khaleda-zia_in_court_14074

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২২ সেপ্টেম্বর: সোয়া পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের দুই মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সময়ের আবেদন নাকচ করে তার অনুপস্থিতিতেই এক মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেছে আদালত৷এইপ্রেক্ষাপটে বিচারকের ওপর অনাস্থা জানিয়ে একটি আবেদন করেছেন খালেদার আইনজীবীরা৷ সোমবার এ দুটি মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদের আংশিক জবানবন্দি শুনে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৩ অক্টোবর পরবর্তী দিন রেখেছেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ বাসুদেব রায়৷

রাজধানীর বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ঢাকা তৃতীয় মহানগর বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার এই বিচার চলছে৷বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের হরতালের মধ্যে সোমবার আদালতে না এসে আইনজীবীদের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর জন্য আবারও আবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা৷ আদালতে আসতে না পারায় তিনি এদিন ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফেরও আবেদন করেন বলে খালেদার অন্যতম আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ জানান৷

শুনানি শেষে বিচারক সময়ের আবেদন খারিজ করে দেন৷ তিনি সোমবারই সাক্ষ্য শুরু করতে চাইলে হট্টগোল শুরু করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা৷ দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল এ সময় প্রয়োজনে খালেদাকে পরাতক দেখিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর আবেদন জানান৷পরে আদালত খালেদার ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফের আবেদন মঞ্জুর করে সাক্ষ্য শুরুর নির্দেশ দেন৷

দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলার প্রাথমিক ইতিহাস বলতে শুরু করার পর কয়েক মিনিট তার জবানবন্দি শুনে খাস কামরায় চলে যান বিচারক৷ পরে সাক্ষ্যগ্রহণের নতুন তারিখ জানিয়ে দেয়া হয়৷ তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ জানান, তারা বিচারকের ওপর অনাস্থা জানিয়ে একটি আবেদন করেছেন৷ তবে এ বিষয়ে কোনো আদেশ পাওয়া যায়নি৷

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা এ দুটি মামলায় গত ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠন করে আদালত৷এর মধ্যে এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় খালেদা ও তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জন এবং জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে আরো তিনজন আসামি হিসাবে রয়েছেন৷এ দুই মামলায় অভিযোগ গঠনকারী বিচারকের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আপিল বিভাগে গেলেও তা খারিজ হয়ে যায়৷

অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেও খালেদা দুটি রিভিশন আবেদন করেছিলেন,যেগুলো হাই কোর্টে খারিজ হয়৷ হাই কোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে করা খালেদার আবেদন বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচারাধীন৷

এর আগে মামলা দু’টির প্রধান আসামি খালেদা জিয়ার করা দু’টি মামলারই সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোসহ ৬টি আবেদন নামঞ্জুর করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর আদেশ দেন আদালত৷ আদালতে হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাতে ফের সময়ের আবেদনসহ এসব আবেদন জানান খালেদা৷ তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার আবেদনগুলো করেন৷প্রথম সাক্ষী হারুন অর রশিদ তার নাম-পরিচয় দিয়ে আদালতে তার সাক্ষ্যে বলেন, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ফাণ্ডের টাকা আত্মসাত্‍ করতে সোনালী ব্যাংকে একটি হিসাব খোলেন৷ আদালতে খালেদা জিয়া অনুপস্থিত থাকলেও এ মামলার চার আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন৷

খালেদা ছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার অন্য ৩ আসামি হলেন, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর সাবেক একান্ত সচিব ও বিআইডবি্লউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান৷ জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান জামিনে আছেন৷ হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক৷

খালেদা ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অপর ৫ আসামি হচ্ছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান৷

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আসামি মনিরুল ইসলাম, ড. জিয়াউল ইসলাম ও শরফুদ্দিন আহমেদ হাজির ছিলেন৷ মামলার অপর আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া আদালতে হাজিরা দেন৷ আদালতের কার্যক্রম শেষে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে এসব মামলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে৷ একই কারণে একটি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণও শুরু হয়৷

তিনি বলেন, বার কাউন্সিল ও আইনজীবী সমিতির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সোমবার সারাদেশে আদালত বর্জন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে৷ আদালতকে এ বিষয়ে আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছি৷ এ মামলার কার্যক্রম চললে বার কাউন্সিল ও আইনজীবী সমিতির নির্দেশনা অমান্য করা হয় বলেও আদালতকে অবহিত করেছি৷দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, এ মামলার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর আজ পর্যন্ত ৪০ কার্যদিবসে মামলার কার্যক্রম চলেছে৷ এর মধ্যে মাত্র পাঁচ কার্যদিবসে আদালতে উপস্থিত হয়েছেন খালেদা জিয়া৷ বিভিন্ন অজুহাতে তার অনুপস্থিতি দেখিয়ে এ মামলার কার্যক্রম দীর্ঘায়িত করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে পিছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে৷

তিনি বলেন, মামলার কার্যক্রম ব্যহত করতে এর আগেও খালেদা জিয়ার পক্ষে একই ধরনের অনেক আবেদন করা হয়েছে৷ আজকেও একইভাবে মামলার কার্যক্রম দীর্ঘায়িত করতে একের পর এক আবেদন করেছেন তারা৷আদালতকে অনাস্থা জানিয়ে আসামিপক্ষের যে আবেদন করা হয়েছে তাতে পরবর্তীতে এ মামলার কার্যক্রম পরিচালনায় কোনো সমস্যা হবে না বলেও দাবি করেছেন তিনি৷

