দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০১অক্টোবর: মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন কঠোর করে অপরাধিকে ২ বছরের কারাদন্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা হচ্ছে৷বর্তমান সরকার বাল্যবিবাহ রোধে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করলেও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সচেতনতার অভাবে তা এখনও রোধ করা সম্ভব হয়নি৷ এজন্য বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-সংশোধন করে আরো কঠোর করা হচ্ছে৷
জাতীয় কন্যাশিশু দিবস ২০১৪ উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বুধবার একথা বলেন৷ জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরাম এবং ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির সমাজ বিজ্ঞান এবং জেন্ডার স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের চেয়ারপারসন ড. মালেকা বেগম, এনসিবিপি’র চেয়ারপারসন সালমা খান, জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি৷ ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন৷
চুমকি বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত গার্লস সামিট-এ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কন্যাশিশুর বিবাহকে সামাজিক সমস্যা হিসেবে অভিহিত করে সমস্যা দূরীকরণের যে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যাক্ত করেছেন এই আইনের সংশোধনীর মাধ্যমে তারই প্রতিফলন ঘটবে৷তিনি বাল্যবিবাহ রোধে গণমাধ্যমগুলোর সচেতনতামূলক প্রচারের পাশাপাশি বাল্যবিবাহের বিপক্ষে কঠোর অবস্থান তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে গণমাধ্যমের অবস্থান সুদৃঢ় হলে আমরা সাহস পাই৷
ড. মালেকা বেগম মেয়েদের বিয়ের বয়স কমিয়ে ১৬ এবং ছেলেদের ১৮ তে নামিয়ে আনার প্রস্তাবের কঠোর সমালোচনা ও প্রতিবাদ করেন৷ তিনি বলেন, মেয়েদের বাল্যবিবাহ রোধের পাশাপাশি ছেলেদের বাল্যবিবাহ রোধেও উদ্যোগ নিতে হবে৷ কেননা ছেলেদের বাল্যবিবাহ সমাজের জন্য আরো ভয়াবহ পরিণতি বয়ে নিয়ে আসবে৷
২০১৩ সালের নারী নির্যাতন প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, এ প্রতিবেদনে সমাজের ৮৮ শতাংশ মেয়ে পরিবার ও পরিবারের বাইরের কোন না কোন পুরম্নষ সদস্যদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হন৷ এর পেছনেও রয়েছে বাল্যবিবাহ৷ মালেকা বেগম বাল্যবিবাহ রোধে পরিবারের পুরম্নষ সদস্য শুধু নয়, পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবসম্পন্ন নারীদেরও ভূমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন৷
নারীনেত্রী সালমা খান বলেন, বর্তমান সরকার দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে৷ কিন্ত বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে না পারলে দারিদ্র্য বিমোচন হবে না৷ কারণ বাল্যবিবাহ সমাজের উত্পাদনশীল জনগোষ্ঠীকে সংসারের মধ্যে বন্দী করে ফেলে৷
এর আগে আজ সকালে বাল্য বিয়েই কন্যাশিশুর স্বাভাবিক জীবনের অন্তরায় বিষয়ে এক বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে৷ অনুষ্ঠান শেষে মেহের আফরোজ চুমকি অংশগ্রহণকারীদের হাতে সম্মাননা ও ক্রেস্ট তুলে দেন৷