Jamat Hotal

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২নভেম্বর: দলের কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর মৃতু্যদণ্ডের প্রতিবাদে আগামী বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টা থকে শুক্রবার ভোর ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টার হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী৷রোববার দুপুরে জামায়াতের ভাপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমদ এক বিবৃতিতে এই হরতালের ঘোষণা দেন৷বিবৃতিতে বলা হয়, দলের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে রোব ও সোমবারের হরতাল অব্যাহত থাকবে৷ মঙ্গলবার পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে আলোচনা এবং জামায়াত নেতাদের মুক্তির জন্য দেশব্যাপী দোয়া অনুষ্ঠান৷ এছাড়া ১ নভেম্বর দেশব্যাপী ভয়াবহ বিদূ্যত্‍ বিপর্যয়ের প্রতিবাদে ৫ নভেম্বর বুধবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ পালন করবে জামায়াত৷প্রসঙ্গত, জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর মৃতু্যদণ্ডের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ২৪ ঘন্টার হরতাল পালন করে দলটি৷ রোববার শুরু হয়েছে ৪৮ ঘন্টার হরতাল৷ মঙ্গলবার ভোর ছয়টা পর্যন্ত চলবে এই হরতাল৷

যারা আর একটি ফাঁসির রায় হলে সপ্তাহজুড়ে টানা হরতালের হুমকি দিয়েছিল৷রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার ঘন্টাখানেক পর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ এই হরতালের ঘোষণা দেন৷এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, মীর কাসেম আলীসহ আটক জামায়াত নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে ৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৭ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী ২৪ ঘন্টার হরতাল পালিত হবে৷এর আগে দলের আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায়ের পর তিন দিন হরতালের ঘোষণা দেয় জামায়াতে ইসলামী, যার দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির মধ্যেই মীর কাসেমের রায় আসে৷সলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ১৯৮৫ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ অর্থাত্‍ মজলিসে শুরার এই সদস্যের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ, নির্যাতনের আটটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে এবং দুটি আংশিক প্রমাণিত হয়েছে৷

মকবুল আহমাদ বিবৃতিতে বলেন, আদালত সরকারের দায়ের করা মিথ্যা মামলায়,সাজানো সাক্ষীর ভিত্তিতে আজ তার বিরুদ্ধে মৃতু্যদণ্ডের যে রায় ঘোষণা করেছেন তা একটি ন্যায়ভ্রষ্ট রায়৷ এ রায়ে মীর কাসেম আলী ন্যায়বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন৷জামায়াতের দাবি, রাষ্ট্রপক্ষ যে সময় যে স্থানে মীর কাসেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে, কাসেম সে সেময় সেখানে ছিলেনই না৷ তিনি তখন ছিলেন ঢাকায়, চট্টগ্রামে নয়৷সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য বিচারের নামে যে প্রহসনের আয়োজন করেছে, দেশে-বিদেশে তার কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই৷ সরকারের মন্ত্রী ও দলীয় নেতাদের বক্তব্যে প্রতীয়মান হয় যে, আদালতের বিচার কার্যক্রম সরকারের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হচ্ছে৷

বৃহস্পতিবার হরতাল ছাড়াও আটক নেতাদের মুক্তির জন্য মঙ্গলবার আশুরার দিন দেশব্যাপী দোয়া অনুষ্ঠান ও দেশব্যাপী বিদু্যত্‍ বিপর্যয়ের প্রতিবাদে বুধবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াত৷ সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতায় ১ নভেম্বর দেশব্যাপী বিদু্যত্‍ বিপর্যয়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে-এর প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে তা অবিলম্বে জাতিকে জানানোর আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান ৷

১ নভেম্বর শনিবার সকাল ১১টা থেকে সারা বাংলাদেশব্যাপী ভয়াবহ বিদু্যত্‍ বিপর্যয় দেখা দেয়৷ কোথাও কোথাও ১১ ঘন্টা আবার কোথাও ১৩ ঘন্টা পর্যনত্ম এ বিপর্যয়ে ব্যাংক, বীমা, সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, জনগণের ঘরবাড়ী, গৃহস্থলির কাজকর্ম ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানায় ও হাসপাতালে চিকিত্‍সার ৰেত্রে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়৷ গোটা দেশে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার৷ বাংলাদেশের ইতিহাসে এ ধরনের নজিরবিহীন ঘটনা ইতিপূর্বে আর কখনো সংঘটিত হয়নি৷সরকার কুইকরেন্টাল বিদু্যত্‍ ও নতুন নতুন বিদু্যত্‍ উত্‍পাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিদু্যতের উত্‍পাদন বৃদ্ধির কথা বলে জনগণের কাছে নিজেদের কৃতিত্বের কথা ব্যক্ত করে এবং এর মাধ্যমে নিজেদের দলীয় লোকদের শত শত কোটি টাকা আত্মসাত করার ব্যবস্থা করে প্রকৃতপৰে বিদু্যত্‍ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার কিছুই করতে পারেনি, গতকালের এ ভয়াবহ বিদু্যত্‍ বিপর্যয়ের মাধ্যমে তা জাতির সামনে স্পষ্ট হয়েছে৷

এই বিপর্যয়কর ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে জনসর্মথনহীন এ সরকারের জনগণের ও দেশের প্রতি কোন দায়িত্ববোধ নেই৷ দেশব্যাপী বিদু্যত্‍ বিপর্যয়ের ফলে সীমাহীন জনদূর্ভোগ ও সৃষ্ট বিপর্য়য়ের প্রকৃত রহস্য ও কারণ জনগণ জানতে চায়৷ এর মূল কারণ ধাঁমাচাপা দিয়ে কোন ধরনের গোজামিলের আশ্রয় জনগণ মানবে না৷ তাই জাতিকে বিদু্যত্‍ বিপর্যয়ের রহস্য ও প্রকৃত কারণ অবিলম্বে জানানোর জন্য আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি৷ যে সরকার জনগণের সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েমের পথ পাকাপোক্ত করতে চায় সেই সরকারের আর এক মুহূর্তও ৰমতায় থাকার কোন অধিকার নেই৷এই ব্যর্থ সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে সোচ্চার হওয়ার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান ৷