খালেদা জিয়া-Khaleda zia1

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,১১সেপ্টেম্বর : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে ও বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপি চেয়ারপারসনর রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে দায়ের করা লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) আদেশ ১৪ সেপ্টেম্বর৷

বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি মো.মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই দিন ধার্য করেন৷শুনানির শেষ দিন রাষ্ট্রপক্ষে বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম৷ আর খালেদার পক্ষে ছিলেন এজে মোহাম্মদ আলী৷ আইনজীবী জানান, ওই দুই মামলায় গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়া, তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ অভিযোগ গঠন করেন৷ অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে ১৩ এপ্রিল হাইকোর্টে আবেদন (রিভিশন) করেন খালেদা জিয়া৷ আবেদন ২টি ২৩ এপ্রিল হাইকোর্টে খারিজ হয়৷ ওই ২ মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে ও বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে খালেদা জিয়ার করা ২টি রিট ১৯ জুন হাইকোর্টে খারিজ হয়৷ হাইকোর্টের ারিজ আদেশের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া লিভ টু আপিলসহ চারটি আবেদন করেন৷

ঢাকার বিশেষ জজ-৩ বাসুদেব রায় গত ১৯ মার্চ বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপস্থিতিতে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট ও জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠন করেন৷এরপর ওই বিচারকের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে আসেন খালেদা৷ সেখানে তার আবেদন খারিজ হলে এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে দুই মামলার জন্য একই অভিযোগে এ দুটি আবেদন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা৷ সোয়া পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা এ দুই মামলা বাতিলের জন্যও হাই কোর্টে এসেছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন৷ কিন্তু তার ওই আবেদনও খারিজ হয়৷ এ বিষয়ে তার আপিল আবেদন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে৷২০১১ সালের ৮ অগাস্ট জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ৷ এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি৷

তেজগাঁও থানার এ মামলায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে৷অন্যদিকে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অন্য মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন৷ ২০১০ সালের ৫ অগাস্ট এ মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়৷ এতিমদের সহায়তার জন্য একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে এ মামলায়৷

পুরান ঢাকার বকশীবাজার এলাকায় আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আদালতের বিশেষ এজলাস বসিয়ে এই দুই মামলার বিচার চলছে৷জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে৷ আর জিয়া চ্যারিটেবল (দাতব্য) ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে আসামি হিসাবে রয়েছেন আরও তিনজন৷ এতিমখানা ট্রাস্ট মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান৷এদের মধ্যে সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আছেন জামিনে৷ তারেক উচ্চ আদালতের জামিনে দেশ ছাড়ার পর গত ছয় বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন৷ এ মামলায় তাকে পলাতক দেখানো হয়েছে৷

দাতব্য ট্রাস্ট মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডবি্লউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান৷এদের মধ্যে মামলার শুরু থেকেই পলাতক হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে৷ খালেদাসহ বাকি দুই আসামি জামিনে রয়েছেন৷