দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১২সেপ্টেম্বর: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেছেন, যেকোনো সময় আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ বিস্ফোরণ ঘটবে। এটা দিনক্ষণ ঠিক করে আসবে না। তাই আমাদের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। অভিশংসন আইনের মাধ্যমে সরকার বিচারকদের মাথায় জমটুপি পরানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘তারেক রহমানের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ও উন্নয়ন ভাবনা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন। তরিকুল বলেন, ফাঁসির আসামিকে যেভাবে যমটুপি পরানো হয়, ঠিক সেভাবে এই সরকার বিচার বিভাগকে যমটুপি পরাচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা তারেক রহমানকে এতো ভয় পান কেন? তাকে নিয়ে অরুচিকর বক্তব্য দেন কেন?
তিনি বলেন, সরকার সংবাদ মাধ্যমকেও ভয় পায়। তাই জাতীয় সমপ্রচার নীতিমালার নামে সম্পাদকদের আসো আসো বলে ডেকে নিয়ে সোনার খাঁচায় বন্দি করেছে। আন্দোলন দিনক্ষণ ঠিক করে হবে না উল্লেখ করে তরিকুল বলেন, ৫ জানুয়ারির আগে গোটা দেশে যে আন্দোলন হয়েছে- আমার রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাসে এত বড় আন্দোলন কোনো দিন দেখি নাই। আমাদের মনে রাখতে হবে, আন্দোলন দিনক্ষণ ঠিক করে হয় না, যে কোনো সময় যে কোনো জায়গা থেকে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এই মুহূর্তে বিএনপির জন্য আন্দোলন ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, পেছনে যাওয়ার আর রাস্তা নেই। মানুষের কাছে, জনগণের কাছে, বিএনপির কাছে এই মুহূর্তে আন্দোলন ছাড়া আর কোনো বিকল্প পথ খোলা নেই।
ভবিষ্যতে তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার সম্ভাবনা আছে মন্তব্য করে তরিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি বুঝতে পেরেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। ১/১১ ছিল সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। তিনি বলেন, তারেক রহমান লন্ডনে বসে দেশ নিয়ে ভাবছেন, লেখা-পড়া ও গবেষণা করছেন। সেই গবেষণালব্ধ জ্ঞান থেকে তিনি যদি কোনো কথা বলেন আওয়ামী লীগ তখন বাংলাদেশে বসে তারেক রহমানের ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে। জনগণকে আস্থায় আনতে হবে উল্লেখ করে তরিকুল বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি-বাকরি দেয়া হবে। দুর্নীতি শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হবে। আওয়ামী লীগ যে ভুল করছে- সে ভুল বিএনপি করলে জনগণ আর আমাদের চাইবে না। দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নিজেদের মধ্যে বিভেদ ভুলে সংগঠিত হতে হবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাস তৈরি করতে হবে।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একটা সময় বলা হতো আওয়ামী লীগ একশনে যেত বিএনপি তার রি-একশন দিতো। তারেক রহমান সেই ধারা বদলে দিয়েছেন। তিনি এখন লন্ডনে বসে একশনে যান, আওয়ামী লীগ তার রি-একশন দেয়। এমন রি-একশন দেয় যে আওয়ামী লীগের জন্যই তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- অধ্যাপক ড. ফরহাদ হালিম ডোনার সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুস্তাহিদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. পিয়াস করিম, জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি কামাল উদ্দীন সবুজ, বিএফইউজে সভাপতি শওকত মাহমুদ প্রমুখ। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, এডভোকেট আহমেদ আযম খান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, সালাহউদ্দীন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ, অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক হাবীবুর রহমান হাবীব, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মি আক্তার প্রমুখ।
সভা পরিচালনা করেন বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম।