গয়েশ্বর

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২৪অক্টোবর: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এই সরকারের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের কোন সমর্থন নেই৷ তাই বিদেশি সমর্থনের সার্টিফিকেটের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ৷ তিনি বলেন, দেশের জনগণ ভোট দিতে চায়৷ খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক সরকার দেখেতে চায় তারেক রহমানের তরুণ নেতৃত্বে দেখতে চায় কিন্তু এ অবৈধ সরকার একনায়কতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা আকড়ে ধরে টিকে থাকতে চাচ্ছে৷শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরীর প্রথম মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত এক স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন৷

গয়েশ্বর বলেন, এই সরকারের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের কোন সমর্থন নেই৷ তাই বিদেশি সমর্থনের সার্টিফিকেটের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন৷ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ২০১৪ সালের মধ্যেই নির্বাচনের সূর্য দেখতে পাবে দেশবাসী৷তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যতই বলুক ২০১৯ সালের আগে নির্বাচন হবে না তা কখনোই বাস্তবায়ন হবে না৷

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কাছে জনগণের কিছু চাওয়ার নেই৷ নর্দমার নিকৃষ্ট ময়লার চেয়েও এই সরকারকে বেশি ঘৃণা করে এ দেশের মানুষ৷ এই অবৈধ সরকারের মুখোশ জনগণের কাছে উন্মোচিত হয়েছে৷ তাই সরকার এখন আতঙ্কে রয়েছে৷গয়েশ্বর বলেন, দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই৷ একটি মানুষ জন্ম থেকে মৃতু্য পর্যন্ত দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী যে সকল সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা সরকার তা না করে জনগণের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে৷ সরকার জনগণের ভোটকে ভয় পায় বলেই ৫ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত অবৈধ সরকার ও অবৈধ সংসদ অবৈধ আইন করে টিকে আছে৷তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ নিজের ছায়া দেখে নিজেরাই ভয় পায়৷ তারা যে অত্যাচার, গুম, হত্যা চালিয়েছে তা বিচার আমাদের করতে হবে না৷ বিচারপতিদের ধমক দিতে হবে না, পুলিশকে নির্দেশ দিতে হবে না৷ এরাই তাদের (আ.লীগের) বিচার করবে৷ এই ভয়ে অনেক নেতারা দেশ থেকে পালানোর জন্য জন্য ভিসা নিয়েছেন৷

বিএনপির এই নেতা বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পূর্বের আন্দোলন ছিল অস্ত্র বিহীন৷ তারপরও গ্রাম পর্যায়ে যে আন্দোলন হয়েছে, তাতে কি বোঝা যায় না, বিএনপি আন্দোলন করতে পারে কি পারে না৷

গয়েশ্বর বলেন, দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই, একটি মানুষ জন্ম থেকে মৃতু্য পর্যন্ত দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী যেসব সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা সরকার তা না করে জনগণের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে৷ সরকার জনগণের ভোটকে ভয় পায় বলেই ৫ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করে অবৈধ সংসদ ও অবৈধ আইন করে টিকে আছে৷ আর এই জন্য প্রধানমন্ত্রীর সার্টিফিকেট দরকার৷ যার জন্যই হাসিনা বিদেশে গিয়ে বেশি কথা বলেন৷তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিজের ছায়া দেখে নিজেরাই ভয় পায়৷ তারা যে অত্যাচার গুম হত্যা চালিয়েছে তা বিচার আমাদের করতে হবে না৷ তার জন্য বিচারপতিদের ধমক দিতে হবে না, পুলিশকে নির্দেশ দিতে হবে না৷

গয়েশ্বর বলেন, ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল সশ্রস্ত্র৷ কিন্তু ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পূর্বের আন্দোলন ছিল অস্ত্রবিহীন৷ তারপরও যে আন্দোলন হয়েছে, তাতে কি বোঝা যায় না, বিএনপি আন্দোলন করতে পারে কি পারে না৷সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ইসলামী সমমনা দলগুলোর ডাকা রোববারের হরতালে সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি৷ দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় হরতালে সমর্থন জানিয়ে বলেন,’রাষ্ট্রীয় ধর্মের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে রাষ্ট্রেরই মামলা করা উচিত্‍৷ কিন্তু রাষ্ট্র না করায় সাধারণ জনগণ মামলা করছে এবং বিচারের দাবিতে ইসলামিক দলসমূহ যে হরতাল ডেকেছে তা অবশ্যই যৌক্তিক৷

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের সমালোচনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা তার পৈশাচিক মনের বহিঃপ্রকাশ৷ তিনি যে ভাষায় কথা বলেন আর সংবাদিকরা যে ভাবে তার গুনকীর্তন করেন তাতে সংবাদ সম্মেলন নয় মনে হয় যেন হাসিনার সংবর্ধনা সভা৷ শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে গয়েশ্বর বলেন, আপনি যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন তাতে আপনার পোষা বাহিনী ছাড়া রাস্তায় নেমে দেখুন জনগণ কী জবাব দেয়৷ শেখ হাসিনাকে সফদার ডাক্তার আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, সফদার ডাক্তার যেমন খিদে পেলে পানি খায় চিবিয়ে৷ হাসিনা ও তেমনি ক্ষমতার ক্ষুধা পেলে মানুষের রক্ত খায় চিবিয়ে৷ যেমনি জনগণের ভোটের অধিকার খেয়ে ফেলেছে৷

তিনি আরো বলেন, বাংলার জনগণের সমর্থন না থাকায় সার্টিফিকেট পেতে তিনি (হাসিনা) বিদেশ সফর করছেন৷ মনে রাখবেন যেখানে দেশের জনগণের সমর্থন নাই সেখানে বিদেশি সার্টিফিকেটে পার পাবেন না৷ শেখ হাসিনাকে জঙ্গি আখ্যা দিয়ে বলেন, হাসিনার চাইতে বড় জঙ্গি পৃথিবীতে নাই৷ তার কথাবার্তা ও উগ্রআগ্রহ তার প্রমাণ করে৷ তিনি আমাদের দোষ দিয়ে নিজেই নাস্তিক আর জঙ্গিবাদদের লালন পালন করছেন৷এরা সরকার নয় দখলদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীর শ্রদ্ধার পবিত্র স্থান শহীদ মিনারকে এরা পৈত্রিক সম্পত্তি ভাবে৷ তাই দেশপ্রেমিক মানুষ সেখানে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছে৷

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের মৃতু্যতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান৷তিনি বলেন, ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে গোলাম আযমের অবদান অস্বীকার করার সুযোগ নেই৷ তবে পরবর্তী সময়ে (মুক্তিযুদ্ধে) তার কাজের আমরা সমালোচনা করতে পারি৷২০দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের মৃতু্যতে তার পরিবারের প্রতি এখনো কোনো সমবেদনা জানায়নি বিএনপি৷গয়েশ্বর বলেন, এ বিষয়ে দলের কি অবস্থান জানি না৷ তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে সমবেদনা প্রকাশ করছি৷স্মরণসভায় গয়েশ্বর বলেন, তার ( গোলাম আযম) সঙ্গে আমাদের অনেক বিষয়ে দ্বিমত রয়েছে৷ কিন্তু ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তার ভূমিকাকে যদি আমরা স্বীকার না করি তাহলে ইতিহাসকে অস্বীকার করা হবে৷

স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লার সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বিএপির প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবেদিন, জিয়া আর্দশ ফোরামের সভাপতি কারি মো: রফিকুল ইসলাম যুক্তরাস্ট্র বিএনপির সমন্বয়ক মাওলানা সোরায়েব, ব্যারিষ্টার পারভেজ প্রমুখ৷