Najrul Isalm

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩০সেপ্টেম্বর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রস্তাব নাকচ করে দিলেও আন্দোলনের মুখে সরকার তার ভাষা বদলাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান৷ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নবগঠিত কমিটি নিয়ে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন৷

আন্দোলন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নজরুল বলেন,আন্দোলন একটি চলমান প্রক্রিয়া৷ আন্দোলনের গতি কখনো কমবে আবার কখনো বাড়বে এটাই স্বাভাবিক৷ মোটকথা সরকারের আচরণের ওপর নিভর্র করবে আন্দোলনের ধরণ৷ তারা যদি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা না করে তাহলে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে৷

বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের কথায় মনে হচ্ছে তারা বাংলাদেশের নির্বাচনকে মেনে নিয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির অবৈধ ভোটারবিহীন নির্বাচনকে কোনো দেশই যে মেনে নেননি তার অনেক প্রমাণ আছে৷ নির্বাচনের সময় কোনো দেশ পর্যবেক্ষক পাঠায়নি৷ আর কূটনীতিকরা যা বলছেন এটা তাদের কূটনৈতিক ভাষা৷ এটার অর্থ নির্বাচনকে মেনে নেয়া নয়৷নজরুল ইসলাম খান বলেন, পদত্যাগের আগের দিন পর্যন্ত এরশাদ বলেছিলেন, আমি কার কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেবো৷ আমি কী জিরো পয়েন্টে গিয়ে পদত্যাগ করবো?

কিন্তু জনগণের আন্দোলনের মুখে একদিন পরই তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন৷ সুতরাং আজকের প্রধানমন্ত্রী মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি প্রত্যাখ্যান করলেও আন্দোলন যখন শুরু হবে তখন তার ভাষা বদলে যাবে৷তিনি বলেন, আমরা সংলাপ এবং সমঝোতার মাধ্যমে চলমান সঙ্কটের সমাধান চাই৷ সেটি না হলে, আন্দোলনের মাধ্যমেই ফয়সালা হবে৷

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর দেওয়া বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে এ সময় নজরুল ইসলাম খান বলেন, এর আগে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এই মন্ত্রী বলেছিলেন যারা হরতাল করবে তাদেরকে ঘরে ঘরে গিয়ে খুন করতে হবে৷ কোনো সভ্য সমাজে এমন বক্তব্য কেউ দিলে তখনই তাকে বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করা হতো৷ কিন্তু দুঃখের বিষয় এই মন্ত্রীর বেলায় সেটি ঘটেনি৷ কারণ, আমরা সভ্য ও গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণ করতে পারিনি৷আবদুল লতিফ সিদ্দিকী আবার আমাদের ধর্ম ও হজ্জ্ব নিয়ে কটূক্তি করেছেন৷ এর নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই৷ আমি এই মন্ত্রীর বরখাস্ত ও শাস্তি দাবি করছি- বলেন তিনি৷

জাতিসংঘে বিশ্ব নেতাদের শেখ হাসিনা সরকারের প্রশংসা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, বিশ্ব নেতারা যে ভাষায় কথা বলেছেন সেটি কূটনীতির ভাষা৷ তাছাড়া শেখ হাসিনা বা তার সরকারকে নয়, তারা বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন এবং তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন৷ বিএনপি বিশ্ব নেতাদের মতের চেয়ে জনগণের মতকে বেশি গুরুত্ব দেয়৷

আন্দোলন সম্পর্কে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপি গণমানুষের দল৷ জনগণের দাবি আদায় এবং গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠায় বিএনপি আন্দোলন করে যাচ্ছে৷ এই আন্দোলনের ধরন কী হবে তা নির্ভর করবে সরকারের আচরণের ওপর৷

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিম, শ্রমিক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাফরুল হাসান, ঢাকা মহানগর শ্রমিক দল দক্ষিণের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ আমীর খসরু, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব আলম বাদল, উত্তরের সভাপতি জুলফিকার মতিন, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম প্রমুখ৷