দৈনিকবার্তা-কলাপাড়া, ৩০সেপ্টেম্বর: কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এলাকার শতাধিক স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে৷ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়৷ পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসনের পরিচালিত উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুর রহমান৷ এসময় কুয়াকাটা নৌ-পুলিশের একটি টিম অভিযানের সহায়তা করে৷ সৈকত এলাকায় কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে কিন্তু এসব উপেক্ষা করে শত শত ছোট-বড় স্থাপনা তোলা হয়৷ যার প্রেক্ষিতে এ অভিযান পরিচালিত হয়৷
২০১১ সালের ২জুন পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে সব ধরনের স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট৷ তখন দু’শতাধিক স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়া হয়৷ কিন্তু কুয়াকাটা পৌরসভার কাউন্সিলর কাজী আব্বাসসহ কয়েক প্রভাবশালী ফের অসংখ্য স্থাপনা তুলে বিক্রি এবং ভাড়া দেয়৷ এ উচ্ছেদের ফলে ভাড়ায় নেয়া দোকানিরা ৰতির শিকার হয়৷ তবে তখনকার সময় ভেঙ্গে দেয়া দ্বিতল কয়েকটি স্থাপনার সম্প্রসারণ কাজ হয়েছে৷ সেসব ভাঙ্গা না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন৷ তারা জানান, ওইসব ভবনের সম্প্রসারণ কাজ শেষ হওয়ার পরে সু-কৌশলে এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে৷ তবে পর্যায়ক্রমে সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলে মহিপুর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সুরেন চন্দ্র জানিয়েছেন৷
পটুয়াখালীর তত্কালীন জেলা প্রশাসক গোলাম মো. হাসিবুল আলম ১৮ আগস্ট (২০১১) উচ্চ আদালতের নির্দেশ বাসত্মবায়নের নিমিত্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করেন৷ তারা সৈকত এলাকা জরিপ করে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এলাকার সীমানা নির্ধারণ করেন৷ পশ্চিমে আন্ধারমানিক নদীর মোহনা এবং বঙ্গোপসাগরের সংযোগস্থল থেকে কাউয়ারচর মৌজার উত্তরপুর্ব সীমানার রামনাবাদ চ্যানেল পর্যনত্ম সৈকত এলাকা নির্ধারন করা হয়৷ কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সিডর, আইলা, জলোচ্ছ্বাসে সৈকত এলাকার বেড়িবাঁধ পর্যন্ত প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে৷ এবং জলবায়ূর দ্রম্নত পবির্তনজনিত কারণে ভবিষ্যতে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করে বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাস করা নিরাপদ নয় প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন৷
সমুদ্রের জোয়র-ভাটার সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ উচ্চতা বিবেচনা করেই এ সৈকত এলাকা নির্ধারন করেন৷ তিন সদস্যের কমিটি সৈকত এলাকায় মাটি ভরাট, অবৈধ অনুপ্রবেশ, স্থায়ী কিংবা অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ প্রতিরোধ করতে সুপারিশ করেন৷ তখনকার প্রস্তুতকৃত ট্রেসম্যাপ অনুসারে চারটি মৌজার চার হাজার ৭২৪ দশমিক ৬০ একর জমি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়৷ যার মধ্যে লতাচাপলী মৌজায় এক হাজার ৯৭ দশমিক ৮৬, গঙ্গামতি দুই হাজার পাঁচ শ’ ১০ দশমিক ৪৭ একর, কাউয়ারচর এক হাজার ৪৪ দশমিক ৮৩ একর এবং চরচাপলী ৭১ দশমিক ৪৪ একর৷