দৈনিকবার্তা-নীলফামারী, ১সেপ্টেম্বর : শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল৷ বর্ষা মৌসুমে দেশের আনাচে-কানাচে পড়ে থাকা জলাশয়, পুকুর-ডোবা, নদী-নালা ও খালবিল একসময় শাপলায় ভরে যেতো৷ গ্রামের চারদিকে তাকালে দেখা যেত শাপলা আর শাপলা৷ কিন্ত এই ফুল এখন বিলুপ্তির পথে৷
নীলফামারী জেলার বিভিন্ন পুরানো বিল ও পুকুর-জলাশয়ে সামান্য কিছু শাপলা ফুল দেখা মেলে৷ ‘মালবিসি’ গোত্রের এই উদ্ভিদ কোনপ্রকার পরিচর্যা ছাড়াই পুকুর, ডোবা, জলাশয়ে জন্মে থাকে৷ দেশে একসময় বর্ষার শুরম্ন থেকে শরত্ ঋতু পর্যন্ত সাদা আর লাল শাপলা এলাকাকে অপরুপ সৌন্দর্যে ভরে রাখতো৷ ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা সেই ফুল তুলে মালা গেঁথে মেতে থাকত নানা খেলায়৷ শাপলার ডাটা একদিকে যেমন সবজি অন্যদিকে শাপলার মূল ওষুধ এবং ফুল ফোটার পর কিছুদিনের মধ্যে ফল জন্ম নেয়৷
আর ওই ফলের ভেতরে থাকে অসংখ্য কালো কালো দানা৷ যে কারণে গ্রামের লোকজন এ ফলকে বলে ‘চাউলিয়া বা ঢ্যাপ’৷ শাপলার চাল রোদে শুকিয়ে গ্রামের মহিলারা ভাজতো ঢ্যাপের খৈ৷ এরপর বর্ষা চলে গেলে শুকনো মৌসুমে ছেলেমেয়েরা ওইসব ডোবা নালা থেকে কুড়িয়ে আনতো শালুক৷ আগুনে পুড়ে শালুক কেতে দারুণ স্বাদ৷ কিন্ত বিলুপ্ত প্রায় এই শাপলা এখন স্মৃতির আসনে জায়গা নিতে যাচ্ছে৷ পুকুর, নদী, খাল ভরাট করে মানুষের আবাস তৈরি ও কৃষিতে অতিমাত্রায় আগাছা নাশক ওষুধ প্রয়োগের কারণে শাপলার জন্মস্থানগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে৷ ফলে দেশ থেকে আমাদের জাতীয় ফুল শাপলা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে৷ বয়োবৃদ্ধরা জানান, আমরা তো শাপলা ফুল দেখেছি, শাপলা নিয়ে খেলেছি৷ শাপলা মুলত: বর্ষার শেষ থেকে শরত্কাল পর্যন্ত জন্মে থাকে৷ বর্তমানে জলাশয়, পুকুর-ডোবা পরিস্কার করে মাছ চাষ করায় শাপলা আর আগের মত দেখা যায় না৷