আমেরিকান রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২৮সেপ্টেম্বর : সমপ্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত বাংলাদেশ সরকারকে উত্‍খাত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র বিষয়ক প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা৷ রাজনৈতিক বিরোধ নিরসনে দলগুলোর প্রতি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে এলেও এবার বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অভ্যন্তরীণ বিষয় বললেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা৷

রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে কূটনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন আয়োজিত ডিক্যাব টকে তিনি এ কথা জানান৷ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের সভাপতি মাইনুল আলম, সাধারণ সম্পাদক আঙ্গুর নাহার মন্টি প্রমুখ৷মা- ছেলের উদাহরণ টেনে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে বিশ্বাসের সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা রয়েছে৷ সুশাসন, দুর্নীতি অবকাঠামোর উন্নয়ন করা গেলেই বাংলাদেশ আরও উন্নতি করবে৷ বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যায় তাহলে বিদেশি বিনিয়োগের কোনো অভাব হবে না বলে জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডবি্লউ মজীনা৷

বিনিয়োগের জন্য বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশই সর্বোত্তম দেশ উল্লেখ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশেকে গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক, নিরাপদ, শান্তিময় দেশ হিসেবে দেখতে চায় আমেরিকা৷ কারণ এটা দক্ষিণ এশিয়া, আমেরিকা এবং বাংলাদেশের জন্য ভালো৷এখানকার অবস্থা ভালো হলে বিদেশি বিনিয়োগের কোনো অভাব হবে না৷ দুর্নীতি দমন করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি৷ মজীনা বলেন, উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশে যেসব চ্যালেঞ্জ আছে তার সমাধানও আছে৷ বাংলাদেশের উন্নয়নে চ্যালেঞ্জগুলো হলো জ্বালানি সংকট, যোগাযোগব্যবস্থার বেহাল দশা, দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা৷ এগুলো সব সমাধানযোগ্য৷জ্বালানি সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিবেশী দেশ ভুটান, নেপাল ও ভারত থেকে বিদু্যত্‍ থেকে আমদানি করলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে৷

১৫ বছর আগের চেয়ে এখন দেশের চিকিত্‍সাব্যবস্থা অনেক উন্নত উল্লেখ করে মজীনা বলেন, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়ার জন্য এখন কোনো শিশু মারা যায় না৷ হাসপাতালগুলো খালি দেখা যায়৷ যা স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নের চিত্র৷ বাংলাদেশের লোকজন প্রচণ্ড রাজনৈতিক সচেতন৷ এদেশের মানুষের ডিএনএর মধ্যে রাজনীতি রয়েছে৷ আমি ৬৪টি জেলায় ঘুরেছি৷ মানুষের সাথে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিষয়ে কথা বলেছি৷ তিনি বলেন, আমি মনে করি এটা একটা অভ্যন্তরীণ বিষয়, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো ও জনগণের মীমাংসা করা দরকার এবং কোনো এক পর্যায়ে গিয়ে তারা এটা ঠিক করবে৷প্রধানমন্ত্রী মধ্যবর্তী নির্বাচন ও বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করার পর দাবি আদায়ে কোরবানীর ঈদের পরে বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে একথা বলেন ড্যান মজীনা৷

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যখন তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান করবে,তখন বাংলাদেশের সব বন্ধুই তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবে৷বিএনপির বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ৷ ওই নির্বাচনের পরপরই সম্ভাব্য দ্রুত সময়ের মধ্যে অংশগ্রহণমূলক নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়৷ঢাকার কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা৷

মজীনা বলেন, জিএসপি ফিওে পাওয়ার শর্ত পূরণ করলে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে তৈরি পোশাক খাতে বিশ্বসেরা৷ তখন এসব সুবিধা এমনিতেই পাওয়া যাবে৷ তিনি বলেন, রাঝিৈনক কারণে বাংলাদেশের (জেনারেলাইজড সিস্টেম অফ প্রিফারেন্সেস ) জিএসপি সুবিধা বাতিল করেনি৷কবে নাগাদ বাংলাদেম জিএসপি ফিরে পাবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে জবাবে মজীনা বলেন, যে সব শর্তের কারণে জিএসপি বাতিল করা হয়েছে তা পূরণ করলেই জিএসপি ফিওে পাওয়া যাবে৷ তবে এই সুবিধা বাতিলের পেছনে রাজনৈতিক কোন কারণ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷

ওানা প্লাজা ট্রাজেডির পর গামেন্র্টস খাতে শ্রমিক নিরাপত্তা বিষয়ে নেওয়া পদক্ষেপের প্রশংসা করে মজীনা বলেন, তৈরি পোশাক খাকে বাংলাদেশ বিশ্ব সেরা হয়ে উঠার সম্ভবনা আছে৷গত সপ্তাহে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের ৬৪ ঝেরা ভ্রমণ শেষ করেছেন ৷ এবষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ খুব সমৃদ্দশালী একটি দেশ ৷ এদেশের মানুষের মনে কাজের স্পৃহা রয়েছে৷ আছে প্রাকৃতিক অঢেল সম্পদ ও সৌন্দর্য ৷ সমগ্র এশিয়াতে বাংলা বালাদেশের উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠার সম্ভবনা রয়েছে এবং বাংলাধেম তা হবেই ৷