দৈনিকবার্তা-ঢাকা,১১সেপ্টেম্বর : সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর জন্য উত্থাপিত বিলটি পরিমার্জন করে সম্পূর্ণ নতুন অবয়বে তা সংসদে উপস্থাপন করা হবে জানিয়েছেন আইন মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত৷বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে এক আলোচনায় তিনি এ দাবি করেন৷চলমান রাজনীতি নিয়ে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘বঙ্গবন্ধু একাডেমী’৷
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, এতে অভিশংসনের বদলে অপসারণ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে৷ যার পুরোপুরি এখতিয়ার আগের মতো রাষ্ট্রপতির হাতেই থাকবে৷ বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে দেওয়া দুরভিসন্ধিমূলক বিএনপির এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলন, এটি একটি নিরীহ-নির্মোহ বিল৷
তিনি বলেন, এখানে কোনো দুরভিসন্ধি নেই৷ বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা আগের মতো রাষ্ট্রপতির হাতেই রয়েছে৷ সংসদের হাতে শুধু অনুমোদনের ক্ষমতা থাকবে৷বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের সমালোচনা করে সুরঞ্জিত বলেন, দুরভিসন্ধির যোগ্যতা সবার থাকে না৷ এটা আপনারই আছে৷ আপনি মন্ত্রী থাকাকালীন আপনার কর্মের মাধ্যমে একজন বিচারপতির বয়স বাড়িয়ে তাকে তত্ত্বাবধায়কের প্রধান করতে চেয়েছিলেন৷
দুরভিসন্ধি সব সময় আপনার মধ্যেই লুকায়িত থাকে৷এটা আওয়ামী লীগের দ্বারা সম্ভব নয়৷ তিনি বলেন, এটি একটি নিরীহ ও নির্মোহ বিল৷ এখানে কোনো দুরভিসন্ধি নেই৷ ৭২ -এর সংবিধানে যা ছিল, তাই-ই আছে৷ শুধু সামরিক আইনে যা ছিল, সেটা বাদ দেওয়া হয়েছে৷ সুরঞ্জিত বলেন, বিচারপতিদের কেউ অসুস্থ বা কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার অভিশংসন কোন প্রক্রিয়ায় করা হবে, তার জন্য এই বিল৷ বিচারপতিদের নিয়োগ এবং সরানোর ক্ষমতা আগে যেমন রাষ্ট্রপতির হাতে ছিল, এখনও সেভাবেই আছে৷ এখন তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন সংসদে পাঠাবে৷ আর সংসদ শুধু তার অনুমোদন দিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেবে৷ অপসারণের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতেই রয়েছে৷
বিচারপতিদের ওপর যেন অবিচার না হয়, সেই জন্য সংসদ সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশের ভোটে অভিযুক্তদের আনীত অভিযোগ পাস হবে৷ পরে সেটা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে৷ সংসদ কোনো ব্যবস্থা নেবে না৷ প্রমাণিত হলে শুধু অনুমতি দেবে৷সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এক গ্রুপ বলে, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা করলে কী হতো!তিনি আরো বলেন, সংসদের কাছে সকলের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই এমনটি করা হচ্ছে৷ তিনি বলেন, এই সময়ে এক একটা প্রু্য বানাই তারপর হইচই করি এটা যায় তারপর আরেকটি আসে৷ আমি বিলটি ঠিক করে দিয়েছি, এটা দেখবেন সম্পূর্ণ নতুন বিল৷ এটার ভেতরে বদলে দেয়া হয়েছে৷ সব বদলে আরেকটি নতুন বিল আসবে মাত্র চারটি লাইন থাকবে৷ আমার বন্ধু মওদুদ আহমদ সাহেব অনেক দিন চুপ করেছিলেন, এখন আবার আওয়াজ তুলে বলছে যে, বিলটি দুরভিসন্ধিমূলক৷
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধন একটি নতুন আইনের জন্ম দেবে যার মাধ্যমে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হবে, যারা বিচারপতিদের যোগ্যতার বিষয়টি দেখবেন এ কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, যদি এ তদন্ত কমিটির আইনটি না করা যায় তাহলে এ সংশোধনের কোনো মানে থাকবে না৷ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক ব্যারিস্টার জাকির আহমদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফয়েজ উদ্দিন মিয়া, আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, সাম্যবাদী দলের নেতা হারুণ চৌধুরী প্রমুখ৷