সারাদেশে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আদালত বর্জন এবং ২০ দলীয় জোটের হরতাল কর্মসূচি থাকায় নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে আদালতে হাজির ছিলেন না খালেদা জিয়া৷ প্রথমে দু’টি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাতে দু’টি এবং নিরাপত্তার কারণে খালেদার অনুপস্থিতির জন্য একটিসহ তিনটি আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার৷ আবেদনে উল্লেখ করা হয়, হরতালে নিরাপত্তাজনিত কারণে খালেদা জিয়া উপস্থিত হতে পারেননি৷

এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালতে দু’টি মামলার কার্যক্রম বাতিলের জন্য করা লিভ টু আপিলের শুনানি আগামী ১৪ অক্টোবর ধার্য থাকায় এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ না করার আবেদন জানান৷শুনানি শেষে বিচারক বাসুদেব রায় আবেদন নামঞ্জুর করে সাক্ষ্যগ্রহণের আদেশ দেন৷ এরপর ৬৩ ডিএলআর অনুসারে উচ্চ আদালতের দোহাই দিয়ে মামলার কার্যক্রম না চালাতে আরো দু’টি আবেদন করেন মাসুদ আহমেদ তালুকদার৷ শুনানি শেষে এ দুই আবেদনও খারিজ করে দেন আদালত৷ এরপর বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আবেদন জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা৷

ওই সকল আবেদন এ আদালতে প্রয়োগযোগ্য নয় বলে দুদকের পক্ষে আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল শুনানি করেন৷ সর্বশেষ আবেদনটিও খারিজ করে দিয়ে মামলার বাদী ও সাক্ষী হারুন-অর রশিদকে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য নির্দেশ দেন আদালত৷একের পর এক আবেদনের শুনানির সময় সাক্ষ্য প্রদানের আগে প্রায় এক ঘন্টা সাক্ষীকে আদালতের ডকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে৷ গত ১৭ সেপ্টেম্বর খালেদার আইনজীবীদের সময়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন সপ্তমবারের মতো পিছিয়ে সোমবার পুননির্ধারণ করেছিলেন আদালত৷ এদিন খালেদা জিয়াসহ সকল আসামিকে হাজিরের নির্দেশ দিয়ে আদালত জানিয়েছিলেন, সকলের উপস্থিতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে৷

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মামলার কার্যক্রম ও মামলার বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে করা চারটি আপিল চলায় আসামিপক্ষের আবেদনে বিচারিক আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ৬ বার পিছিয়ে দিয়েছিলেন৷ সর্বশেষ নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে খালেদা জিয়া আদালতে না আসায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর সপ্তম দফায় সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে সোমবার পুননির্ধারণ করেছিলেন আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়৷

২০১১ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ৷ মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়৷ কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত ১ কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উত্‍স ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি৷

জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে৷২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ খান৷ ২০১১ সালের ৮ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া হাইকোর্ট থেকে আট সপ্তাহের জামিন পান৷ পরের বছরের ১৭ জানুয়ারি খালেদা জিয়া ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জামিননামা দাখিল করেন৷

মামলায় অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী,হারিছ চৌধুরীর তত্‍কালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডবি্লউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান৷

জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান জামিনে আছেন৷ হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক৷জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন৷এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাত্‍ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়৷

মামলার অপর আসামিরা হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান৷

তারেক রহমান দেশের বাইরে আছেন৷ মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন৷ তবে শরফুদ্দিন আহমেদ আদালতে হাজির না থাকায় গত ১৯ মার্চ তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত৷অপর দুই আসামি ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক৷মামলাটি তদন্ত করে দুদকের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ অপর চারজনকে অভিযুক্ত করে ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন৷

গত ১৯ মার্চ এ দুই দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ঢাকা তৃতীয় ও বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়৷ খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে চার্জ গঠন করা হয় খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর আট আসামির বিরুদ্ধেও৷

তবে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বিচার শুরুর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৪১ বার ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ১১ বার চার্জ শুনানির জন্য আবেদন করে সময় বাড়িয়ে নেন খালেদা জিয়া৷

গত ৭ মে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাত্‍ সংক্রান্ত বিশেষ মামলা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের টাকা আত্মসাত্‍ সংক্রান্ত বিশেষ মামলার বিচারিক কার্যক্রম ঢাকার মেট্রোপলিটন দায়রা জজ-আদালত ভবনের পরিবর্তে ঢাকা মহানগরের বকসিবাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে নির্মিত অস্থায়ী আদালতভবনে চালানোর আদেশ জারি করে৷ ফৌজদারি কার্যবিধির ৯(২) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ওই দুই মামলা পরিচালনার জন্য ভবনটিকে (যা বিডিআর হত্যাকাণ্ড মামলার অস্থায়ী আদালত ছিল) অস্থায়ী আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হয়৷

পরে দুই মামলায় অভিযোগ গঠনকারী বিচারকের নিয়োগের বৈধতা এবং বিচারিক আদালতে অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মোট চারটি রিট আবেদন করেন খালেদা জিয়া৷ সবগুলো আবেদনই হাইকোর্টে খারিজ হয়ে যায়৷ পরে খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোটের্র আপিল বিভাগে চারটি আপিল আবেদন করেন খালেদা জিয়া৷ আপিল বিভাগ খালেদার দু’টি আপিল খারিজ করে দিয়েছেন এবং বাকি দু’টি শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ৷ তবে সর্বোচ্চ আদালতের এ রায়ে বিচারিক মামলা দু’টি চলতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা৷