aeae07f189dc801a5ec7bc754b665354_L

দৈনিকবার্তা-চাঁদপুর, ২০ সেপ্টেম্বর: আমেরিকায় অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা বা জিএসপি ফিরে পাওয়ার ক্ষেত্রে যে শর্তগুলো ছিল তা ইতিমধ্যে পূরণ করা হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এই সুবিধা ফিরে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন৷ জিএসপি ফিরে না পেলে এর জন্য একমাত্র রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রই দায়ী থাকবে বলেও মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী৷তিনি জানান, জিএসপি সুবিধা বাতিল করলেও বাংলাদেশ সাত বিলিয়ন ডলার রফতানি করে৷ আমেরিকায় বাংলাদেশের পণ্যের বাজার উন্মুক্ত রয়েছে৷ শনিবার দুপুরে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার হাসিমপুরে ড. মুহাম্মদ মানসুরউদ্দীন মহিলা কলেজের কৃতী ছাত্রী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন৷

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (মায়া) বীর বিক্রম, রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক৷ শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. গোলাম হোসেন৷

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের সীমিত সম্পদ চালিকা শক্তি৷ এখন বৈষম্যের হার হ্রাস পেয়েছে৷ দারিদ্র্য দূরীকরণের হার ২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে৷ এ দেশের এলিটরা যদি উদার হন তাহলে দেশকে আরো এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে৷ এক্ষেত্রে এলিটদের এগিয়ে আসতে হবে৷ বর্তমান সরকারের আমলেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে বলে আশা করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত৷

মন্ত্রী বলেন, দেশের ৫০ শতাংশ নারী৷ নারী পেছনে পড়ে থাকলে আমাদের ৫০ শতাংশ পুরুষ কিছুই করতে পারবে না৷ তাই বর্তমান সরকার নারীর শিক্ষা ও কর্মদক্ষতায় অত্যন্ত মননশীল৷তিনি বলেন, আমাদের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ৷ এখন চিন্তা করতে হবে, এটিকে কিভাবে ৮ থেকে ১০ শতাংশে উন্নীত করা যায়৷ এই প্রবৃদ্ধিতে যেতে হলে নারীদের এগিয়ে যেতে হবে৷মুহিত বলেন, আমাদের সৌভাগ্য, কৃষক-শ্রমিকদের দক্ষতা-পরিশ্রমে দেশ আজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে৷ আমাদের রফতানি ৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে হবে৷

বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে সরকারের লক্ষ্যের কথা জানিয়ে তা অর্জনে জনগণের সহযোগিতা আশা করেন মুহিত৷ বর্তমান সরকারের টার্গেট বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে৷ মহত্‍ উদ্দেশ্য থাকলে পাঁচ বছরে এই দেশের জনগণই এর জন্য সহযোগিতা করবে৷অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারীদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বেশি করে যুক্ত করার ওপর জোর দেন অর্থমন্ত্রী৷

আমাদের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ, এটাকে ৮ থেকে ১০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে৷ আর সেজন্য এগিয়ে আসতে হবে নারীদের৷ এদেশের ৫০ শতাংশ নারী৷ তাই নারীরা পেছনে পড়ে থাকলে বাকি ৫০ শতাংশ পুরুষ কিছুই করতে পারবে না৷বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, সরকারের উন্নয়নের ধারায় গ্রামগুলো এখন শহরে রূপান্তরিত হচ্ছে৷ আমাদের রফতানি আজকে দাঁড়িয়েছে, ৩০ দশমিক ২ বিলিয়নে৷ রিজার্ভ ২২ বিলিয়নে৷ সবদিক থেকেই আমরা পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের তুলনায় এগিয়ে আছি৷

জিএসপি সম্পর্কে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক দেশেই আমেরিকায় জিএসপি সুবিধা পায় না৷ জিএসপি সুবিধার জন্য আমাদের যেসব শর্ত দেয়া হয়েছিল ইতিমধ্যে তার সবগুলোই পূরণ হয়েছে৷ তাই জিএসপি সুবিধা না পাওয়ার কোনো কারণ নেই৷ আশা করা হচ্ছে, আমরা শিগগির জিএসপি সুবিধা পাবো৷

তিনি বলেন, আজকে নারী ও তাদের কর্মদক্ষতায় আমরা ভারত থেকে এগিয়ে রয়েছি৷ জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের যেই রূপকল্প ঘোষণা করেছে তা রূপান্তরিত হবেই৷ আমরা শিক্ষাখাতে এগিয়ে যাচ্ছি৷ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে৷

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল বলেন, সরকারের উন্নয়নের ধারায় গ্রামগুলো এখন শহরে রূপান্তরিত হচ্ছে৷ আমাদের রপ্তানি আজকে দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে৷ রিজার্ভ ২২ বিলিয়নে৷বাংলাদেশ সব দিক দিয়েই পাকিস্তানসহ অনেক েেদশের চেয়ে এগিয়ে, বলেন তিনি৷

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের (জিএসপি) বিষয়ে তিনি বলেন, জিএসপির জন্য আমাদের যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল, ইতোমধ্যে তার সবগুলোই পূরণ হয়েছে৷ তাই জিএসপি ফিরে না পাওয়ার কোনো কারণ নেই৷ আশা করি, শিগগিরই আমরা জিএসপি ফিরে পাব৷সরকারের পদক্ষেপে অর্থনীতিতে নারীদের ভূমিকা বাড়ার কথাও বলেন তোফায়েল৷

দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (মায়া) বলেন, এই সরকারের আমলেই বিনামূল্যে বই দেয়া হয়েছে৷ শেখ হাসিনার হাত ধরে শিক্ষার প্রচার-প্রসার ঘটছে৷ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুনাম-সুখ্যাতি করেছে৷ রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু সবচাইতে বড় অবদান রেখেছেন৷ আর বঙ্গবন্ধুর এই অবদানকে ভালো করে শেখ হাসিনার সরকার এগিয়ে যাচ্ছে৷ যেখানে নারী শিক্ষার প্রসার ঘটেছে৷

শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সেমিনারে প্রবন্ধ পাঠ করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আহসানুল হক চৌধুরী৷ বক্তব্য দেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন৷ অনুষ্ঠানে অতিথিবৃরা কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে বই উপহার তুলে দেন৷প্রথিতযশা লোকসাহিত্যিক, লোকগাথা সংগ্রাহক এবং লোকসাহিত্যিক গবেষক মরহুম অধ্যাপক ড. মনসুরউদ্দীনের নামে কচুয়ার হাশিমপুর গ্রামে ২০০৯ সালে ড. মনসুরউদ্দীন মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়৷ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কলেজটি শতভাগ পাস করে আসছে৷