জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৫ এর প্রাথমিক খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২৬অক্টোবর: জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্পখাতের অবদান আরো ১২ শতাংশ বাড়িয়ে শতকরা ৪০ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্যে জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৫’র প্রাথমিক খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে৷ বর্তমানে জাতীয় অর্থনীতিতে এ খাতের অবদান হচ্ছে ২৮ শতাংশ ৷শিল্প মন্ত্রণালয়ের গঠিত তিনটি উপকমিটির প্রতিবেদন সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৫-এর প্রাথমিক খসড়া প্রণয়ন করা হয়৷ শিল্প-উদ্যোক্তাসহ এ খাতে স্বার্থসংশ্লিষ্ট সকল মহলের সাথে আলোচনা করে খুব শিগগিরই শিল্পনীতি-২০১৫ চূড়ানত্ম করা হবে৷

রোববার শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় শিল্প উন্নয়ন পরিষদের নির্বাহী কমিটির (ইসিএনসিআইডি) এক সভায় এ কথা জানানো হয়৷শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এ সভায় সভাপতিত্ব করেন৷ এটি ছিল এই কমিটির ২য় বৈঠক৷

দেশের শিল্পখাতের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে সারা দেশে পরিকল্পিত শিল্পায়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে গঠিত জাতীয় শিল্প উন্নয়ন পরিষদের (এনসিআইডি) সভায় গৃহিত সিদ্ধানত্মসমুহের বাসত্মবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য এ সভা আহবান করা হয়৷এ সভায় শিল্পমন্ত্রী ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এ খাতের টেকসই উন্নয়নের মধ্যদিয়ে দেশের শিল্পখাতকে এগিয়ে নিতে হবে৷ তাহলেই ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যমআয়ের ও ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন৷আমির হোসেন আমু এসএমই খাতের কার্যকর প্রসারে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে এসএমই ফাউন্ডেশনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন৷

তিনি বলেন অল্প জমিতে পরিকল্পিতভাবে শিল্প কারখানা গড়ে তুলে উত্‍পাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখার জন্য অর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আনত্মরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে৷শিল্পসচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্, কৃষিসচিব ড. এস.এম. নাজমুল ইসলাম, তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব শ্যামসুন্দর সিকদারসহ শিল্প, বস্ত্র ও পাট, মত্‍স ও প্রাণিসম্পদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন, পরিবেশ ও বন, ভূমি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বিদু্যত্‍, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, বিসিক, বিনিয়োগ বোর্ড, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, এসএমই ফাউন্ডেশন, পরিকল্পনা কমিশন, এমসিসিআই ও চট্টগ্রাম চেম্বারসহ শিল্প-স্বার্থসংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ এ সভায় উপস্থিত ছিলেন৷

সভায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশন প্রণীত কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়৷ এসময় জানানো হয়, আগামী তিন বছরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১শ’টি এসএমই শিল্প ক্লাস্টার গড়ে তোলা হবে এবং এ সব ক্লাস্টারকে এসএমই ঋণ সহায়তার আওতায় আনা হবে৷রপ্তানি দক্ষতা বাড়াতে ১শ’ জন এসএমই উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলেও সভায় জানানো হয়৷শিল্প স্থাপনে যৌক্তিকভাবে জমির ব্যবহারের বিষয়েও এ সভায় গুরুত্ব দেয়া হয়৷

শিল্প-কারখানা স্থাপনে জমি নির্ধারণের জন্য শিল্প, ভূমি, কৃষি, বন ও পরিবেশ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি আনত্মঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠনের ব্যাপারেও এ সভায় সিদ্ধানত্ম গৃহিত হয়৷ একই সাথে ভূমি মন্ত্রণালয় পক্ষ থেকে ২১টি জেলায় সম্পন্ন করা ল্যান্ড জোনিং রিপোর্ট’র আলোকে এসব জেলায় শিল্পায়নের ব্যাপক পরিকল্পনা নেয়া হবে বলে সভায় জানানো হয়৷

এ ছাড়াও দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতে এসএমই ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম মূল্যায়নের জন্য আইএমইডি’র নেতৃত্বে একটি রিভিউ কমিটি গঠনের সিদ্ধানত্মনেয়া হয়৷এ কমিটি এসএমই ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম মূল্যায়নের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকসহ এসএমইখাতের উন্নয়নে কর্মরত সকল প্রতিষ্ঠানের কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধনের বিষয়ে সুপারিশ পেশ করবে বলে জানানো হয়৷