eid_37752

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ সেপ্টেম্বর: পবিত্র ঈদ-উল-আযহা এবং শারদীয় দুর্গাপূজা নিরাপদে উদ্যাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে৷ মহা-পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার এর সভাপতিত্বে শনিবার সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে ঈদ-উল-আযহা এবং দুর্গাপূজার আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে পৃথক দুটি সভা অনুষ্ঠিত হয়৷

সভাপতির বক্তব্যে আইজিপি বলেন, মুসলমান এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুটি প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র ঈদ-উল-আযহা এবং শারদীয় দুর্গাপূজা এ বছর প্রায় একই সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ তিনি উভয় ধর্মাবলম্বীরা যাতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে উত্‍সবমুখর পরিবেশে ও নিরাপদে এ দুটি অনুষ্ঠান উদ্যাপন করতে পারে সে লক্ষ্যে নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন৷ তিনি ঈদ ও দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যাতে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে না পারে সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সর্তক থাকার আহবান জানান৷

তিনি ঈদ এবং পূজায় দায়িত্ব পালনকালে ফোর্সের সার্বিক সুযোগ-সুবিধা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্যও ঊধর্্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন৷ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি মাহ্ফুজুর রহমান পবিত্র ঈদ-উল-আযহা এবং দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে গৃহীত সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সভায় তুলে ধরেন৷

সভায় ঈদ-উল-আযহার আইন-শৃঙ্খলা যেমন- সড়ক, নৌ ও রেলপথের নিরাপত্তা, কোরবানীর পশু পরিবহণ ও হাটের নিরাপত্তা, ঈদ জামাতস্থলের নিরাপত্তা, পশুর চামড়া পাচার রোধ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং দুর্গাপূজার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে বিসত্মারিত আলোচনা করা হয়৷ সভায় নির্ধারিত ঘাট ব্যতীত কোরবানীর পশু উঠানামা রোধ, পশুরহাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, পশুর হাট ইজারাদার কতর্ৃক হাসিল হার প্রদর্শন, জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন এবং যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধানত্ম গৃহীত হয়েছে৷ কোরবানীর পশু পরিবহণে ব্যবহৃত নৌকা ও ট্রাকে চাঁদাবাজি রোধে পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন৷ ঈদের দিন অস্থায়ী চামড়া ক্রয় কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হবে এবং পশুর চামড়া পাচার রোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক দৃষ্টি রাখবে৷

নৌপথে যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং চাঁদাবাজি রোধে নবগঠিত নৌ পুলিশ ইউনিট অন্যান্য পুলিশ ইউনিটের সহায়তায় চেকপোস্ট স্থাপনসহ টহলের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে৷জাতীয় ঈদগাহ ময়দানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ঈদ জামাতস্থলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ সুষ্ঠুভাবে যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মহাসড়কে নসিমন, করিমন, ভটভটি ইত্যাদি যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে৷

শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় পুলিশ প্রাক পূজা, পূজা চলাকালীন এবং পূজা পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে৷

সভায় উপস্থিত পূজা উদ্যাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দ পূজাকে ঘিরে গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে সনত্মোষ প্রকাশ করেন৷ তারা পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সারাদেশে শানত্মিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদ্যাপিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন৷ এ বছর ঢাকা মহানগর এলাকায় দুই শতাধিক মন্ডপসহ সারাদেশে ২৮ হাজারের বেশি মন্ডপে দুর্গাপূজা আয়োজন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

ঈদ-উল-আযহার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমন্বয়ের লক্ষ্যে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ঈদের পর তিন দিন পর্যনত্ম পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এবং প্রতিটি জেলা/ইউনিটে কন্ট্রোলরম্নম চালু থাকবে৷ এছাড়া, আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যনত্ম পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ডিএমপি, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস এবং ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দুর্গাপূজা সংক্রানত্ম মনিটরিং এন্ড কোঅর্ডিনেশন সেল চালু রাখা হবে৷

সভায় অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ আমির উদ্দিন, এসবির অতিরিক্ত আইজিপি ড. মোঃ জাবেদ পাটোয়ারী, র্যাব’র মহাপরিচালক মোঃ মোখলেছুর রহমান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বেনজীর আহমেদ, অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী, সকল পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ, হাইওয়ে, রেলওয়ে, নৌ, টু্যরিস্ট ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশসহ অন্যান্য ইউনিটের ডিআইজিবৃন্দ, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊধর্্বতন কর্মকর্তাগণ এবং সংশিস্নষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি কাজল দেবনাথ এবং ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নারায়ন সাহা মনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