দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২৬আগষ্ট: জিয়াউর রহমানের দুষ্কর্ম ঢাকতে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আবোল-তাবোল বকছেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল ইনু৷ মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন৷বঙ্গবন্ধু হত্যায় জাসদের জড়িত থাকার বিষয়ে সমপ্রতি তারেক রহমানের দেয়া বক্তব্যে জোটে প্রভাব পড়বে কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন,এতে সাময়িক বিভ্রান্তি তৈরি হলেও কোনো প্রভাব পড়বে না৷বঙ্গবন্ধুকে শেখ সাহেব বলে সম্বোধন করে খালেদা জিয়া বালখিল্যতার পরিচয় দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন হাসানুল ইনু৷তিনি বলেন,নতুন প্রজন্মের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছেন তারেক রহমান৷বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততা ধামাচাপা দিতেই খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আবোল-তাবোল বকছেন বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু৷১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকণ্ডে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও এর প্রধান ইনুকে জড়িয়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্যের জবাবে মন্ত্রীর এই প্রতিক্রিয়া৷সম্মেলনে ইনু বলেন, হঠাত্ করে মা-ছেলে কেন জাসদ ও আমাকে নিয়ে আবোল-তাবোল বলছেন?কেন অস্থিরতা প্রকাশ করছেন? বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমান যে জড়িত ছিলেন সে বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে না পেরে এবং ওই ঘটনা ধাপাচাপা দিতেই তারা আবোল-তাবোল বলছেন৷বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়ার জড়িত থাকা এবং তার দুষ্কর্ম আড়াল করতেই বিএনপি জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী৷বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সোমবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, ইনুরা বলেছিল- শেখ মুজিবের লাশ কবর না দিয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে৷ আজ এই মতিয়া-ইনু আওয়ামী লীগের দোস্ত হয়েছে৷ কাফফারা দিয়ে মন্ত্রী হয়েছেন, নিজেদের মন্ত্রিত্ব ঠিক রাখতে আওয়ামী লীগের জন্য দরদে ফেটে পড়ছেন৷এর জবাবে ইনু বলেন,আমরা হালুয়া-রুটির ভাগবাটোয়ার জন্য মহাজোটে অংশগ্রহণ করিনি৷ রাজনৈতিক কারণেই আমরা বিরোধিতা করি, রাজনৈতিক কারণেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করি৷খালেদাকে ইতিহাস মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে জাসদ সভাপতি বলেন, আপনার স্বামী খুনী ছিলেন,তিনি খুনীদের সমর্থনও করেন৷বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় জাসদের অবস্থান কী ছিল- তা সবাই জানেন মন্তব্য করে ইনু বলেন, আমরা কখনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্তে লিপ্ত ছিলাম না৷বঙ্গবন্ধুকে খালেদা জিয়ার শেখ সাহেব সম্বোধনেরও সমালোচনা করেন তথ্যমন্ত্রী৷তাকে জাতির জনক সম্বোধন করবেন৷ তা না করলে শেখ মুজিবুর রহমান বলবেন৷ তিনি আপনার পিতার বয়সী, তাকে নিয়ে বালখিল্যতা করবেন না৷এর আগে গত রোববার লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে তারেক দাবি করেন,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর বঙ্গভবনে খন্দকার মোশতাক আহমেদের শপথ অনুষ্ঠানে কর্নেল তাহের, জাসদের এখনকার সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননও উপস্থিত ছিলেন৷
এর জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ওই সময় ইনু আত্মগোপনে ছিল৷ মোশতাকের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল না, সেখানে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না৷ইনু বলেন,বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সময় জাসদ, কর্নেল তাহের এবং আমার অবস্থা আপনারা জানেন৷ জাসদই একমাত্র দল হত্যাকাণ্ডের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে খুনিদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল৷তথ্যমন্ত্রী তার নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন,আমি খুনিদের ভয়ে জীবন বাঁচাতে আত্মগোপনে ছিলাম৷মা-ছেলে ও তাদের দল জাসদ,বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভা সম্পর্কে হঠাত্ বলতে শুরু করেছেন৷কোনো তাদের অস্থিরতা, প্রশ্ন করেন ইনু৷তিনি বলেন, ইতিহাস এখন স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ আর তাই জিয়াউর রহমানের দুষ্কর্ম আড়াল করতেই আবোল-তাবোল বলছেন মা-ছেলে৷
জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন,বঙ্গবন্ধু খুনের সুবিধাভোগী ছিলেন জিয়া৷সশস্ত্র বাহিনীর উপপ্রধান হয়েও জিয়াউর রহমান নীরব ছিলেন৷ খুনি মোস্তাক তাকে সেনা প্রধান করেছেন৷ জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে শুধু জড়িতই ছিলেন না, কর্নেল তাহেরসহ ৫ হাজার সৈনিককে হত্যা করেছেন৷ রাজকার আমদানি করেছেন, সামপ্রদায়িক রাজনীতি শুরু করেছেন৷জাসদের অবস্থান তুলে ধরে ইনু বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিরা জাসদের শতাধিক কর্মীকে হত্যা করেছে৷ খন্দকার মোস্তাকের ৮৩ দিনের শাসনকালে জাসদের একজনকেও ছাড় দেয়নি৷ রাস্তার লোকের কথায় রাস্তার পত্রিকায় ছাপা খবরের উপর খালেদা জিয়াকে গুরুত্ব না দেওয়ার আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী৷
কর্নেল তাহের ও তথ্যমন্ত্রী তার নিজের অবস্থান তুলে ধরে আরও বলেন, কর্নেল তাহের বঙ্গবন্ধুকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, সেনা বাহিনীর অভ্যান্তরে চক্রান্ত হচ্ছে, আপনি সাবধান থাকুন৷