Mirja Abbas

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২১অক্টোবর: নবগঠিত কমিটিতে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তাদের আরো আলোচনা চলবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস৷মঙ্গলবার বিকেলে নিজ বাসায় পদবঞ্চিত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন৷নতুন কমিটি গঠনের পর ছাত্রদলে কোন্দল মেটাতে বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস বৈঠক করলেও তাতে কোনও সিদ্ধান্ত আসেনি৷

গত ১৪ অক্টোবর খালেদা জিয়া ছাত্রদলের নতুন কমিটি অনুমোদন দেওয়ার পর ক্ষোভ-বিক্ষোভ আর মারামারির মধ্যে মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর শাহজাহানপুরে নিজের বাড়িতে পদ না পাওয়া নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি৷দেড় ঘন্টা বৈঠকের পর মির্জা আব্বাস সাংবাদিকদের বলেন, ওরা পদবঞ্চিতও নয়, বিদ্রোহীও নয়৷ ওদের সঙ্গে ছাত্রদলের নেতাদের মতের অমিল হয়েছে মাত্র৷ তারা সেই কথাগুলো বলতে এসেছিল, আমি তাদের বক্তব্য শুনেছি৷ তাদের বক্তব্যগুলো আমি নেত্রীকে জানাব৷

পদ না পাওয়া নেতা ও তাদের সমর্থকরা গত রোববার নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে ভাংচুর চালানোর পর তাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷ওই বৈঠকের পর তিনিও সাংবাদিকদের বলেছিলেন,বিক্ষুব্ধদের বক্তব্য তিনি শুনেছেন এবং তা দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জানাবেন৷

সেদিন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব একদিন সময় নিলে বিক্ষুব্ধরা তা মেনে কর্মসূচি স্থগিত করেন৷ এরপর সোমবার ফখরুল ও মির্জা আব্বাসসহ কয়েকজন বিএনপি নেতা বৈঠক করেন৷এর একদিন বাদে বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে বৈঠকের পর একই কথা বললেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস৷

তিনি বলেন, যারা আজ দেখা করতে এসেছে, তারা মনে করে, এই সঙ্কটের সমাধান হওয়া দরকার৷ আমি বিশ্বাস করি, ছাত্রদল নিয়ে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা এমন কিছু নয় যে সমাধানযোগ্য নয়৷কবে নাগাদ সমাধান হবে- জানতে চাইলে মির্জা আব্বাস বলেন, সময় নির্ধারণ করে বলা যাবে না৷ তবে সমাধান হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি৷বৈঠকে মির্জা আব্বাসের সঙ্গে যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালও ছিলেন৷ গত রোববার বৈঠকে ফখরুলের সঙ্গেও তিনি ছিলেন৷

মির্জা আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকের পর গত কমিটির সহসভাপতি আবু সাঈদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা নেতার সঙ্গে আমাদের দাবি নিয়ে কথা বলেছি৷ চা খেতে এসেছি৷ আমরা ছাত্রদলকে বাঁচাতে যা করার করব৷ নেত্রী যেভাবে নির্দেশ দেবেন সেভাবে হবে৷

এই বৈঠকে ছিলেন আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, জাবেদ হাসান স্বাধীন, তরুণ দে,শহীদুল্লাহ এমরান, ফেরদৌস মুন্না, তরিকুল ইসলাম টিটো, নুরুজ্জামান মুকিত লিংকন, মসিউর রহমান মিশু, শামসুজ্জোহা সুমন,হাবিবুর রহমান সুমন, রফিকুল ইসলাম রফিক, রাকিবুল ইসলাম রয়েল, কাজী শহিদুল ইসলাম, রকিউল হাসান সবুজ,আসাদুজ্জামান মিয়া, এসএম মোশারেফ হোসেন,দবির উদ্দিন তুষার৷নতুন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী রেজওয়ানুল হক রিয়াজও বৈঠকে ছিলেন৷ নতুন কমিটিতে স্থান পেলেও তারা বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে রয়েছেন৷

বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি ও সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পছন্দে এই কমিটি হয়েছে৷নয়া পল্টনে বিক্ষোভের সময় ছাত্রদলের সাবেক এই দুই সভাপতির কুশপুতুলও পুড়িয়েছে পদ না পাওয়া নেতারা৷

রাজিব আহসানকে সভাপতি ও আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত ছাত্রদলের নতুন কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে৷ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে তারা৷ মির্জা আব্বাস বলেন, ছাত্রদলে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, তা অবশ্যই সমাধান যোগ্য৷ তাদের সঙ্গে আরো আলোচনা হবে৷ আজ (মঙ্গলবার) অনেকের কথা শুনেছি৷ তারা বলছে, তারা পদবঞ্চিত৷ কিন্তু তারা পদবঞ্চিত না৷

বৈঠক শেষে নবগঠিত কমিটিতে পদবঞ্চিত ও ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আবু সাইদ সাংবাদিকদের বলেন,আমরা আমাদের কথাগুলো নেতাকে জানিয়েছি৷ঐতিহ্যবাহী ছাত্রদলকে রক্ষার জন্য চেয়ারপারসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি৷এর আগে সোমবার বিকেলে নয়া পল্টনের দলীয় কার্যালয়ে পদবঞ্চিতদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷ ওই বৈঠকে মির্জা আব্বাস ও অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীসহ বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন৷

বৈঠকে শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের কাছে কোনো মন্তব্য করেননি৷তবে মির্জা আব্বাস জানিয়েছিলন, এ সমস্যা সমাধানে মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷১৪ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রাতে রাজিব আহসানকে সভাপতি ও মো. আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়৷এরপর থেকেই আন্দোলনে নামে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা৷ তারা বিক্ষোভ, ভাঙচুর, কুশপুতুল দাহসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন৷শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে লাঠি মিছিল, হামলা, ভাঙচুর ও কয়েকজনকে পিটিয়ে আহতও করেছেন পদবঞ্চিতরা৷পদবঞ্চিতদের হামলা, ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন ঘটনায় বিব্রত হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও৷