দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২২ সেপ্টেম্বর: রাষ্ট্র ক্ষমতায় চিরস্থায়ীভাবে থাকার জন্যই সরকার একের পর সংবিধান সংশোধন করছে এ অভিযোগ করেছেন বিএনপি৷ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিলে সই না করে তা পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠাতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের প্রতি আহ্বান জানায় বিএনপি৷
সোমবার সকাল ছয়টা থেকে শুরু হওয়া সকাল-সন্ধ্যা হরতালের প্রথম পাঁচ ঘন্টা শেষে সকাল ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান এ আহ্বান জানান৷ গণতন্ত্র না থাকলে স্বাধীনতা থাকে না এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলে না৷ আওয়ামী লীগ সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করছে৷
ক্ষমতায় অসার পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকার একের পর এক সংবিধান সংশোধন কর্তেএ কথা জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্যই এটা করছে৷আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে৷ সংবিধান সংশোধনের কোনো অধিকার এ অবৈধ সংসদের নেই বলে জানান তিনি৷
মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার বিধান রেখে সংসদে পাস হওয়া সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিলে রাষ্ট্রপতি সই করলেই তা আইনে পরিণত হবে৷তিনি বলেন, আমরা আশা করবো, রাষ্ট্রপতি এই বিলে সই না করে তা পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠাবেন৷ অন্যথায়, আমরা ধরে নেবো, ১৯৭৫ সালে যেভাবে সব দলকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল, আবারও সেদিকেই এগুচ্ছে সরকার৷
বিচারপতিদের অভিশংসন আইনকে কালাকানুন আখ্যা দিয়ে মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, দেশের জনগণের একমাত্র ও শেষ আশ্রয়স্থল হচ্ছে বিচারালয়৷ সেই বিচারালয়ের বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা জনপ্রতিনিধিত্বহীন রাবার স্ট্যাম্প পার্লামেন্টে ফিরিয়ে নেওয়াকে জনগণ মেনে নিতে পারেনি৷
জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই হরতাল দেওয়া হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, বিএনপিকে ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য অথবা দলের নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এ হরতাল নয়৷ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিল পাস হওয়ার আগে থেকেই আমরা এর প্রতিবাদ করে আসছিলাম৷ কিন্তু সরকার আমাদের কথায় কর্ণপাত করেনি৷ তাই, বাধ্য হয়েই হরতাল দিয়েছি৷
বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এই হরতাল সফল করার মধ্য দিয়ে জনগণ সরকারকে একটি বার্তা দিয়েছে৷ সেটি হলো, বিচার বিভাগকে সরকারের হাতের পুতুল হতে দিতে চায় না তারা৷
সফল হরতাল হচ্ছে দাবি করে মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, দেশের প্রত্যেকটি জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা হরতালের পক্ষে মিছিল, মিটিং ও পিকেটিং করেছে৷ সরকারের শত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও দেশের জনগণ হরতালের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে৷
এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন,জোটের সব দলের শক্তি-সামথর্্য ও বিস্তৃতি এক রকম নয়৷ যার যার অবস্থান থেকে সবাই কাজ করছেন৷ এরই মধ্যে সারাদেশে ২০ দলীয় জোটের ২০/২৫ জন আটক হয়েছেন৷সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সহ-দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করিম শাহীন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাজাহান মিয়া সম্রাট, বেলাল আহমেদ, আমিনুল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা নুরু প্রমুখ৷