ ধরনের হত্যাকাণ্ড সমর্থন করি না৷ ওই সময়ে ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগের নেতারা৷ আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদ মোশাররফের বড়ভাই খালেদ মোশাররফ ক্ষমতায় ছিলেন৷ আর জিয়াউর রহমান ওই সময়ে বন্দি ছিলেন৷
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে কারাগারে হত্যা করে সেনাবাহিনীর একদল সদস্য৷জেলহত্যা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বক্তব্যের জবাবে গয়েশ্বর বলেন, ওই হত্যাকাণ্ড জিয়াউর রহমানের নির্দেশে হয়েছে, সৈয়দ আশরাফের এই বক্তব্য সঠিক নয়৷ ওই সময়ে জিয়া বন্দি ছিলেন৷ ক্ষমতায় ছিলেন তত্কালীন আওয়ামী লীগ নেতারা৷”
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের নির্দেশে শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছিলেন৷ তার নির্দেশেই বিলুপ্ত আওয়ামী লীগ আবার রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছিল৷ বর্তমানে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট কর্মকাণ্ড দেখে মনে হয়, জিয়ার ওই নির্দেশ একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল৷সমাবেশে বিএনপি ও জিয়াউর রহমান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেন গয়েশ্বর৷
তিনি বলেন, অবৈধ প্রধানমন্ত্রী যেসব বক্তব্য রেখেছেন, তা সফদার ডাক্তার ছড়ার মতো৷ ওই ছড়ায় আছে- সফদার ডাক্তার, মাথা ভরা টাক তার, খিদে পেলে পানি খায় চিবিয়ে৷ আর এখনকার প্রধানমন্ত্রীর অবস্থাটা এমন যে, শেখ হাসিনা নাম যার, মাথা গরম তার৷ খিদে পেলে রক্ত খায় চিবিয়ে৷যুবদল সভাপতি আলালসহ আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তির জন্য কেবল স্লোগান না দিয়ে রাজপথে আন্দোলন জোরদারে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি৷
সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, হাসিনা দেশকে বসবাসের তিক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে সিংহাসনে বসে থাকতে চান৷ কিন্তু তিনি জানেন না বাংলার জনগণ যখন এক হবে তখন আর সিংহাসন রক্ষা হবে না৷সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, ১৫ আগস্টসহ অন্যান্য খুনের জন্য বিএনপিকে দায়ী না করে নিজেরা আয়নার সামনে দাঁড়ান৷ তাহলে দেখবেন কাদের চেহারা ভেসে উঠে৷ তারা আপনাদের সঙ্গেই আছে৷ বরং আমরা বলতে পারি জিয়াউর রহমানকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই হত্যা করেছে৷
যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট আব্দুস সালাম আযাদের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা মহানগরের যুবদল উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাহাঙ্গীর প্রমুখ৷