দৈনিকবার্তা-নাটোর,৩১অক্টোবর: শনিবার দুপুরে নাটোরে ২০ দলীয় জোটের সমাবেশে বেগম খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষন দিবেন৷ তিনিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাদের স্বাগত জানাতে বর্ণিল সাজে সেজেছে পুরো নাটোর জেলা৷ শুক্রবার দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু ও স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক মন্ত্রী এম রম্নহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু জেলার অন্য নেতাদের সাথে নিয়ে জনসমাবেশস্থল নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারী কলেজ মাঠ ও মঞ্চ পরিদর্শন করেন৷
পরিদর্শন শেষে জনসমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে সনত্মোষ প্রকাশ করেন যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু৷ এর আগে সকাল ১১টার দিকে নাটোর জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে জনসভার প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলণ করেন৷ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক মন্ত্রী এম রম্নহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও সাধারন সম্পাদক আমিনুল হক বক্তব্য রাখেন৷ সংবাদ সম্মেলনে জনসভার সকল প্রস্তুতি শেষ এবং জনসভায় কয়েক লাখ লোকের সমাগম হবে, এই জনসভা শুধু জনসুমদ্র নয়, স্মারনকালের সবচাইতে বড় সমাবেশ হবে বলে তারা আশা করছেন বলে জানান৷
খালেদা জিয়ার শনিবারের জনসভা উপলৰ্যে জেলার বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের টোলপস্নাজা থেকে শুরম্ন করে রাজশাহীর ঝলমলিয়া এবং বগুড়ার নন্দীগ্রাম ও পাবনা দাশুড়িয়া পর্যনত্ম দীর্ঘ মহাসড়ক এবং জেলার অভ্যনত্মরিন সকল সড়কে নিমর্াণ করা হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক তোরন৷ রাসত্মার পাশে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও রম্নহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর ছবি সম্বলিত শত শত ডিজিটাল বোর্ডে ঢেকে ফেলা হয়েছে৷ গুরম্নতপূর্ণ সকল বাজারঘাট ও মোড়ে মোড়ে তোরণ নির্মাণের পাশাপাশি লাগানো হয়েছে ডিজিটাল বোর্ড৷ করা হয়েছে আলোকসজ্জা৷
বিএনপি চেয়ারপার্সন ও ২০দলীয় জোটের সকল শীর্ষ নেতাদেরকে স্বাগত জানাতে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয় আলাইপুর থেকে জনসমাবেশস্থল সিরাজ উদ-দৌলা সরকারী কলেজ মাঠ পর্যনত্ম মহাসড়কের দুই পাশে রঙ্গীন বাতি, রঙ্গীন কাপড়, জাতীয় ও দলীয় পতাকা ছাড়াও লাল সবুজসহ নানা রংয়ের পতাকায় এবং ডিজিটাল ব্যানার ছবি আর তোরণে বর্ণিল ভাবে সাজানো হয়েছে৷ সন্ধ্যা হলেই জ্বলে উঠছে নানা রংয়ের মনোমুগ্ধকর আলোকসজ্জা৷ ব্যসত্ম শহরের নানা বয়সী নারী পুরম্নষ ও শিশুরা রাতে এ সব নানা রংয়ের মনোমুগ্ধকর আলোকসজ্জা দেখতে ভিড় করছে৷ শহর ছাড়াও বড় হরিশপুর বাইপাস মোড়ে একই ধরনের আলোকসজ্জা দেখতে ভিড় করছে মানুষ৷ শহরের সব মানুষ যেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ও ২০দলীয় জোট নেতাদের বক্তব্য শুনতে পারেন এ জন্য ইতোমধ্যেই ঢাকার একটি অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠান থেকে দুইশতাধিক মাইক এনে শহর জুড়ে লাগানো হয়েছে৷ তৈরী করা হয়েছে ৬০ ফিট প্রস্থ ও ৪০ ফিট দৈর্ঘের সুবিশাল মঞ্চ৷
