দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২১আগষ্ট: নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও পরিবেশবান্ধব অর্থায়নযোগ্য খাতের আওতা বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনর্অর্থায়ন তহবিলে নতুন করে তিনটি পণ্য অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় ৪৭টিতে দাঁড়িয়েছে। এতে সবুজ শিল্প (গ্রীন ইন্ডাস্ট্রি) স্থাপনে নয় শতাংশ সুদহারে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাবে। এ শিল্পে প্রাকৃতিক আলো, বাতাস, পানি ও জ্বালানি সাশ্রয়ী বা দক্ষ প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হয়। নয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডে ছয় বছরের মধ্যে ঋণের সুদাসল পরিশোধ করতে হয়। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রীন ব্যাংকিং এ্যান্ড সিএসআর ডিপার্টমেন্ট এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
নতুন অন্তর্ভুক্ত হওয়া অন্য দুটি পণ্য হলো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ‘সোলার পাম্পের মাধ্যমে ভূ-উপরিস্থ পানি উত্তোলন করত পরিশোধনপূর্বক সরবরাহ প্রকল্প’ এবং কারখানার কর্মপরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ খাতে ‘বস্ত্র ও পোশাক শিল্প কারখানায় কর্মরতদের কর্মপরিবেশ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। প্রথমটিতে ঋণসীমা তিন কোটি টাকা এবং দ্বিতীয়টিতে এক কোটি টাকা। নতুন এ ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলো গ্রাহকপর্যায়ে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদ আদায় করতে পারবে। যদিও ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুনর্অর্থায়ন তহবিল থেকে অর্থ প্রাপ্তিতে ৫ শতাংশ সুদ পরিশোধ করতে হয়। পরিবেশবান্ধব খাতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক দুই শ’ কোটি টাকার পুনর্অর্থায়ন তহবিল গঠন করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ব্যাংক রেটে (৫ শতাংশ সুদে) পুনর্অর্থায়ন নিয়ে ব্যাংকগুলো প্রকল্প ভেদে গ্রাহকপর্যায়ে সর্বোচ্চ ৯ থেকে ১১ শতাংশে ঋণ বিতরণ করতে পারবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নবায়ণযোগ্য জ্বালানি ও পরিবেশবান্ধব অর্থায়নযোগ্য খাতে পুনর্অর্থায়ন তহবিলের নীতিমালায় ৯টি খাতে ৪৪টি পণ্যে পুনরায় অর্থায়ন সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। এই তহবিলের আওতা বাড়িয়ে ৪৪টি পণ্যের পাশাপাশি নবায়ণযোগ্য জ্বালানি, গ্রীন ইন্ডাস্ট্রি এবং কারখানার পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ খাতে যথাক্রমে ৩ কোটি, ২০ কোটি ও ১ কোটি টাকার পুনর্অর্থায়ন তহবিলে অন্তর্ভুক্ত করা হলো। উপকারভোগীদের সমন্বয়ে গঠিত সমবায় সমিতি, যৌথ বা একক ভিত্তিতে ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ এ্যান্ড ফার্মস (আরজেএসসি) ও এমআরএ থেকে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান সৌর প্যানেলের ক্ষমতা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত নবায়ণযোগ্য জ্বালানি খাতে ঋণগ্রহণ করতে পারবে। এ খাতে পণ্য হলো সোলারের মাধ্যমে ভূ-উপরিস্থ পানি উত্তোলন ও পরিশোধনপূর্বক সরবরাহ প্রকল্প।
গ্রীন ইন্ডাস্ট্রি স্থাপনের ক্ষেত্রে আরজেএসসি থেকে নিবন্ধিত একক বা যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারবে। কারখানার পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ খাতে বিজেএমইএ, বিকেএমএইএ ও বিটিএমএ সদস্যভুক্ত তৈরি পোশাক শিল্প, নিটওয়্যার ও টেক্সটাইল শিল্প প্রতিষ্ঠান যাদের নিজস্ব কারখানা রয়েছে তাদের কারখানা নিরাপদ কর্মপরিবেশ তথা অগ্নিনির্বাপক সামগ্রী, অগ্নিপ্রতিরক্ষামূলক সামগ্রী, ছাদ ও ভূগর্তে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পাম্পসহ পানি সংরক্ষণাগার নির্মাণসহ সংস্কার কাজের জন্য পুনর্অর্থায়ন সুবিধা প্রদান করা হবে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোকে ব্যাংক রেটে (৫ শতাংশ সুদে) পুনর্অর্থায়ন দেবে, তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য খাতভিত্তিক সর্বোচ্চ সুদ হার নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ঋণ আদায়ের সকল দায়দায়িত্ব ঋণ বিতরণকারী ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে নিতে হবে। প্রকল্প ঋণের ক্ষেত্রে প্রকল্প চালু হওয়ার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে পুনর্অর্থায়নের জন্য আবেদন করতে হবে। অন্য সকল ঋণের ক্ষেত্রে ত্রৈমাসিক শেষে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। ব্যাংকের বিনিয়োগের ১০০ শতাংশ পুনর্অর্থায়ন দেয়া হবে আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে।