আরব রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন পেল যুক্তরাষ্ট্র

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১২সেপ্টেম্বর : ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নতুন সামরিক অভিযানে সমর্থন দেয়ার জন্য আরব মিত্রদের সঙ্গে সমন্বিত সামরিক অভিযান সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে সই করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷বৃহস্পতিবার সই হওয়া এই চুক্তি সিরিয়া-ইরাক উভয় দেশের নির্দিষ্ট অংশে প্রেসিডেন্ট ওবামা পরিকল্পিত সামরিক অভিযানের ব্যাপারে আঞ্চলিক সমর্থন আদায়ের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ৷

সৌদি আরবের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী জেদ্দায় আলোচনা শেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ১০ আরব রাষ্ট্রের সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হন৷ মিশর, ইরাক, জর্দান, লেবানন এবং সৌদি আরব ও কাতারসহ ছয় উপসাগরীয় রাষ্ট্রের সমর্থন পায় যুক্তরাষ্ট্র৷এই ১০ আরব রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বিত সামরিক অভিযানের মাধ্যমে সুনি্ন বিদ্রোহী জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কাছ থেকে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অঞ্চল পুনরুদ্ধার করার ব্যাপারে সম্মত হয়৷

এক সাংবাদিক সম্মেলনে জন কেরি বলেন, এই জোটে আরব রাষ্ট্রগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে৷ সামরিক সহায়তা, মানবিক মানবিক সহায়তা এবং অবৈধ অর্থায়ন বন্ধ এগুলো এই অভিযানে প্রাধান্য পাবে৷অ-আরব সুনি্ন ক্ষমতাসীন তুরস্কও এই আলোচনায় অংশ নিয়েছে৷ তবে আঞ্চলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শিয়া নেতৃত্বাধীন ইরান ও সিরিয়া এই আলোচনায় অংশ নেয়া থেকে নিজেদের বিরত রাখে৷ ফলে মধ্যপ্রাচ্যের সামপ্রদায়িক যুদ্ধসীমায় সামগ্রিক জোট গঠনে একটা জটিলতা রয়েই গেল৷

ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস’র বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর ব্যাপারে ওবামা পরিকল্পনা ঘোষণার পর সমর্থন আদায়ে কেরি আরব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন৷মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এই অঞ্চলের সামরিক ঘাঁটিগুলো ব্যবহার করে আরো বেশি যুদ্ধবিমান চালনার অনুমতি দেয়ার জন্যও কেরি জোর দাবি জানিয়েছেন৷তবে কেরি জানিয়েছেন, জোটভুক্ত কোন দেশই স্থলসেনা পাঠাবে না৷

সিরিয়ায় অন্যান্য সশস্ত্র সুনি্ন বিদ্রোহী জঙ্গিদের সৌদি আরব সমর্থন জানালেও ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে গণ্য করছে৷যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইরাক এবং সিরিয়ায় হুমকি হয়ে ওঠা আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানকে এ জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক লড়াই হিসাবেই নিয়েছে৷

ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বিশেষ কোনো হুমকি চিহ্নিত করতে না পারলেও মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, যোদ্ধারা দেশে ফিরে যেতে পারে এবং হামলা চালাতে পারে৷ অগাস্টে দুই মার্কিন সাংবাদিকের শিরশ্ছেদের ঘটনা অনেক মার্কিনিকেই ক্ষুব্ধ করেছে৷যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, সৌদি আরব মধপন্থি সিরীয় বিদ্রোহীদের জন্য প্রশিক্ষণ শিবির চালু করতে রাজি হয়েছে৷ তারা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ওবামার বৃহত্তর অভিযান পরিকল্পনার অংশ৷ যে জঙ্গিরা ইরাক এবং সিরিয়ার এক তৃতীয়াংশ এলাকা দখল করে নিয়েছে৷

জেদ্দায় আরব দেশগুলো এবং তুরস্কের সঙ্গে বৈঠকে আঞ্চলিক এ মিত্রদের কাছ থেকে কি চান তা বিস্তারিত জানিয়ে পররাষ্ট্রবিভাগের ঊধর্্বতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, আমাদের অভিযান আরো বাড়ানো প্রয়োজন৷ এ ব্যাপারে বিস্তারিত খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনার জন্য খুব শিগগিরিই প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের একটি বৈঠক হবে৷

আঞ্চলিক দেশগুলো তাদের আকাশপথ ব্যবহারের অনুমতি দিলে ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস এর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা চালানো এবং বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র আরো বেশি করে ব্যবহার করা সম্ভব হবে৷