এই মঞ্চে এক সাথে তিন শতজন নেতাকমর্ী বসার ব্যবস্থা রয়েছে৷ জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, জনসমাবেশকে আকর্ষনীয় করতে সমাবেশে বিএনপির সকল অঙ্গ সংগঠনের কমর্ী সমর্থকরা মাঠে আলাদা রংয়ের পোষাক পরে আলাদা ভাবেই অবস্থান করবেন৷ এর মধ্যে ছাত্রদল লাল গেঞ্জি, যুবদল সবুজ গেঞ্জি, স্বেচ্ছাসেবক দল হলুদ গেঞ্জি, ওলামা দল সাদা পায়জামা পাঞ্জাবী ও টুপি, কৃষকদল মাথায় মাথাল, তাঁতীদল ঘাড়ে গামছা ও মত্স্যজীবী দল ধুতি গেঞ্জি পড়ে এবং মাছ ধরার সামগ্রী হাতে নিয়ে মাঠে অবস্থান করবে৷ ২০ দলীয় জোটের অন্যতম প্রধান শরিকদল জামায়াতে ইসলামীর কমর্ী সমর্থকদের জন্য মাঠের পশ্চিমপাশে জায়গা রেখে মাঠের অন্য সব অংশ বিএনপির সকল অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়েছে৷ প্রতিটি ভাগে যার যার রংয়ের পোষাক পড়ে হাতে রঙ্গীন বেলুন নিয়ে হাজার হাজার কমর্ী সমর্থক অবস্থান নিবে এবং খালেদা জিয়া মাঠে আগমনের পর এক সাথে পুরো মাঠে লাখ লাখ কমর্ী সমর্থক এ সব গ্যাস ভরা বেলুন আকাশে উড়িয়ে দিবে৷ খালেদা জিয়া সড়ক পথে দুপুরের মধ্যেই নাটোরে আসবেন বলে জানা গেছে৷ জনসমাবেশের সভাপতি নাটোর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী এম রম্নহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, সমাবেশ দুপুরে আহবান করা হলেও সকাল ১০টার মধ্যেই নাটোর সিরাজ উদ-দৌলা সরকারী কলেজ মাঠ ও আশে পাশের রাসত্মাঘাট মানুষে ভরে যাবে৷ দুপুরের আগ পর্যনত্ম কন্ঠশিল্পী মুনির খান, কনকচাঁপা ও রিজিয়া পারভীন সঙ্গীত পরিবেশন করবেন৷ যোহরের নামাজের সাথে সাথেই সমাবেশ শুরম্ন হবে৷ বিকেল তিনটার মধ্যেই বিএনপি চেয়ারপার্সন জনসভা মঞ্চে আসবেন৷ তিনি বলেন, কোন বিদেশী মেহমানকে যে ভাবে রাষ্টীয় ভাবে সম্মান প্রদান করা হয় তেমনী স্মরনকালের সবচাইতে জাকজমকপূর্ণ ভাবে নাটোর শহরকে সাজানো হয়েছে৷
এর আগে কোন শীর্ষ নেতা বা প্রধানমন্ত্রীকে এতটা জাকজমকপূর্ণ ভাবে স্বাগত জানানোর নজির নাটোরে নেই৷ ২০দলীয় জোট সূত্রে জানা গেছে, প্রধান অতিথি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যের আগে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর্জা আব্বাস, নজরম্নল ইসলাম খান, জামায়াতের নায়েবে আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, বিজিপির ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, জাগপা চেয়ারম্যান শফিউল আলম প্রধান, কল্যাণ পাটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) ইব্রাহিম বীরপ্রতিক, এলডিপির কর্নেল অলি আহম্মেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের আব্দুল লতিফ নেজামী, খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মোঃ ইসহাক, জাতীয়পাটি (জাফর) মোসত্মফা জামাল হায়দার, এনডিপির খন্দকার গোলাম মতুর্জা, এনপিপির ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পাটির মোসত্মফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপের জেবেল রহমান গণি ও সাম্যবাদী দলের সাইদ আহমেদসহ ২০ দলের জাতীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখবেন৷