দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২৬আগষ্ট: বিনিয়োগ সুবিধা সচল রাখতে ব্যাংকের উপর আক্রমণ, হামলা ও লোপাট বন্ধ করতে হবে বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী৷ মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ড আয়োজিত ব্লু ইকোনমি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন৷
বিনিয়োগ বোর্ডের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. এস এ সামাদ৷ এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানী উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী৷
সভায় বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিআই) সভাপতি এ কে আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মূখ্যসচিব শেখ ওয়াহিদুজ্জামান, সচিব মোশারফ হোসেন, অর্থনৈতিক সম্পক বিভাগের অতিরক্তি সচিব কাজী শফিকুল আলম, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সহসভাপতি মো. জামালউদ্দিন, ব্যবসায়ী নেতা ফেরদৌস আরা বেগম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন৷সভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম বিষয়াবলী ইউনিটির সচিব রিয়ার এডমিরাল মো. খুরশিদ আলম সমুদ্রসীমা, সমুদ্র সম্পদ আহরণে ভবিষ্যত্ কর্মপন্থা এবং ব্লু ইকনোমির অবদান বিষয়ে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন৷
আবুল হোসেন আরো বলেন, সাগরতলের সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রে সহজ শর্তে ঋণ পেতে সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে৷সমুদ্র সম্পদ ব্যবহার খাতে বিনিয়োগের জন্য ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের এগিয়ে আসার আহবান জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী৷
তিনি বলেন,সমুদ্রসীমা জয়ের মাধ্যমে আমাদের সামনে এক অবারিত সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে৷ এখন আমরা সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগিয়ে এর অর্থনৈতিক সুফল পেতে পারি৷ এর জন্য এৰেত্রে বিপুল বিনিয়োগ হওয়া দরকার৷ সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা মূল ভুমিকা রাখতে পারেন৷
মন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীরা অনেক খাতে সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করার সুযোগ পাচ্ছেন৷ এখাতেও যদি তারা এমন সুযোগ চান, তাহলে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে আবেদন করলে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে তা বিবেচনা করার আশ্বাস দেন তিনি৷পররাষ্ট্রমন্ত্রী সমুদ্র সম্পদ বা সমুদ্র অর্থনীতির বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, জনগনের কাছে এ বিষয়টি তুলে ধরতে সংবাদ মাধ্যমের সহযোগিতা এবং সমর্থন খুব জরুরি৷
মন্ত্রী বলেন, দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে হলে ব্যাংকিং খাতে আরো সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে৷ না হলে নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের জন্য ব্যবসায়ীরা ঋণ পাবেন না৷
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানী উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেন, ‘সমুদ্র সম্পদ আহরণের কাজ এবং সমুদ্রে সমীক্ষা পরিচালনা দুটোই সমানত্মরালভাবে করতে হচ্ছে৷ তবে সমীক্ষা পরিচালনার ৰেত্রে আমরা কোন পদ্ধতিতে যাবো এ নিয়ে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে৷ এঙ্ক্লুসিভ বা নন-এঙ্ক্লুসিভ পদ্ধতিতে হবে তা নিয়ে ভাবছি৷তিনি বলেন, সমীৰার মাধ্যমে যদি কিছু পাওয়া যায়, সেটি পাইপলাইনে না অন্য কোনভাবে আনা যাবে, এ নিয়ে মূলত অস্পষ্টতা রয়েছে৷তিনি সমুদ্র বিষয়ে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আদান-প্রদানের জন্য ভারত-মায়ানামারসহ আরো কয়েকটি দেশের সমন্বয়ে একটি পস্নাট ফরম গঠনের পরামর্শ দেন৷
জ্বালানী উপদেষ্টা তৌফিক ইলাহী বলেন, সমুদ্র বিজয় বর্তমান সরকারের অন্যতম বড় সাফল্য৷ এখন সমুদ্রে রিচার্জ সম্পর্কে আমাদের আরো বেশি জ্ঞান অর্জন করতে হবে৷ এর মাধ্যমে সামুদ্রিক সম্পদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে৷
সভায় যোগ দেওয়া অন্যান্য বক্তারা এই সেক্টরে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার জন্য সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান৷এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি একে আজাদ বলেন, পানির নীচের সম্পদ আহরণ করতে সরকারের পাশা-পাশি বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে৷বিনিয়োগ বোর্ডে নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. এস এ সামাদের সভাপতিত্বে বোর্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন৷