Chart-1দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২৬অক্টোবর: বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বৈদেশিক ঋণ সহায়তার ভূমিকা কমে এসছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত৷রোববার এ সংক্রান্ত একটি অনলাইন তথ্যবার্তা উদ্বোধন শেষে তিনি একথা বলেন৷রোববার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য বাতায়নের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন৷মুহিত বলেন, ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশের জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ যেখানে ১২% ছিল তা বর্তমানে কমে ১.৮% হয়েছে৷

বর্তমানে এক হাজার ৯০০ কোটি টাকার বৈদেশিক ঋণ অলস পড়ে আছে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী বলেন, ঋণসহায়তা তথ্যবার্তা বাতায়ন চালুর ফলে তথ্য রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অনেক ঋণ বিষয়ক তথ্য রক্ষণাবেক্ষণ সহজ হবে৷ বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার মাধ্যমে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ বিদেশি সহায়তা পায় বাংলাদেশ৷ এ অর্থ কোন কোন খাতে খরচ হয় তা এখন জানা যাবে অনলাইনে৷ এ জন্য বাংলাদেশ এইড ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ বা বাংলাদেশ এইমস’ নামে একটি ওয়েব পোর্টাল বা তথ্য বাতায়ন খুলেছে সরকার৷এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যনত্ম অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি বেশ ভালো৷ তবে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হতে হলে ৯ শতাংশের বেশি হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে৷ এ জন্য বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি বিদেশি সহায়তার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে৷

বৈদেশিক সহায়তার ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমেছে উলেস্নখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৭ সালে যেখানে জিডিপির ১২ শতাংশ বৈদেশিক সহায়তা ছিল, এখন সেটি জিডিপির ১ দশমিক ৮ শতাংশে নেমেছে৷ এর পাশাপাশি বৈদেশিক সহায়তার ব্যবহারের সক্ষমতাও বেড়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন৷অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, ইআরডি সচিব মেজবাহউদ্দিন আহমেদ ও ইউএসএইডের বাংলাদেশ প্রধান জানিনা জারুজেলস্কি বক্তব্য দেন৷

বাংলাদেশ এইমস হচ্ছে এমন একটি ওয়েবভিত্তিক সফটওয়্যার, যার মাধ্যমে বিদেশ থেকে আসা উন্নয়ন তহবিল-সম্পর্কিত সব ধরনের তথ্য ও উপাত্ত পাওয়া যাবে৷ দেশের যেকোনো নাগরিক, দাতা দেশ ও সংস্থা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এই ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহার করতে পারবেন৷ এ তথ্যভান্ডারটি সবার জন্য উন্মুক্ত৷এইমসে তথ্য সরবরাহের জন্য বাংলাদেশে কার্যরত সব দাতা দেশ ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাকে এই ওয়েবসাইটে নিবন্ধন নিতে হবে৷ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যংাক (এডিবি),জাইকা, ইউএসএইডসহ ১৭টি দাতা সংস্থা রেজিসেনট্রশন করে তথ্য সরবরাহের কাজ শুরু করেছে৷ অনুষ্ঠানে ড. মশিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশ হচেছ খুবই স্বল্পসংখ্যক দেশগুলোর একটি যারা নিজেরাই তাদের দেশীয় লোকবলের মাধ্যমে এই এইমস সফটওয়্যারটি তৈরি করতে পেরেছে৷ সফটওয়ারটি খুবই সুলভ, টেকসই ও সহজে সংস্কারযোগ্য বলে তিনি উল্লেখ করেন৷অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, বিভিন্ন মন্ত্রনালয়, সংস্থা এবং নাগরিক সমাজের মতামত নিয়ে সফটওয়্যারটি তৈরি করা হয়েছে৷

দাতা সংস্থাগুলোর পক্ষে অনুষ্ঠানে ইউএসএইডের বাংলাদেশ প্রধান জানিনা জারম্নজেলস্কি বলেন, আমরা আশা করি বিদেশি সহায়তার কার্যকর ব্যবহার এবং স্বচছতা বাড়াতে এটি কার্যকর ভ’মিকা রাখবে৷অনুষ্ঠানে জানানো হয়,বৈদেশিক সাহায্যের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিতে সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এই তথ্য বাতায়ন তৈরি করা হয়েছে৷ প্রকল্পটির বাসত্মবায়ন সময় ধরা হয়েছে সেপ্টেম্বর ২০১১ থেকে জুন ২০১৬ পর্যনত্ম৷ এ প্রকল্পের ব্যয় ৪৪ লাখ ৭৫ হাজার ডলার৷ এই প্রকল্পে সরকার ছাড়া ইউএনডিপি, ডিএফআইডি, অস্ট্রেলিয়ান এইড ও ড্যানিডা অর্থ সহায়তা দিচ্ছে৷অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন৷