দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৫ সেপ্টেম্বর: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে ‘ডিগবাজ-দলছুট নেতা’ আখ্যা দিয়ে দলটির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, ক্ষমতাসীনদের সন্তুষ্ট করতেই তিনি সম্প্রতি বিএনপির স্বার্থবিরোধী বই লিখেছেন। নিজের বইতে জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার দুই ছেলেকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য লিখেছেন। নিজেকে বাঁচাতে ও বাড়ি রক্ষা করতেই তার এই ভূমিকা।
সোমবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
মওদুদ আহমদের সম্প্রতি প্রকাশিত বইয়ে জঙ্গিবাদের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক, ছেলেদের প্রতি খালেদার প্রীতি এবং চারদলীয় জোট সরকারের দুর্নীতির প্রসঙ্গ বিষয়ে ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রিজভী বলেন, মওদুদ আহমদ দলের জ্যেষ্ঠ নেতা। তার এই বই সম্পর্কে আমি দলীয় বক্তব্য দিতে পারবো না, তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি তার বক্তব্য সঠিক নয়। চারদলীয় জোট সরকারের সঙ্গে জঙ্গিবাদের সম্পর্ক থাকলে তিনিও তো সে সময় মন্ত্রিসভায় ছিলেন। তাহলে তিনি কেন পদত্যাগ করলেন না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, নিজের ছেলেদের প্রতি যদি খালেদা জিয়ার অনুকম্পা থাকতো তাহলে তিনি আগেই ছেলেদের বিদেশে পাঠিয়ে দিতেন। খালেদা জিয়া ওয়ান ইলেভেন সরকারের কথা না শোনার কারণেই তার ছেলেদের ওপর নির্যাতন হয়েছে, তারা এখনো খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছেন।
রিজভী বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, মওদুদ আহমদের মতো একজন জ্যেষ্ঠ নেতা কাদের খুশি করার জন্য এই বই লিখেছেন তা আমার জানা নেই। তিনি অনেক দিন ধরে রাজনীতি করেন, তবে যখনই নিজের স্বার্থ আসে তখনই এ ধরনের কথা বলেন।
ভারতীয় এক সাংবাদিকের উদ্ধৃতি দিয়ে রিজভী বলেন, যেসব নেতা সব সময় রঙ বদলায় তাদেরকে ফাস্টফুডের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন ওই সাংবাদিক।
মওদুদ সম্পর্কে রিজভী বলেন, কাক সাত সমুদ্র তের নদী পেরিয় গেলেও কাকই থাকে। কোনো ডিগবাজ, আদর্শহীন ও দলছুট নেতার বইয়ে বিএনপির কিছুই আসে যায় না।
রিজভী বলেন, আমি জানি না মওদুদ সাহেব নিজেকে রক্ষা নাকি বাড়ি রক্ষা করতে কাউকে খুশি করার জন্য এই বই লিখেছেন কিনা।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ: ইমারজেন্সি অ্যান্ড দি আফটারম্যাথ: ২০০৭-২০০৮’ বইতে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার কাছে ওই সময় তাঁর দুই সন্তান তারেক ও কোকোর ভাগ্যই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা ছাড়া কোনো আলোচনায় যেতে রাজি ছিলেন না খালেদা জিয়া। নানা রকম চাপেও অনড় ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন। সে সময়ে দেশের মানুষের নেত্রী, বিএনপির চেয়ারপারসন কিংবা একজন রাজনীতিবিদের চেয়েও একজন মা হিসেবে দুই সন্তানের মুক্তির বিষয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন খালেদা জিয়া।’