দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৯ সেপ্টেম্বর: এ কে খন্দকারের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার কে এম সফিউল্লাহকে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ ৭১ এর চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়েছে৷ শুক্রবার সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে ফোরামের নির্বাহী সদস্য তুষার আমিন জানিয়েছেন৷তিনি বলেন, এ কে খন্দকার সাহেবের পদত্যাগপত্রও গ্রহণ করেছে ফোরাম৷
নিজের সদ্য প্রকাশিত বই ১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ নিয়ে তুমুল বিতর্কের মধ্যে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এ কে খন্দকার৷ নিজের লেখা বই ১৯৭১: ভিতরে বাইরে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ফোরামের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ. কে. খন্দকার বীর উত্তম৷
শুক্রবারের বৈঠকে এ. কে. খন্দকারের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে কে এম সফিউল্লাহকে নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়৷ সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের কার্যনির্বাহী পরিষদের বৈঠকে এ. কে. খন্দকারের বইটিকে মুক্তিযুদ্ধের বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাসের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার হিসেবে অভিহিত করা হয়৷
ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন মেজর জেনারেল (অব.) কে এম সফিউল্লাহ বীর উত্তম, কর্নেল (অব.) সামসুল আলম, ডা. সারওয়ার আলী, হারুন হাবীব, ম. হামিদ, মো. নুরুল আলম, মেজর জেনারেল (অব.) শাহজাহান, আনোয়ারুল আলম শহীদ, মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদ, ফারজানা শাহনাজ মজিদ, মোহা. আব্দুল হাই, অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারী, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান শওকত, সৈয়দ দিদারুল আলম, ড. মমতাজউদ্দিন পাটোয়ারী, শাহজাহান মৃধা বেনু, নুরুল আনোয়ার, সদরুজ্জামান হেলাল বীর প্রতীক, সাঈদুজ্জামান তারা, মোশাররফ হোসেন, ডা. এম এস এ মনসুর আহমেদ ও তুষার আমীন৷
সভায় বলা হয়, ১৯৭১: ভিতরে বাইরে’ বইটির মাধ্যমে এ. কে. খন্দকার বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পবিত্র সংবিধান ও স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণাপত্রসহ মুক্তিযুদ্ধের সুপ্রতিষ্ঠিত মৌল ঘটনাবলির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন৷
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি চক্রকে ইন্ধন জুগিয়েছেন৷ ফোরামের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি এ কাজের মাধ্যমে এ. কে খন্দকার সেক্টর কমান্ডার্স েেফারামের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বহিষ্কারযোগ্য অপরাধ করেছেন, সভায় বলেন ফোরাম নেতারা৷
বইটির মাধ্যমে স্ব-বিরোধী ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করে এ. কে খন্দকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনানির্ভর সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের মতো একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দেওয়ার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন বলেও মত দেওয়া হয় সভায়৷
এ. কে খন্দকারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সভায় আরো বলা হয়, বইটিতে এ. কে খন্দকার মুক্তিযুদ্ধের প্রতিষ্ঠিত মৌল বিষয়গুলিকে প্রায় পুরোটাই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে উপস্থাপন করেছেন৷ যা বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাসের বিকৃতি৷ বইটিতে তিনি (এ. কে. খন্দকার) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রেসকোর্সের ঐতিহাসিক ৭ মাচের্র ভাষণ, ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাসহ অন্যান্য সুপ্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক সত্য নিয়েও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন৷ যা চরম দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয়৷
বইটি প্রকাশনা সংস্থা, এর সম্পাদক ও বাজারজাতকরণের সঙ্গে জড়িতরা পরিকল্পিত ইতিহাস বিকৃতির দায়ভার এড়াতে পারবেন না বলেও মন্তব্য করা হয়৷ কার্যনির্বাহী পরিষদের সভার বক্তব্য ফোরামের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হারুন হাবীব স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে জানানো হয়৷