Fakrul

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২৯অক্টোবর: ক্ষমতার দম্ভে বাংলাদেশের সমস্ত মানুষকে আওয়ামী লীগ জিম্মি করেছে বলে মন্তব্যকরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ভাষা শহীদ আবদুল মতিন স্মরণে ভাসানী সংসদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন৷ভাসানী স্মৃতি সংসদের সভাপতি জিয়াউল হকের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সামসুজ্জামান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকতউল্লাহ, বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ বক্তব্য দেন৷

ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র ও সংবিধানের দোহাই দিয়ে বিনা ভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে চায় যা এদেশের জনগণ অতীতেও মেনে নেয়নি এখনো মেনে নেবে না৷ফখরুল আরও বলেন, আওয়ামী লীগ কেবল একজনকে ছাড়া আর কাউকে সম্মান করতে শেখেনি৷

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে৷ জাতি এই মুহূর্তে অস্তিত্ব সংকটে আছে৷ সংকট উত্তরণ এবং জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে বিএনপি আন্দোলন করছে৷মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও কার্যত গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না৷ তারা গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় শাসন দীর্ঘস্থায়ী করতে চায়৷ তারা ক্ষমতার দম্ভে সবাইকে জিম্মি করে রেখেছে৷ কিন্তু মানুষ এ অবস্থা মেনে নেবে না৷ তিনি এ সরকারের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান৷ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আবারও নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেছেন, দেশ ও জাতি এখন সংকটের মধ্যে রয়েছে৷ এই সংকট উত্তরণ এবং জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে বিএনপি আন্দোলন করছে৷ তাই দাবি আদায়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারের বিরম্নদ্ধে রাজপথে নামতে হবে৷

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ব্যর্থ হয়নি৷ কারণ ওই নির্বাচনে বিএনপির আহ্বানে সাড়া দিয়ে জনগণ ভোটকেন্দ্রে যায়নি৷ আমরা ও আমাদের জোট গণতন্ত্র পূনরুদ্ধারের সেই আন্দোলন এখনও অব্যাহত রেখেছে৷ তাই এই সরকারকে হটাতে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে শরিক হতে হবে৷বিএনপির মুখপাত্র বলেন, দেশের অবস্থা এখন ভাল নয়৷ আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও কার্যত গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনা৷ তারা দেশে একদলীয় শাসন দীর্ঘস্থায়ী করতে চায়৷ কিন্তু মানুষ এ অবস্থা বেশি দিন মেনে নেবে না৷ভাষাুমতিন আর নেই ভাষা মতিনকে রাষ্ট্রীয় সম্মান না জানানোর সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ একজন ছাড়া কাউকে চেনে না, সম্মানও দেয় না৷ তাদের কাছ থেকে সম্মান আশা করা যায় না৷ ভাষা সৈনিক আবদুল মতিনকে রাষ্ট্রীয়ং সম্মান না জানালেও জনগণ তাঁকে সম্মান জানিয়েছে৷

ভাষা মতিনের স্ত্রী গুলবদন নেসা মনিকা বলেন, ভাষা মতিনের রাষ্ট্রীয় মর্যাদার প্রয়োজন নেই৷ দেশের আপামর জনগণ, রাজনৈতিক দল তাঁকে যেভাবে স্মরণ করেছে, সম্মান জানিয়েছে তাই যথেষ্ট৷মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর রায় নিয়ে বিএনপির মূল্যায়ন জানতে সাংবাদিকরা অপেক্ষা করলেও তাদের এড়িয়ে যান দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷ তবে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান আদালতের এই রায়কে শ্রদ্ধার সঙ্গে মেনে নেয়া উচিত বলে মনে করেন৷

বুধবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীকে মৃতু্যদণ্ড দেন৷এর আগে জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে ট্রাইবু্যনালের রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়নি বিএনপি৷নিজামীর রায় ঘোষণার পর জাতীয় প্রেস ক্লাবে একটি আলোচনা সভা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকরা সেমিনার কক্ষের বাইরে মির্জা ফখরুলের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য অপেক্ষা করেন৷ কিন্তু তিনি কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে চলে যান৷

এর আগে অনুষ্ঠানে বক্তব্যের আগে সাংবাদিকদের পক্ষ রায় নিয়ে দলের মূল্যায়ন জানতে চিরকুট পাঠালেও তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান৷ লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান রায় নিয়ে বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে একটি অনেকগুলো অভিযোগে বিচার চলছে৷ সবশেষ আদালত রায় দিয়েছে৷ আমি মনে করি শ্রদ্ধার সঙ্গে এ রায় মেনে নেয়া উচিত৷ট্রাইবু্যনাল নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের প্রশ্ন ছিল, তাই রায়ে বিএনপির মূল্যায়ন কী- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদালতের রায়ের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করার অবকাশ নেই৷

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদুর কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, দলের বক্তব্য নয়, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সরকার ভিন্নমত দমনে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছে৷ এটা তারই অংশ৷আর দলটির দফতরের দায়িত্বে থাকা যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিএনপি অতীতে এইসব বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি৷ এবারও দেবে না৷ যারা দিয়েছে সেটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়৷সবশেষ জামায়াতের গুরু হিসেবে পরিচিত গোলাম আযমের মৃতু্য নিয়েও নীরব ছিলো বিএনপি৷ বিতর্ক এড়াতে তারা গোলাম আযমের জানাজায়ও অংশ নেয়নি৷