দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ সেপ্টেম্বর: রাষ্ট্র ক্ষমতায় চিরস্থায়ীভাবে থাকার জন্যই সরকার একের পর সংবিধান সংশোধন করছে এ অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷গণতন্ত্র না থাকলে স্বাধীনতা থাকে না এ কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলে না৷ আওয়ামী লীগ সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করছে৷
জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন৷
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার তাদের ইচ্ছেমতো কাজ করতেই অভিশংসন আইন করছে৷ আইনটি ন্যায়বিচারের জন্য বাধা৷
ক্ষমতায় অসার পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকার একের পর এক সংবিধান সংশোধন কর্তেএ কথা জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্যই এটা করছে৷
আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে৷ সংবিধান সংশোধনের কোনো অধিকার এ অবৈধ সংসদের নেই বলে জানান তিনি৷
তিনি বলেন, বিচারবিভাগ কুক্ষিগত করে ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতেই এ আইন পাশ৷ এর সঙ্গে জনগণের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই৷
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যারা সমাজ ও রাজনীতিকে দূষিত করে মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে৷ একের পর এক গুম করছে৷ তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে৷তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন কঠিন সময় পার করছে৷ ইসলামী মূল্যবোধ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে৷ অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে৷ দেশের স্বাধীনতা আজ হুমকির সম্মুখীন৷
এ সময় বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতার সমালোচনা করে তিনি বলেন, বর্তমান সংসদে জনগণের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই৷ যে সংসদের ১৫৪ জন সদস্য বিনা নির্বাচনে পাশ করে সেটা জনগণের সংসদ হতে পারে না৷
বিএনপির এ নেতা আরো বলেন,শাসন বিভাগের নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচার বিভাগ পুরোপুরি মুক্ত থাকবে সংবিধানে এটি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলেও আদালতের উপর একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখতেই জাতীয় সংসদে বিচারপতিদের অভিশংসন আইন সংশোধন করা হয়েছে৷ আর এই আইনের দ্বারা মন্ত্রী পরিষদ শাসিত সরকারের প্রধান নির্বাহী অর্থাত্ প্রধানমন্ত্রীকেই বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করার শতভাগ ক্ষমতা নিশ্চিত করা হবে৷
তিনি বলেন, যোগ্যতা ও নিরপেক্ষদের নিরিখে নয় একদিকে প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের বিচারপতিরা যেমন বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাবেন৷ অন্যদিকে যোগ্য ও নিরপেক্ষদের অপসারিত হতে হবে৷ এর ফলে দেশের আদালতগুলোতে বিচারক নিয়োগ ও অপসারণ দুটিই থাকবে নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন৷তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ৫জানুয়ারি প্রতারণার নির্বাচন করে ক্ষমতায় এসে একের পর এক গণবিরোধী আইন তৈরি করে জনগণের ভোটাধিকার ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছেন৷ আর সমপ্রচার নীতিমালার মাধ্যমে বিরোধী মতকে কন্ঠরোধের চেষ্টা চালাচ্ছেন৷
ফখরুল বলেন, সরকার শুধু বিচার বিভাগ নয়, সংবাদপত্রসহ সবক্ষেত্রেই বাকশালের মতো দেশ পরিচালনা করতে চাচ্ছে৷ তাই তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে৷
তিনি বলেন, সরকার ভিন্নমতালম্বীদের একের পর এক মামলা দিচ্ছে৷ যাতে করে তারা আদালত চত্বরেই ব্যস্ত থাকেন৷ সরকারের অপশাসন নিয়ে কথা বলতে না পারেন৷তিনি বলেন, আজকাল নীতিমালার নামে ভীতিমালা হচ্ছে৷ তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকার হটাতে হবে৷
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদ, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত প্রমুখ৷