Sonali-Bank

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২৮অক্টোবর: অর্ধশতাধিক চেক খোয়া যাওয়ার ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের লালমাটিয়া শাখার এক কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্তের পাশাপাশি চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ৷সোনালী ব্যাংকের রমনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ মহা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান মঙ্গলবার জানান, গত রোববার দুপুরে ব্যাংকের ক্লিয়ারিং সেকশনের ড্রয়ার থেকে চেক চুরির ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে লালমাটিয়া শাখার সিনিয়ার অফিসার ফরিদা বেগমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে৷

এছাড়া রমনা প্রিন্সিপাল অফিসের এজিএম মুশফিকুর রহমানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, যার সদস্যরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট শাখায় গিয়ে কাজ শুরু করেছেন বলে কামরুজ্জামান জানান৷ চেক চুরির ঘটনায় রাষ্ট্রায়ত্ত সর্ববৃহত্‍ এই বাণিজ্যিক ব্যাংকের তরফ থেকে সোমবার মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়৷ ব্যাংকের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও পুলিশকে দেওয়া হয়৷

এরপর পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে বলে মোহাম্মাদপুর থানার ওসি আজিজুল হক জানান৷ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এসব চেক অন্য ব্যাংক বা সোনালী ব্যাংকেরই অন্য শাখা থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য জমা দিয়েছিলেন৷ সব মিলিয়ে এসব চেকের টাকার অঙ্ক হবে কোটি টাকার মতো৷ শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম খান অবশ্য দাবি করেছেন, চেকগুলোতে সর্বোচ্চ ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার হতে পারে৷ তবে শাখার কাছে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট হিসেব নেই বলেও তিনি স্বীকার করেন৷

ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হারানো চেকগুলোর মধ্যে কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বেতনের চেকও রয়েছে৷ এসব পট্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বেতন হয় ওই শাখার একাউন্টে৷ ২৬ অক্টোবর সরকারি অফিস থেকে বেতনের চেক এসেছে৷ কিন্তু তা হারিয়ে যাওয়ায় ডুপ্লিকেট না পাওয়া পর্যন্ত ওইসব প্রতিষ্ঠানের বেতন জমা হচ্ছে না৷এছাড়া পাটকল কর্পোরেশনের টেন্ডারে অংশ নেওয়া ঠিকাদারদের পে-অর্ডারও এর মধ্যে ছিল বলে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান৷ মো. কামরুজ্জামান সোমবার বলেন, ৫০থেকে ৫৫টি চেক হারানো গেছে৷ এর মধ্যে ৪০টি চেকের ইরফরমেশন আছে৷ বাকিগুলো লেজারে তোলার আগেই চুরি গেছে৷

এদিকে ব্যংক কর্তৃপক্ষ সাধারণ ডায়েরি করার আগেই হারানো চেক ভাঙিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়৷ রোববার চুরি যাওয়ার পরপরই রাজধানীর গুলশানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের লালমাটিয়া শাখায় হারিয়ে যাওয়া একটি চেক জমা দিয়ে টাকা তোলার চেষ্টা হয় বলে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান৷এর আগে ফ্যানফোল্ড ভাউচার জালিয়াতি করে সোনালী ব্যাংকের ঢাকার মিরপুর শাখা থেকে ১৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র, যা আর ব্যাংক উদ্ধার করতে পারেনি৷

সমপ্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ধরা পড়ে, সোনালী ব্যাংকের শিল্প মন্ত্রণালয় শাখার জাহিদুল ইসলাম নামে এক কর্মকর্তা ভুয়া হিসাব খুলে বিভিন্ন গ্রাহকের একাউন্ট থেকে ও ব্যাংকের হিসাব থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে৷এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের চিঠি দিয়ে এ ধরনের কর্মকর্তাদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল৷এছাড়া হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারি এবং বিভিন্ন স্থঅনে সুড়ঙ্গ কেটে টাকা চুরির ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের অনিয়ম ও নিরাপত্তার ত্রুটির বিষয়টি গত দুই বছর ধরে বার বার আলোচনায় এসেছে৷