দৈনিকবার্তা-ঢাকা,১৪অক্টোবর : ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কলামিস্ট পিয়াস করিমের মরদেহ শুক্রবার সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে৷ এতে যদি কোনো বাধা আসে তাহলে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা৷মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের এক প্র্রশ্নের জবাবে এ ঘোষণা দেন সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ৷
এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরউল্লাহ চৌধুরী, কলামিস্ট ফরহাদ মজহার৷নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে মাহফুজউল্লাহ বলেন, আমরা কখনো শুনিনি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কাউকে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লিখিত অনুমতি লাগবে৷ অতীতে এরকম কোনো উদাহরণ পাওয়া যাবে না৷ পিয়াস করিমের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে করা হচ্ছে৷
তিনি জানান, পিয়াস করিমের স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আমেনা মহসিন ও বোন অ্যাডভোকেট তৌফিক করিম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বরাবর আজ মঙ্গলবার লিখিত আবেদন করেছেন৷তিনি আরও জানান, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে জুম্মার নামাজের আগ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পিয়াস করিমের মহদেহে শ্রদ্ধা নিদেবন করা হবে৷ পিয়াস করিমের বোন যুক্তরাষ্ট্র থাকেন৷ সেখান থেকে আসতে সময় লাগার কারণেই শুক্রবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে৷ দাফনের বিষয়টি পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হবে৷
এ সংবাদিক অভিযোগ করে বলেন, শহীদ মিনারে পিয়াস করিমের মরদেহ রাখা নিয়ে এর বিরুদ্ধে সরকারের ইন্ধন বা উস্কানি রয়েছে৷ কিন্তু এ ধরণের কার্যক্রম কখনো ভালো ফল বয়ে আনে না৷ পিয়াস করিমের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর উত্সাহতে বাধা না দেওয়াই ভালো৷মাহফুজউল্লাহ বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পিয়াস করিমের প্রতি শ্রদ্ধা আমরা জানাতে পারি৷ এটি আমাদের মৌলিক অধিকার৷ এর বিরোধিতা করে তারা প্রমাণ করেছে যে জীবিত পিয়াস করিমের চেয়ে মৃত পিয়াস করিমের গুরুত্ব অনেক বেশি৷
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, আমাদের জানা মতে কয়েকদিন আগে ভাষাসৈনিক আবদুল মতিনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কোনো অনুমতি লাগেনি তো৷ তাহলে এখন কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে৷এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের নির্বাচিত সদস্য হিসেবে তিনি জানতে চান কত জনকে অনুমতি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে তা সবাইকে জানানো হোক৷ তারা যদি মনে করে থাকেন আজকের দিনই শেষ দিন তাহলে ভুল করবেন৷
সংবাদ সম্মেলনে পিয়াস করিমের পরিবারের কোনো সদস্য নেই কেন এ প্রশ্নের উত্তরে মাহফুজউল্লাহ বলেন, এটি জরুরি বিষয় নয়৷ আমরা নাগরিকদের পক্ষ থেকে সম্মান প্রদর্শন করতে চাচ্ছি৷ তাই সবাইকে এই বার্তাটি পৌঁছে দিতেই আপনাদের ডাকা৷শুক্রবারের জন্য আলাদা কোনো আবেদন করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে বক্তারা জানান, পিয়াস করিমের স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন আজ৷ তবে এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেনি কর্তৃপক্ষ৷ তবে আমরা আশা করি আগামী দুই একদিনের মধ্য অনুমতি দেবেন৷
এদিকে,সমাজবিজ্ঞানী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. পিয়াস করিমের মৃতু্যতে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সারাদেশে ‘শোক দিবস’ ঘোষণা করেছে বিএনপি৷মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে দলটির পক্ষ থেকে একথা জানানো হয়৷শোক দিবস পালন উপলক্ষে শুক্রবার দেশব্যাপী বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন, দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ সেসঙ্গে দলের নেতা-কর্মীরা বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করবেন৷বিবৃতিতে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের দলটির পক্ষ থেকে শোক দিবস’ পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে৷