অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১২সেপ্টেম্বর : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এ এস এইচ কে সাদেক ছিলেন জ্ঞানের আলোয় আলোকিত এবং স্বকীয়তায় উদ্ভাসিত একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ৷ তিনি ছিলেন গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল একজন মানুষ৷

অর্থমন্ত্রী শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এএসএইচকে সাদেকের ৭ম মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে খুলনা বিভাগীয় সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন৷অতীতে শিক্ষাক্ষেত্রে বেতন প্রদানের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ ছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এএসএইচকে সাদেক দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে এটা বন্ধ করেন৷ এখন বিষয়টাকে খুবই সাধারণ ও সহজ মনে হচ্ছে৷ কিন্তু তিনি যখন এটা করেছেন, তখন সেটা সহজ ও সাধারণ বিষয় ছিলো না৷ তিনি উদ্যোাগ নিলেন বেতন নিতে হলে সকল শিক্ষককে একটি করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে৷

ব্যাপক আকারে ব্যাংক হিসাব খুলে দেয়ার সাদেকের চিনত্মাপ্রসূত কাজ আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা গত সরকারের আমলে ১০টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ দিয়েছি৷ দেশে এখন সোয়া এক কোটি মানুষের ব্যাংক হিসাব রয়েছে৷

মুহিতকে তার বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, সভা-সমিতিতে, লৌকিক আলোচনায় সাদেকের কথা শুনতেই হতো৷ তিনি দৃঢ়ভাবে বক্তা বা আলোচকের ফর্দে নিজেকে অনত্মর্ভুক্ত করে নিতেন৷ তবে আমার আনন্দ ছিল তার সঙ্গে বসে আলাপচারিতায়৷ তার রসবোধ ছিল সূক্ষ এবং তাতে প্রায়ই চতুরতাও প্রকাশ পেত৷ সাদেক দম্পত্তি ছিল খুবই সুখী এবং ইসমত সাদেকের খ্যাতি পুষিয়ে নেয়ার সাধ্য কারও নেই৷ সাদেককে আমরা বন্ধু ও সহকর্মীরা খুবই মিস করব৷অর্থমন্ত্রী বন্ধু সাদেকের সঙ্গে পরিচয় পর্বের স্মৃতির কথা উলেস্নখ করে বলেন, ১৯৫৬ সালে চাকরিতে যোগ দিয়ে লাহোরে যাওয়ার পর আমাদের পরিচয় হয়৷ সেবার একত্রে চাকরিতে যোগ দেয়া সবাই পূর্বপরিচিত থাকলেও এমমাত্র ব্যতিক্রম ছিল সে৷ এরপর সে আমার আত্মীয় হয়ে যায়৷

মুহিত বলেন, তিনি আইনের ব্যত্যয় সহ্য করতে পারতেন না৷ জনসেবা করতে গেলে অনেক সময় ত্রম্নটি হয়৷ আর সাদেক সেই ত্রম্নটি পছন্দ করতেন না৷সভাপতির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান সাদেকের স্মৃতিচারণা করে বলেন, সত্য ও স্বল্পভাষী ছিলেন৷ তিনি যা বিশ্বাস করতেন এবং ন্যায়ানুগ বলে মনে করতেন, তা দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করতেন৷ এসময় তিনি সাদেক সাহেবের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন৷

অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, সংসদ সদস্য মনিরম্নল ইসলাম ও আব্দুর রউফ, বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়েল সচিব নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুরিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শেখ মুহম্মদ মারম্নফ হাসান, মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের নেতা আবদুর রহিম খান, জাতীয় গণগ্রন’াগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, খুলনা বিভাগীয় সমিতির সভাপতি এমএ কুদ্দুস ও সাধারণ সম্পাদক বিএম সেলিম রেজা প্রমুখ বক্তৃতা করেন৷সাবেক সিএসপি অফিসার এএসএইচকে সাদেক ১৯৩৪ সালের ৩০ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন৷ দীর্ঘদিন সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ১৯৮৮ সালে অবসরে যান৷ ৯২ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন৷ ১৯৯৬ সালে তিনি যশোরের কেশবপুর থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন৷ পরে তিনি সরকারের শিক্ষামন্ত্রী নিয়ুক্ত হন৷

২০০৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তিনি মৃতু্যবরণ করেন৷ তার স্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন৷