দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৯ সেপ্টেম্বর: বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রী উমা ভারতীর সাথে তিসত্মা পানিবন্টন চুক্তি নিয়ে ফলপ্রসূ ও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে৷ শুক্রবার সকালে ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে উমা ভারতীর সাথে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একথা জানান৷তিনি বলেন, আলোচনা অত্যনত্ম ফলপ্রসূ ও ইতিবাচক হয়েছে৷তিসত্মার পানিবন্টন চুক্তি ছাড়াও বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পানিসম্পদ সম্পর্কিত সকল বিষয়ে তারা আলোচনা করেছেন৷
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে গড়ে উঠা বাংলাদেশ ও ভারতের সুসম্পর্ককে আরো জোরদার করার বিষয়ে তারা উভয়ে একমত হয়েছেন৷
বৈঠকে নয়াদিল্লীতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক এবং পানিসম্পদ সচিব ড. জাফর আহমদ খান উপস্থিত ছিলেন৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখাজর্ী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এবং প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছেন৷এদিকে, ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে৷ বাংলাদেশ ভারতের ভালো বন্ধু বলে মন্তব্য করেছেন েেস দেশের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি৷
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে একটা পর্যন্ত নয়াদিলি্লর রাষ্ট্রপতির ভবনে প্রণব মুখার্জির সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এ সব কথা জানান৷ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকপ্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখাজির্র সঙ্গে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷তিনি জানান, প্রণব মুখার্জি ভারতের রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর প্রথমেই বাংলাদেশে আসেন৷
তিনি বলেন, প্রণব মুখার্জি বলেছেন, বাংলাদেশের সব সময় পাশে থাকবে ভারত৷ বাংলাদেশ ভারতের অকৃত্রিম বন্ধু৷এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশে আসার আবারও আমন্ত্রণ জানান৷
নয়াদিলি্লতে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশন- জেসিসি)বৈঠকে যোগ দিতে চারদিনের সফরে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ভারতে পৌঁছান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী৷
২০ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় নেহেরু ভবনে বাংলাদেশ ভারত যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকে অংশ নেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী৷ বৈঠকে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা নেতৃত্ব দেবেন৷এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজ্যসভার (উচ্চকক্ষ) বিরোধী দলীয় নেতা গোলাম নবী আজাদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করার কথা রয়েছে তার৷
এদিকে, হাইকমিশন সূত্র জানায়, ২০ সেপ্টেম্বর জেসিসি বৈঠক শেষে ওইদিন রাতে দিলি্ল থেকে জাতিসংঘের ৬৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷তার সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবদুস সোবহান সিকদারও সেখানে যাবেন৷
অন্যেিদক, আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে নয়াদিলি্লর কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে৷শুক্রবার এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশন- জেসিসি)বৈঠকে অংশগ্রহণকারী এক কূটনীতিক এ তথ্য জানান৷
তিনি জানান, আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের সম্ভাবনা রয়েছে৷ তবে এখন পর্যন্ত কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি৷ এ নিয়ে বর্তমানে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে কাজ চলছে৷এদিকে, বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দুপুর ১২টায় সে দেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের শ্রম ও জনশক্তি ভবনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে পানিসম্পদমন্ত্রী উমা ভারতীর বৈঠক শুরু হয়৷
জানা গেছে, তিস্তা চুক্তির বিষয়ে জোর দেবে বাংলাদেশ৷ এছাড়া ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অমীমাংসিত যেসব বিষয় রয়েছে সেগুলো নিয়েও আলোচনা হবে৷দিলি্লস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে৷এ ছাড়া বৈঠকে দুই দেশের নিরাপত্তা, বাণিজ্য, যোগাযোগ, জ্বালানি, পানিসম্পদ, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা,অবকাঠামো খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়ন, সংস্কৃতি, পরিবেশ এবং শিক্ষা নিয়ে আলোচনাও হবে৷