দৈনিকবার্তা-গৌরনদী, ১৮ সেপ্টেম্বর: বরিশালের আগৈলঝাড়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপকুলীয় সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন সড়কের পাশে লাগানো গাছ কেটে নেয়ার হরিলুটে ব্যস্ত রয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্রসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা৷ মাঝে মধ্যে থানা পুলিশ এসব সরকারি গাছ জব্দ করলেও সংশ্লিষ্ঠ কতর্ৃপক্ষ অভিযোগ বা মামলা না করায় জব্দকৃত গাছ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পুলিশ৷ এ ঘটনায় স্থানীয় সুফল ভোগিসহ এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট উধর্্বতন কতর্ৃপক্ষকেই দায়ি করছেন৷
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, উপকুলীয় সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্ন সড়কের পাশে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ ও সুফল ভোগিদের সাথে চুক্তি করে ২০০৪ সালে বিভিন্ন জাতের গাছের চারা রোপন করে৷ নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, কারের তিনটি চাম্বল গাঠ কেটে নিয়ে যায়৷ যার আনুমানিক মূল্য লক্ষাধিক টাকা৷ খবর পেয়ে আগৈলঝাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান মড়মগড়া এলাকার রতন অধিকারীর স্ব মিলে গিয়ে ওই কাটা গাছের ১৯ পিচ গাছ জব্দ করেন৷ অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে রফিক সরদার৷ c৷ যা পরবতর্ীতে পুলিশ জব্দ করেন৷ এছাড়া ৬ সেপ্টেম্বর আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আমবৌলা স্লুইজ গেট থেকে বাগধা কলেজ পর্যন্ত বেড়ি বাঁধের দু’পাশের দুই লক্ষাধিক টাকার গাছ একটি মসজিদের নাম করে কেটে নিয়ে গেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র৷ ঘটনার পরপর বন বিভাগ লোকজন ঘটনাস্থলে গেলেও কোন ব্যবস্থাই নেয়নি৷ এর আগে একই সড়কের বড়মগড়া, বাকালহাট সড়কে, রতানপুরের ধরাধর দিঘি এলাকা, ছয়গ্রাম বন্দরের পূর্ব ও পশ্চিম পারের সড়কের গাছসহ সকল ইউনিয়নের অভ্যস্তরীণ সড়কের গাছ কাটার হরিলুটে ব্যস্ত হয়ে পরে ওই চক্রটি৷ ওই চক্রটি প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা৷
স্থানীয় সুফল ভোগি আকরাম হোসেন, কাজী সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘আগৈলঝাড়া উপজেলা বন বিভাগের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী দেলোয়ার হোসেনরে সহায়তায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সংঘবদ্ধ গাছ চোরের দলগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ও বেনামে সরকারি গাছ কেটে নেয়ার মহা উত্সবে মেতে উঠেছে৷’ দেলোয়ারের বাড়ি আগৈলঝাড়া এলাকায় ও একই স্থানে দীর্ঘদিন চাকুরির সুযোগে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সে৷ তারা আরো জানান, সাধারণতঃ সড়কের পাশের গাছগুলো কাটার জন্য সরকারি ছুটির দিন বিশেষ করে জুম্মা নামাজের দিন শুক্রবারকে বেছে নেয়া হয়৷ কারণ ওই দিনে দুপুর বেলায় মুসল্লীদের নামাজে ব্যস্ত থাকা, নামাজ শেষে খাবার সময় ও সরকারি কর্মকর্তারা অফিসে না থাকার দীর্ঘ সময়কে মোক্ষম সুযোগগের সময় হিসেবে বেছে নিয়েছে চক্রটি৷ ফলে আমরা অসহায় লোকজন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি৷’
অভিযোগের ব্যাপারে চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী দেলোয়ার হোসেনের মুঠো ফোনে দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়৷ আগৈলঝাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘বিষয়টি উপজেলা বন বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে৷ বন বিভাগ কোন অভিযোগ না দেয়ায় আইনি ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছেনা৷ ফলে জব্দকৃত গাছ নিয়ে আমরা বিপাকে পরেছি৷’
এ প্রসঙ্গে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমাকে কেউ অবহিত করেননি৷ তিনি অভিযোগ করেন বন বিভাগ থেকে তাকে গাছ কাটার খবর দেয়া হয়না৷ তাদের জনবল কম থাকায় সব সময় সব খবর জানা সম্ভব নয়৷’
আগৈলঝাড় উপজেলা বন বিভাগ কর্মকর্তা প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল বলেন, চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী দেলোয়ার হোসেনরে বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ গাছ কাটার বিষয়টি শুনেছি৷ মামলার ড্রাফট করে জেলা বন বিভাগ কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে৷ তিনি দেখে নির্দেশ দিলেই মামলা করা হবে৷