31483_IMG_0226

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৯ সেপ্টেম্বর: বিচারপতিদের মারাত্মক মনস্তাত্তি্বক চাপে রাখতে সংবিধানে ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া৷

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী উপেক্ষিত জনমত’ শীর্ষক এক সভায় বিএনপির নেতা রফিকুল এসব কথা বলেন৷ স্বাধীনতা ফোরাম নামের একটি সংগঠন ওই সভার আয়োজন করে৷রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, এ সংশোধনীর পর নিরপেক্ষ বিচার করা বিচারপতিদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে৷ এর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে বা উচ্চ আদালতে ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে৷

বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সংসদে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারসহ ১৫৪ জন সদস্য অনির্বাচিত৷ সংসদে অভিশংসনের ক্ষমতা দেওয়ার ফলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও জবাবদিহি থাকবে কি না, নিরপেক্ষতা বজায় থাকবে কি না, এ প্রশ্ন রয়েছে৷ বিচার বিভাগের যে ক্ষতি হয়েছে, তা এই জাতি আর কখনো পূরণ করতে পারবে না৷

তিনি বলেন, জনসমর্থনহীন সংসদে এই আইন পাশ হওয়ার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট ভবনে মারাত্মক ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে৷অভিশংসন আইনের পর বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রশ্নের মুখে পড়েবে দাবি করে এর মাধ্যমে যেই ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা৷

রফিকুল বলেন, অবৈধ সরকার ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা এবং শেয়ার বাজার থেকে ৯৬ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে দেশকে পঙ্গু করে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা৷

তিনি বলেন, বিএনপি একটি সহিষ্ণু গণতান্ত্রিক দল৷ আমরা সংগঠন গুছাচ্ছি৷ আমাদের সংগঠনগুলোকে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত ও বিন্যস্ত করছি৷ অন্যান্য সমাজ শক্তিগুলোকে সমন্বিত করছি৷ আমরা জনগণের কাছে যাচ্ছি৷ আমাদের বক্তব্য তুলে ধরছি, তাদের মতামত শুনছি৷

সরকারের সমালোচনা করে রফিকুল ইসলাম বলেন, দুর্নীতি, লুন্ঠন, অনিরাপত্তা, অস্থিতিশীলতা, সন্ত্রাস, আইনের শাসন ও ন্যায় বিচারের অনুপস্থিতিতে মানুষ আজ উত্‍কন্ঠিত, অস্থির ও জর্জরিত৷ জনগণের ভোটাধিকার লুন্ঠিত৷ জনপ্রতিনিধিত্বহীন সরকার বল প্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসে আছে৷ ফলে দেশে গণতন্ত্র নেই৷ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং দেশের সম্পদ বাইরে পাঁচারের অভিযোগ করেন তিনি৷

তিনি বলেন, দেশে এক অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে৷ এটা চলতে পারে না৷দেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে৷ সংবিধান, রাষ্ট্র, জাতীয় ইতিহাস, জনগণের জীবন-জীবিকা ও অধিকার আজ তছনছ করা হচ্ছে৷এরকম অবস্থা বেশি দিন চলতে থাকলে শুধু বাংলাদেশ নয়,এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতাই হুমকির মুখে পড়বে৷

তিনি বলেন,যেভাবে স্বেচ্ছাচারী শাসন চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে,যেভাবে গণতান্ত্রিক উদার রাজনৈতিক ধারাকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে, তাতে কেবল উগ্রবাদী ও চরমপন্থী শক্তির উত্থান ও বিস্তারের আশঙ্কাই বাড়তে পারে৷

আজ সেই ক্ষমতা আবার অনির্বাচিত সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হচ্ছে৷ এতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব হবে৷ ন্যায় বিচারের সুযোগ আরো সংকুচিত হয়ে পড়বে৷জাতীয় সমপ্রচার নীতিমালার মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা ৷ রফিকুল বলেন, সমপ্রচার নীতিমালার মাধ্যমে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে সরকার৷ তিনি আরো বলেন, ড. মাহাবুব উল্লার উপর আঘাত মানে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার উপর আঘাত৷যারা এ বর্বরচিত হামলা চালিয়েছে তাদের অচিরেই বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করেন৷

দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের জন্য অবিলম্বে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়ার আহ্বান জানান৷ সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু প্রমুখ৷