দৈনিকবার্তা-ঢাকা,৩১অক্টোবর: মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের নেতা মীর কাসেম আলীকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে শুক্রবার দুপুরে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের স্থানান্তও করা হয়েছে৷আগামী রোববার এ মামলার রায়ের দিন ধার্য রয়েছে৷কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর সিনিয়র জেল সুপার মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, রায়ের সময়আদালতে উপস্থিত করার জন্য দুপুরে মীর কাসেমকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়৷ চলতি বছরের ১ এপ্রিল তাঁকে কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছিল৷
শুক্রবার ১২টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়৷ মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মীর কাসেমের মামলার শুনানি শেষে রোববার রায় ঘোষণার দিন রেখেছেন আনর্্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনাল-২৷ এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধে বুধবার আলবদর প্রধান ও জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মতিউর রহমান নিজামীর মৃতু্যদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করে আনর্্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনাল-১৷
এ রায়ের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার প্রথম দফা ২৪ ঘন্টা এবং রোববার ও সোমবার আরও ৪৮ ঘন্টার হরতাল ডাকে জামায়াতে ইসলামী৷সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির বলেন, রায়ের সময় আদালতে আসামির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক বলে তাকে আগে ভাগেই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে৷আলবদর বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে মীর কাসেম আলী স্বাধীনতাবিরোধী মূল ধারার সঙ্গে একাত্ম হয়ে, বিশেষ করে চট্ট্রাম অঞ্চলে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেন বলে অভিযোগ রয়েছে৷
একাত্তরে আলবদর বাহিনীর অন্যতম অধিনায়ক, চট্টগ্রাম গণহত্যার নায়ক এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মীর কাসেম৷ গ্রেপ্তারের আগে তিনি জামায়াতের নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন৷এই জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে আনা ১৪টি অভিযোগের মধ্যে দুটি ছাড়া সব অভিযোগেই অপহরণ করে নির্যাতনের বর্ণনা রয়েছে৷ওই দুটি অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তর সালের ২৮ নভেম্বর ছয়জনকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা হয় মীর কাসেমের নির্দেশে৷ অপর অভিযোগে মীর কাসেমের নির্দেশে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ তিনজনকে অপহরণ করে নির্যাতন এবং শেষে দুইজনকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলার কথা বলা হয়েছে৷
বাকি অভিযোগগুলোতে ওমর-উল ইসলাম চৌধুরী, লুত্ফর রহমান ফারুক, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সাইফুদ্দিন খান, আব্দুল জব্বার মেম্বার, হারুন অর-রশিদ খান, মো. সানাউল্লাহ চৌধুরী, নুরুল কুদ্দুস, সৈয়দ মো. এমরান, জাকারিয়া, সুনীল কান্তি বর্ধন ও নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে অপহরণ করে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে৷মীর কাসেমের বিরুদ্ধে মামলার রায় হবে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার ১১তম রায়৷ আগের ১০টির মধ্যে ট্রাইবু্যনাল-১ চারটি ও ট্রাইবু্যনাল-২ ছয়টি মামলার রায় দিয়েছেন৷২০১২ সালের ১৭ জুন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মীর কাসেমকে গ্রেপ্তার করে৷
গত বছরের ১৬ মে রাষ্ট্রপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে৷ ৫ সেপ্টেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল-১৷ পরে মামলাটি ট্রাইবু্যনাল-২-এ স্থানান্তর করা হয়৷ রাষ্ট্রপক্ষে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ২৪ জন ও আসামিপক্ষে তিনজন সাক্ষ্য দেন৷ ২৩ এপ্রিল সাক্ষ্য ঘ্যহণ শেষ হয়৷ ৪ মে দুই পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়৷