khoka_hannan

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর: ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকাসহ চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিটের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)৷ ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ক্ষতি সাধন করায় মঙ্গলবার দুদক এ চার্জশিটের অনুমোদন দেয়৷দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন৷

অভিযুক্ত অপর তিনজন হলেন- ঢাকা সিটি করপোরেশনের (অঞ্চল-১০) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনসুর আহামেদ, ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মফিজুর রহমান ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী (অঞ্চল-৮) আমিনুর রহমান চৌধুরী৷

এছাড়া তিনজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে৷ অব্যাহতি টওাপ্তরা হলো- এমআর ট্রেডিংয়ের প্রোপ্রাইটর মিজানুর রহমান, ডিসিসি’র সাবেক তত্ত্বাবধায় প্রকৌশলী মো. শিহাব উল্লাহ এবং সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হক৷প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানান, ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকায় নির্মাণাধীন বহুতল বাণিজ্যিক ভবনের কারপার্কিং সঠিকভাবে চুক্তি সম্পাদন হয়নি৷ এতে ৫ শতাংশ মালিকানা থেকে বঞ্চিত হয় সিটি করপোরেশন৷ এ অভিযোগেই সাদেক হোসেন খোকা ও তিন প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে চার্জশিটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে৷

এর আগে ডিসিসির নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে খোকার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় আরো একটি মামলা করে দুদক৷ গত ডিসেম্বরে ঢাকা সিটি করপোরেশন ভাগ করা হলে মেয়রের পদ হারান সাদেক হোসেন খোকা৷তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর দিলকুশা এলাকায় কার পার্কিংয়ের ব্যবস্থাসহ একটি বহুতল বাণিজ্যিক ভবন (সানমুন স্টার টাওয়ার)নির্মাণ প্রকল্পে সাদেক হোসেন খোকা তত্‍কালীন মেয়রের দায়িত্বে থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন৷ এছাড়া অন্য আসামিরাও দায়িত্বে অবহেলা এবং ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন৷

২০১২ সালের ২৯ মার্চ দুদক এ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা করে৷

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা যানজট মুক্ত রাখতে ২০০৫ সালে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় ডিসিসি৷ এর মধ্যে বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে ৩৭ দিলকুশায় বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) প্রায় দুই বিঘা জমি নেয় ডিসিসি৷চুক্তি অনুযায়ী ওই জায়গায় ডিসিসির অর্থায়নে সানমুন স্টার টাওয়ার নামে ২৫ তলা ভবন নির্মিত হবে এবং সেখান থেকে বিজেএমসিকে একটি ফ্লোর ও ৩০টি গাড়ি পার্কিং সুবিধা বিনা ভাড়ায় দেওয়া হবে৷

সে অনুযায়ী ২০০৭ সালের মধ্যে বহুতল বেজমেন্টসহ তৃতীয় তলার কাজ শেষ হয়৷ এসময় ডিসিসি হঠাত্‍ সিদ্ধান্ত নেয়, এ বিল্ডিংয়ের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করা হবে ডেভেলপার দিয়ে৷ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভবনটি নির্মাণের জন্য ২০০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয়৷ এতে এমআর ট্রেডিং, সাজেদা এন্টারপ্রাইজ ও সিয়াম করপোরেশন দরপত্র দাখিল করে৷ ওই সময় শর্ত ভঙ্গের কারণে প্রথমেই সাজেদা এন্টারপ্রাইজের দরপত্র বাতিল হয়৷

ব্যাংক ড্রাফট বা পে অর্ডার বাধ্যতামূলক হলেও দরপত্রের শর্ত ভঙ্গ করে এমআর ট্রেডিং ব্যাংক গ্যারান্টি জমা দেয়৷ এ অবস্থায় দরপত্র বাতিল হওয়ার কথা থাকলেও কার্যাদেশ পায় এমআর ট্রেডিং৷ এ ক্ষেত্রে ডিসিসির ২৫ ভাগ এবং এমআর ট্রেডিংকে ৭৫ ভাগ মালিকানা দেওয়ার চুক্তি করা হয়৷ ফলে এমআর ট্রেডিং পাঁচ লাখ ৭৩ হাজার ৭৫০ বর্গফুট এবং ডিসিসি পায় এক লাখ ৯১হাজার ২৫০ বর্গফুট জায়গা৷

দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, চুক্তির পর এমআর ট্রেডিং অগ্রিম অর্থ নিয়ে ফ্ল্যাট বিক্রির মাধ্যমেই ভবন তৈরি করছে৷ তার প্রাপ্ত অংশের বর্তমান বাজারমূল্য এক হাজার ১৪৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা (প্রতি বর্গফুট ২০ হাজার টাকা করে)৷ অথচ এসব জায়গা নিজের অর্থায়নে নির্মাণ করলে নির্মাণ ব্যয় বাদে ডিসিসি পেত ৮২৭ কোটি টাকা৷ এতে এই অর্থ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে ডিসিসি৷