দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২১ সেপ্টেম্বর: বিচারকরা স্বাধীন না থাকলে দেশে মানবাধিকার থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার কশিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান৷রোববার আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস’ সামনে রেখে রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসে পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন৷ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের বিজয় অডিটোরিয়ামে এক সেমিনারের আয়োজন করে৷মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন,বিচারকরা পরাধীন থাকলে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না৷
এ সময় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হলে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না বলেও জানান ড. মিজানুর রহমান৷ এছাড়া দেশে আইন দুর্বল থাকলে মানবাধিকার থাকবে না বলে জানান তিনি৷বিচারকরা স্বাধীন না হলে ন্যয়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে না মন্তব্য করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেছেন, কেবল আইন দিয়ে বিচারকদের স্বাধীন করা যাবে না৷
অধ্যাপক মিজান বলেন,দেশে বিচারকরা স্বাধীন না হলে জাস্টিস প্রতিষ্ঠিত হবে না৷ পরাধীন বিচারকদের কেউ কোনো আইন দিয়ে স্বাধীন করতে পারবে না৷বিচারকদের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনতে সরকার সংবিধান সংশোধন করায় বিচারকদের পক্ষে ন্যায়বিচার করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে৷ অবশ্য সরকার বলছে, বিচার বিভাগের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার জন্যই সংবিধানের এ সংশোধন৷
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার এবং পেশিশক্তির রাজনীতিরও সমালোচনা করেন৷তিনি বলেন, যতক্ষণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হচ্ছে, সমাজে অপরাধ করলে দায়মুক্তি ঘটছে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছে না, যতোদিন মাইট ইজ রাইট নীতি চলবে- ততক্ষণ দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব না৷তার এ মন্তব্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিতরা করতালি দেন৷
বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী নেইল ওয়াকার বলেন, মানবাধিকার কেউ কাউকে চাপিয়ে দিতে পারে না৷ এটা উপলব্ধি করতে হয়৷ এসময় বাংলাদেশে জাতিসংঘের প্রতিনিধি নীল ওয়াকার বলেন, একটি দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হয়৷আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন না করে সেদিকে সরকারকে নজর দিতেও অনুরোধ জানান জাতিসংঘের এই প্রতিনিধি৷তিনি বলেন, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পেলে মানবাধিকারও প্রতিষ্ঠিত হয়৷ জাতিসংঘ দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ বাড়িয়ে মানবাধিকার সুরক্ষায় কাজ করছে৷যুদ্ধমুক্ত বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে ১৯৮১ সালে জাতিসংঘে গৃহীত একটি প্রস্তাব অনুসারে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরু দিনটি আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস হিসাবে পালন করা হয়৷
অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের উপাচার্য মেজর জেনারেল শেখ মামুন খালেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সাবেক ফোর্স কমান্ডার আবু তৈয়ব মোহাম্মদ জহিরুল হক সেমিনারে বক্তব্য দেন৷