দৈনিকবার্তা-ঢাকা,১১সেপ্টেম্বর :বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে ইতিমধ্যে সবকিছুর ষোলআনা নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে৷ এখন বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতা সংসদে নিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ সাড়ে ষোলআনা করতে চায়৷
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাব ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী জিয়া সমাজকল্যাণ পরিষদ আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৭ম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন৷ গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বর্তমান বিচারপতিদের মধ্যে ৮০ ভাগ বিচারপতি যারা অতীতে আওয়ামী লীগের সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন, তারাই বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতা আওয়ামী লীগের হাতে তুলে দিচ্ছেন৷ সব কিছু হাতের মুঠোয় নিলেও সব সময় তা রক্ষা করা যায় না৷প্রশ্ন তুলে বিএনপির এই নেতা বলেন, কোনো ক্ষমতা চিরস্থায়ী হয় না, সরকার পরিবর্তন হবেই৷ আমরাও আসতে পারি, হয়তবা অন্য কেউ আসতে পারে৷ তখন যদি বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতা সংসদে নেয়ার সুযোগটা তারা নেয় তখন আপনাদের কি হবে?:
রাজপথে সরকার বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যর্থ হয়ে এবার সাংবাদিকদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটি’র সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়৷তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সরকার বিরোধী আন্দোলনে আমরা ব্যর্থ, আমরা অচল, আমরা পঁচে গেছি, এ নিয়ে আপনারা (সাংবাদিকরা) যা ইচ্ছে তাই লিখছেন৷
সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি আরো বলেন, আপনারা পারেন না কেন? আপনারা বিভক্ত কেন? আপনারা ব্যর্থ কেন? আমরা অধম তাই বলে কি আপনারা উত্তম হবেন না?গয়েশ্বর আইনজীবীদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যাদের জন্য এত কিছু করি তারাই আমার মামলার শুনানির জন্য আদালতে যায়নি৷ তাদের পেশাগত কারণে নাকি এমনটা করেছেন তারা৷ আমরা কার জন্য কি করছি সবাই তা জানে? অথচ তারা কয়েক বছর ধরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নেতৃত্ব দিয়ে আসছে৷ আমার মামলায় তারা কোর্টে যায় না৷ তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে সরকারের ষোলআনা নিয়ন্ত্রণে আনতেই বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে নিতে চাচ্ছে৷ আর বিচারপতিরাও সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়৷
তিনি বলেন, কোর্টে মামলার শুনানির মাঝখানে বিজ্ঞাপন বিরতি দেওয়া হয়৷ এই বিরতির মর্ম আমরা বুঝি৷ মামলার মেরিটের উপর এখন রায় হয় না, রায় হয় নির্দেশের উপর৷বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহামেদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বিএনপির গয়েশ্বর বলেন, ৭ মার্চের ভাষণের মঞ্চে আপনি ছিলেন আমি ৫০ গজ দূর থেকে ওেদখেছি৷ সেদিন শেখ মুজিবুর রহমান জয় পাকিস্তান বলেছেন৷ আপনি শুনেননি তা নয়, আপনিও শুনেছেন৷ এতোদিন পরে প্রধানমন্ত্রী আপনাকে মন্ত্রীত্ব দিয়েছেন আর সেটাকে রক্ষা করতেই ইতিহাস বিকৃত করছেন৷
সভায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম গিয়াস উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার হায়দার আলী, ঢাবির প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান সুকুমার রায় প্রমুখ৷