দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২৬অক্টোবর: যুবদলের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ ছয়জনকে মোহাম্মদপুর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ৷ রোববার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো.আসাদুজ্জামান নূরের আদালতে মোহাম্মদপুর থানার এসআই মো. নয়ন মিয়া আসামিদেরকে আদালতে পাঠিয়ে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন৷শুনানি শেষে মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূর ছয়জনকে তিন দিন করে হেফাজতে নেওয়ার অনুমতি দেন৷মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর নামে আরেকজন অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে কারাগারে পাঠনোর নির্দেশ দেন বিচারক৷ আলালের সঙ্গে গ্রেপ্তার আরো ৫৭ জনকে এদিন কারাগারে পাঠানো হয়৷রিমান্ডে পাঠানো বাকি পাঁচজন হলেন- যুবদলের কেন্দ্রীয় কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার, কেন্দ্রীয় সমিটির সদস্য সাইদুর রহমান এবং ওয়ার্ড নেতা আবুল কালাম আজাদ, কামরুল ইসলাম ও রুবেল হাওলাদার৷
শনিবার সকালে আলালের লালমাটিয়ার বাসা থেকে এই ৬৩ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ এরপর রাতে তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে এ মামলা করা হয়৷ মোহাম্মদপুর থানার ওসি আজিজুল হক বলেন, লালমাটিয়ার ওই বাসার আন্ডারগ্রাউন্ডে তারা বৈঠক করছিলেন৷ আমাদের কাছে খবর ছিল, রোববারের হরতালে নাশকতা সৃষ্টির জন্য ওই বৈঠকে পরিকল্পনা চলছে৷এমন খবরের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালাই৷নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনার অভিযোগে করা এই মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য আলালকে প্রধান আসামি করা হয়েছে৷
রিমান্ড প্রতিবেদনে মামলার তদন্তকারী অফিসার তার আবেদনে বলেন,উলি্লখিত আসামিরা সরকারের অনুমতি ছাড়া ২৬অক্টোবরে ইসলামি দলগুলোর ডাকা হরতাল ও বিএনপি চেয়ারপারসনের মামলার হাজিরা উপলেক্ষে ঢাকা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ককটেল বিস্ফোরণ, যানবাহনে অগি্নসংযোগ ও সরকারি স্থাপনা ধ্বংসের নিমিত্ত গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন মর্মে সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে৷এ ঘটনায় পালিয়ে যাওয়া ও সম্পৃক্ত অন্যান্য আসামিদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে ব্যবহারের জন্য আসামিদের হেফাজতে রক্ষিত ককটেল ও বিস্ফোরক দ্রব্যাদি উদ্ধারে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আবশ্যক৷ অপর ৫৬ আসামিকে জেল হাজতে রাখার আবেদন করেন৷ জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার নামে আরেক আসামির ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলেও তিনি অসুস্থ থাকায় তার রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি৷
অন্যদিকে মামলার অপর ৫৬ জন আসামির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন একই আদালত৷ কারাগারে পাঠানো ৫৬ আসামি হলেন, কল্পনা বেগম, মো. মনির, রিপন, মো.রুবেল, মো. লিটন, ইসমাইল হোসেন, হাফেজ শরীফ, সেলিম সরদার, তনু, নান্নু, দুলাল হোসেন, হান্নান মোল্লা, নয়ন, আল আমিন, রাজন, মোস্তফা, জাহাঙ্গীল আলম, কামাল, আবদুল মুন্নাফ, মো. মোস্তফা, ইউসুফ, মনির, ইকবাল হোসেন মীর, শাহ আলম, শাহীন, নাছির, লিটন, পারভেজ, মোতালেব, সাফিজল, আমির হোসেন, আলা উদ্দিন, নীরব, মো.ইউসুফ, ইমন, সুমন, রাসেল, নোয়াব আলী, মিরাজ, স্বপন, মো. আলাউদ্দিন, লিটন, মালেক,মো. মিজান, করম আলী, মনুরুল ইসলাম, মো. সুজন, রাশেদ, নুর নবী, ফকির চান, ইউসুফ আলী, আবুল হোসেন, ফজলুল হক, নুর আলম, মাহমুদ ও মো. রিপন৷
এর আগে গোপন বৈঠকে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়ার নিজ অ্যাপার্টমেন্ট থেকে আলালসহ সংগঠনের ৬৩ নেতাকর্মী গ্রেফতার হন৷ ওই ঘটনায় মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ ৬৩ জনের বিরুদ্ধে শনিবারই মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ শিকদার বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে এ মামলা করেন৷