দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩০সেপ্টেম্বর: শেখ মুজিবুর রহমান জাতির জনক নন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান৷ তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার অবৈধ৷ আর এই অবৈধ সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ সোমবার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় পূর্ব লন্ডনের ইয়র্ক হলে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বিশ্বনেতা শহীদ জিয়াউর রহমান: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ আখ্যা দেন৷
সভায় যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগো শহরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সম্মানে নামকরণকৃত ‘জিয়াউর রহমান ওয়ে’র নামফলক গ্রহণ করেন তারেক৷ তার হাতে নামফলকটি তুলে দেন ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের সেক্রেটারি অব স্টেটের অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য ছাত্রদলের সাবেক নেতা মোজাম্মেল নান্টু৷যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কায়সর এম আহমেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী, তারেক রহমানের বিশেষ উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, মাহদি আমিন, বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মহিদুর রহমান, যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিয়া মনিরুল আলম ও সাবেক আহ্বায়ক এম এ মালেক প্রমুখ৷
তারেক রহমান বলেন, শেখ মুজিব একজন হত্যাকারী৷ তার আমলে ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে৷তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ হত্যার রাজনীতি চালু করেছে৷ এই অবৈধ সরকার গুম খুন আর লুটের সঙ্গে জড়িত৷ বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ একটি অশুভ শক্তি৷ শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশের রাজনীতি, গণতন্ত্র নিরাপদ নয়৷ তাই অবৈধ সরকারের আর বেশি সময় নাই৷
শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে তারেক বলেন, তিনি জাতির জনক না জাতির হত্যাকারী৷ বঙ্গবন্ধু না পাকবন্ধু বলা সঙ্গত৷ আওয়ামী লীগের ৭৫ই একমাত্র সম্বল ছাড়া আর কিছুই নেই৷তারেক মন্তব্য করেন, আওয়ামী লীগের আন্দোলন মানেই লগি বৈঠার আন্দোলন৷ শেখ মুজিব একজন পাকিস্তানের নাগরিক৷ পাকিস্তানের পাসপোর্টধারী শেখ মুজিব অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন৷ আওয়ামী লীগ শেখ মুজিবের নামে বছরের পর বছর মিথ্যা ইতিহাস রচনা করেছে৷
এ কে খন্দকার সম্পর্কে তারেক রহমান বলেন, তিনি একজন মুক্তিযুদ্ধের উপ-অধিনায়ক৷ তিনি লিখেছেন, ৭ই মার্চ শেখ মুজিব জয় পাকিস্তান দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন৷ এটা আমার কথা নয়৷ এ কে খন্দকার আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এবং তাদেরই লোক৷ সত্য বলার কারণে আজকে সে তাদের কাছে রাজাকার৷ শেখ মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি এটাই কি তার প্রমাণ নয়? বঙ্গবন্ধু নিয়ে একই সময় শফিউল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, মতিয়া চৌধুরীর বক্তব্যও তিনি পড়ে শুনান৷
তারেক উল্লেখ করেন, মার্কিন সরকার হাসিনার অবৈধ সরকারের অনুরোধ রাখেনি৷ তারা শিকাগোতে জিয়াউর রহমান ওয়ে নামকরণ করেন৷ সেজন্যে তিনি তাদের ধন্যবাদ দেন৷ তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন৷ তার স্বাধীনতা ঘোষণার ফলেই মুক্তিযুদ্ধ সারা বিশ্বের কাছে নতুন এক মাত্রা লাভ করে৷ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার হয়৷ শহীদ জিয়া নিজেও মুক্তিযুদ্ধ করেছেন৷ইনুকে রিমান্ডে নিলেই খালেদ মোশাররফ হত্যার রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন তারেক রহমান৷
প্রধানমন্ত্রীকে রং হেডেড মন্তব্য করে তারেক বলেন, জনগণের প্রতি আস্থা নেই শেখ হাসিনার৷ দেশের মানুষকে এই রং হেডেড মহিলার কাছ থেকে উদ্ধার করতে হবে৷তারেক রহমান বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চসহ বিভিন্ন সময় সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও স্বাধীনতা ঘোষণা না করে শেখ মুজিব যে ভুল করেছিলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কিন্তু সেই ভুল করেননি৷দেশের মানুষের মনের ভাষা বুঝতে পেরে ২৫ মার্চ রাতেই তাই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি৷
নামফলক গ্রহণ বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বসমপ্রদায়ের কাছে শহীদ প্রেসিডেন্টে জিয়াউর রহমানের যে কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা ছিল তার প্রমাণ এই নামফলক৷ কিন্তু এই নামকরণ যাতে না হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাস এজন্যে ব্যাপক চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হতে পারেনি৷ দীর্ঘ বক্তৃতায় তারেক তার সেই পুরনো কথাই নতুন করে শোনান নেতাকর্মীদের৷ বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও কড়া সমালোচনা করেন তারেক৷ তিনি বলেন, চোর-ডাকাত-দুর্নীতিবাজরা শেখ হাসিনার আপনজন৷আওয়ামী লীগের রাজনীতির একমাত্র পুঁজি পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট বলেও মন্তব্য করেন তারেক৷
নেতাকর্মীদের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে নেই৷ আওয়ামী লীগ জনগণের ভাষা বোঝে না, একাত্তরেও তারা এটি বোঝেনি৷ আন্দোলন এখনও টের পাচ্ছে না বর্তমান অবৈধ সরকার৷ যখন টের পাবে তখন আর পালাবার পথ পাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন বিএনপির এই নীতি-নির্ধারক নেতা৷